রয়ে গেছে ব্রাজিলের জার্সি, দ্বিগুণ দামে বিক্রি আর্জেন্টিনার জার্সি 

ফুটবল বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। এবারের কাতার বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ব্রাজিলের বিদায় হলেও ফাইনালে উঠেছে আর্জেন্টিনা। যার ফলে বাংলাদেশে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের বিশ্বকাপ উন্মাদনা স্বর্ণশিখরে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আর্জেন্টিনার জার্সি বিক্রির ধুম পড়েছে রাজধানীতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় (১৫ই ডিসেম্বর) পুরান ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন এলাকায় বাবার হাত ধরে আর্জেন্টিনার জার্সি কিনতে আসে আট বছর বয়সী সৈকত। তার সঙ্গে কথা হয় বাংলা ট্রিবিউনের। মেসিকে অসম্ভব ভালোবাসে সে। বড় হয়ে মেসির মতো ফুটবল খেলোয়াড় হতে চায়।

তার বাবা আনিসুল হক বলেন, আমার ছেলে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় অত্যন্ত ভালো। যদিও পড়াশোনা একটু কম করে। পুরান ঢাকায় পর্যাপ্ত খেলার জায়গা না থাকায় অত বেশি খেলতে পারে না। আগে ধুপখোলা মাঠে খেলতো। কিন্তু এখন তো সেটাও নেই। ক্রিকেটের চেয়ে তার ফুটবল অনেক বেশি পছন্দ। রাত জেগে সে মেসির খেলা দেখে। বিশ্বকাপ আসার পর থেকে প্রতিদিন বাসায় ফুটবল খেলা দেখে। আর্জেন্টিনার গত দুই ম্যাচ কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে সে বন্ধুদের সঙ্গে বাহাদুর শাহ পার্কে চলে এসেছিল মেসির খেলা দেখতে। আমিও আর তাকে বাধা দেইনি। আজকে জেদ ধরেছে তাকে মেসির জার্সি কিনে দিতে। নয়তো ভাত খাবে না। তাই আজকে আর্জেন্টিনার একটা জার্সি কিনে দিলাম।

আর্জেন্টিনার জার্সি কিনতে আসা মো. সুজন (১২) নামের আরেকজনের বলেন, বিশ্বকাপ খেলা শুরুর পর থেকেই বাসায় আম্মুকে বলেছি আর্জেন্টিনার জার্সি কেনার কথা। আম্মু বলছে, আব্বু বেতন পেলে কিনে দিবে। আজকে টাকা দেওয়ার পরই কিনতে এসেছি। কিছুদিন আগে জার্সির দাম ছিল ১৮০ টাকা। আজকে সেই জার্সি ২৫০ টাকা বলতেছে। আম্মুর কাছ থেকে এনেছি ২০০ টাকা। আমার কাছে আগের ৩০ টাকা ছিল। তা দিয়ে মোট মিলিয়ে দোকানদারকে অনেক অনুরোধ করে আর্জেন্টিনার জার্সি কিনেছে। আমার মেসির খেলা অনেক ভালো লাগে। আমি আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করি শুধুমাত্র মেসির জন্যই। এই বিশ্বকাপ মেসিই জিতবে।

জার্সি বিক্রেতা তাকবীরুল ইসলাম বলেন, বিশ্বকাপের শুরুতে আমি বেশ কয়েকটি দলের জার্সি পাইকারি কিনে রেখেছে। তার মধ্যে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার জার্সি সবচাইতে বেশি ছিল। ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে বাদ যাওয়ার পর থেকে দেশটির আর কোনও জার্সি বিক্রি হয়নি। ব্রাজিলের অন্তত দুই শতাধিক জার্সি অবিক্রিত রয়ে গেছে। এখন শুধু আর্জেন্টিনার জার্সি বিক্রি হচ্ছে। তাই লস যেন না হয় সেজন্য আর্জেন্টিনার জার্সির দাম একটু বাড়িয়ে দিয়েছি। আর্জেন্টিনার সেমিফাইনালে যাওয়ার পর থেকে তাদের জার্সি বিক্রি দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। শুধু আজকে সন্ধ্যায় ২৬টা বিক্রি করেছি। আশা করি ফাইনাল খেলার আগ পর্যন্ত বেচাকেনা ভালো চলবে।