কুয়োতে পড়ে আছে ৬ বছরের মেয়ের দেহ! পাণ্ডবেশ্বরের রাস্তায় মিলল বিপুল টাকা, ঘটনা কী?‌

একদিকে রাস্তায় পড়ে আছে বেশ কিছু নগদ টাকা। অপরদিকে তার ঠিক গায়ের বাড়ি থেকে আসছে কান্নার রোল। আর বাড়ির সংলগ্ন কুয়োতে পড়ে আছে ৬ বছরের শিশু কন্যার দেহ। এই পরিস্থিতিতে এলাকায় তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। প্রথমে এই ঘটনাকে অনেকে পারিবারিক খুন মনে করলেও পরে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোটা পাড়া–প্রতিবেশীরা যেন উপচে পড়েছে এই বাড়িতে এমন ভিড় সেখানে। ৬ বছরের ছোট্ট শিশুকন্যাকে এভাবে খুন করা যায় তা কেউ ভাবতেও পারছেন না।। তবে এই খুন তার বাবা–মা করেননি। তাই গোটা বাড়িতে এখন সবাই কেঁদেই চলেছেন সন্তান হারানোর শোকে।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ সোমবার বেশি রাতে বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের কোন্দা গ্রামের বাসিন্দা বাপি গোস্বামীর বাড়ির কুয়ো থেকে ৬ বছরের শিশুকন্যার দেহ উদ্ধার হয়েছে। ওই শিশুকন্যার নাম মিষ্টি গোস্বামী। তাকে কুয়োতে ফেলে দিয়ে পালিয়েছে চোরেরা। ওই বাড়িতে চুরি করতে এসেছিল চোরের দল। বাড়ি থেকে চুরি করে চোরেরা নিয়ে গিয়েছে একগাদা নগদ টাকা। তই বাড়ির পাশের রাস্তাতে ছড়িয়ে পড়ে রয়েছে বেশ কয়েক হাজার টাকা। বাপি গোস্বামী পেশায় পোস্ট অফিসের এজেন্ট। গ্রাহকদের টাকা জমা দেওয়ার জন্য তা বাড়িতে রাখা ছিল। রাখা ছিল পাশ বইও। এখন সেসব রাস্তায় পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। চুরি করতে দেখে ফেলে শিশুটি। তাই ওই শিশুকন্যাকে কুয়োতে ফেলে দিয়ে চোরেরা চম্পট দেয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

ঠিক কী তথ্য পেয়েছে পুলিশ?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে দেখে মনে হচ্ছে এটি চুরির ঘটনা। বাড়িতে চুরি করার পর যখন চোরের দল পালাতে যাবে তখন শিশুকন্যা সামনে এসে পড়ে। চুরির কাণ্ড ধরা পড়ার ভয়ে তখন চোরেরা মেয়েটিকে কুয়োর মধ্যে ফেলে দেয়। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এখনই কোনও বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। বাপিবাবু পুলিশকে জানান, কালীপ্রতিমার বিসর্জন দেখতে বালিজুরি গ্রামে গিয়েছিলেন তিনি। বাড়িতে স্ত্রী, ৬ বছরের মেয়ে মিষ্টি এবং তাঁর বৃদ্ধ বাবা–মা ছিলেন। বিসর্জন দেখে বাড়ি ফেরার পথে খবর আসে তাঁর বাড়িতে চুরি হয়েছে। এমনকী মেয়েকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে কুয়োয় মেয়েকে খুঁজে পায়।

আরও পড়ুন:‌ সুপারি কিলার দিয়েই সইফুদ্দিনকে খুন!‌ রেইকি করত এক দর্জি, জয়নগর কাণ্ডে নয়া মোড়

তারপর ঠিক কী ঘটল?‌ মোবাইলে সমস্ত খবর পেয়ে বাপি গোস্বামী বাড়ি ফিরে দেখেন, আলমারি খোলা, বাড়ির জিনিসপত্র সব ছড়ানো, আলমারিতে রাখা গ্রাহকদের পোস্ট অফিসের পাশ বই, টাকা পয়সা গায়েব। বাড়িতে জড়ো হন পাড়া প্রতিবেশীরা। আসেন এলাকার বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। নিখোঁজ মেয়ের খোঁজ করতে পুলিশে খবর দেন পড়শিরা। তারপর পুলিশ এসে বাড়ির উঠোনে থাকা কুয়োর মধ্যে থেকে নিখোঁজ মেয়ের দেহ উদ্ধার করে। পাণ্ডবেশ্বর থানার পুলিশ কুয়ো থেকে শিশুকন্যার মৃতদেহ উদ্ধার করে। তদন্ত শুরু হয়েছে।