নবম–দশমের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার নিয়ে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলায় নিজেদের অবস্থান জানাল। স্কুল সার্ভিস কমিশন কমিশনের তরফে এ নিয়ে তিন বার হাইকোর্টে রিপোর্ট দেওয়া হল। কিন্তু, তৃতীয় রিপোর্টেও সন্তুষ্ট হতে পারল না কলকাতা হাইকোর্ট। এই সংক্রান্ত মামলায় সোমবার কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা করল ডিভিশন বেঞ্চ। সেক্ষেত্রে কমিশন কিছু লুকানোর চেষ্টা করছে বলেই মন্তব্য করেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: সুপারিশপত্র বাতিল কেন? হলফনামা দিলেও ধোঁয়াশা জিইয়ে রাখার অভিযোগে ভর্ৎসিত SSC
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রসিদির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। শুনানিতে বিচারপতি মন্তব্য করেন, সুপারিশপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভুল ছিল কিনা? সেটা কমিশন খুঁজে পেয়েছে কিনা? খুঁজে পাওয়া গেলে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা? তা বারবার জানতে চাওয়া হয়েছে।কিন্তু, কমিশন তা নিয়ে সহযোগিতা করেনি। যদিও কমিশনের তরফে জানানো হয, তারা আদালতের সামনে বেশকিছু তথ্য ইতিমধ্যেই পেশ করেছে এবং আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ হয়েছে। এসএসসির দাবি, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পদের ক্ষেত্রে কমিশন নিয়ম অনুযায়ী সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করতে পারে না। বিচারপতির মন্তব্য, কমিশন যাদের সুপারিশপত্র দিয়েছে তাদের বাইরে কেউ চাকরি পেয়েছে কিনা তা জানার জন্য সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই। সেটা কমিশন নিজেই খতিয়ে দেখে জানতে পারবে।বিচারপতি বসাকের মতে, কমিশন কিছু লুকোনোর চেষ্টা করছে। সেই কারণে তারা তথ্য সামনে নিয়ে আসতে লজ্জা পাচ্ছে।
অন্যদিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এদিন জানিয়ে দিয়েছে, শুধুমাত্র যারা সুপারিশ পত্র পেয়েছিল তাদেরকে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছিল। তার বাইরে নিয়োগ করা হয়নি। যদিও কমিশন দাবি করেছে, নবম দশমের নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৮৩ জনের সুপারিশ পত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে বেনিয়ম হয়েছে। এরমধ্যে ১২২ জনের সুপারিশপত্র বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন। তাহলে বাকি বাকি ৬১ জনের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করা হয়নি কেন? সেক্ষেত্রে কি আদালতের নির্দেশ রয়েছে? তা জানতে চান বিচারপতি। কমিশন উত্তরে না জানালে বিচারপতি মন্তব্য করেন, এভাবে ৬১ জনের বেতন ভাগ করার অধিকার রাজ্যের নেই। এই অবস্থায় কমিশনকে আরও একবার অবস্থান জানার সুযোগ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। আগামী বুধবারের মধ্যে এক সংক্রান্ত রিপোর্ট কমিশনকে জমা দিতে বলেছে হাইকোর্ট।
উল্লেখ্য, হাইকোর্টের নির্দেশে গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি এবং নবম-দশমের অনেকের চাকরি বাতিল হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন চাকরিহারাদের একাংশ। সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি হাইকোর্টের বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চে পাঠায়। এদিন এসএসসি ৯৫২ জনের উত্তরপত্র বা ওএমআর শিটে অনিয়ম হয়েছে বলেও স্বীকার করে।