এলাকায় ফ্ল্যাট কেনাবেচার ক্ষেত্রে প্রোমোটারের দায়িত্ব বাড়াতে উদ্যোগী হল কলাকাতা পুরসভা। এবার থেকে ফ্ল্যাটের কমপ্লিশন সার্টিফিকেট (সিসি) দেওয়ার সময়েই সেই নির্মাণের সম্পত্তি কর মূল্যায়ন করে দেবে পুরসভা। এর ফলে ফ্ল্যাট বিক্রি হোক না হোক প্রতিটি ফ্ল্যাটে সম্পতিকর গুণতে হবে প্রোমোটারকে।
শুক্রবার এ খবর জানিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলন, সিসি দেওয়ার সময়ই প্রতিটি ফ্ল্যাটের অ্যাসেসি নম্বর দিয়ে দেওয়া হবে। সেই মিউটেশনও করে দেওয়া হবে। সিসি দেওয়ার সময় যদি দেখা যায় সব ফ্ল্যাট বিক্রি হয়নি, তবে প্রমোটারের নমে সেই ফ্ল্যাটগুলি করে দেওয়া হবে। যতদিন না বিক্রি হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত পুরকর মেটাতে হবে ওই প্রোমোটারকেই।
পরে ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি হলে, ক্রেতার নাম পুরসভায় নথিভুক্ত করাবে প্রোমোটার। তা যদি না করেন তবে বিক্রির পরেও কর গুনতে হবে তাঁকেই। এর ফলে ঝামেলা কমবে ফ্ল্যাট এবং জমি মালিকদের।
পুরসভার কাছে অভিযোগ
পুরসভার কাছে প্রায়শই অভিযোগ আসে, ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি হলেও কর মূল্যায়ন আটকে রয়েছে। আবার, কখনও ফ্ল্যাট কেনার পরে নতুন মালিককে আগের বকেয়া করের মোটা টাকা মেটাতে হচ্ছে। সেই সমস্যা দূর করতে এবার প্রোমোটারের দায়িত্ব বাড়ানো হয়েছে।
ফ্ল্যাট তৈরির সময় প্রোমোটার এবং জমির মালিকের মধ্যে ‘রেজিস্ট্রার ডেভেলপমেন্ট এগ্রিমেন্ট’ হয়। একই সঙ্গে মালিক প্রোমোটারকে একটি ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ দেন। ওই এগ্রিমেন্টর মধ্যেই ফ্ল্যাট বিক্রি হওয়ার আগে পর্যন্ত করের টাকা যাতে প্রোমোটার মেটায়, সেই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে।
সমস্যা হিসাবে যেগুলি উঠে আসছে
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের মতে, ফ্ল্যাট কেনাবেচার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত সমস্যাগুলি নজরে আসে।
১) প্রোমোটারের ফ্ল্যাট বানানোর কাজে ঢিলেমি।
২) গ্রাহকরা অ্যাডভান্স দিয়েও ফ্ল্যাট পাচ্ছেন না।
৩) প্রোমোটার বেশিরভাগ ফ্ল্যাট বিক্রি করে কিছু হাতে রেখে দিচ্ছেন। যাতে দাম বাড়লে তিনি বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন।
৪) ততদিন হয় পুরনো মালিক না হলে ফ্ল্যাট কেনার পর নতুন মালিককে বকেয়া করের টাকা মেটাতে হচ্ছে।
৬) বকেয়া করের না মেটালে মিউটেশন হচ্ছে না।
এই সমস্যাগুলি দূর করতে প্রোমোটেরর উপর বেশ দায়িত্ব দিতে চাইছে কলকাতা পুরসভা।
মেয়রের কথায়, শুধু সিসি নিয়ে বা রেজিস্ট্রি করে হাত ধুয়ে ফেলতে পারবে না প্রোমোটার। ফ্ল্যাট মালিকের নাম জানাতে হবে না হলে করের টাকা গুনতে হবে প্রোমোটারকে। এতে হায়রানিও কমবে ক্রেতাদের।