Indian Scholar solved Panini’s Theorem: ২৫০০ বছরের পুরনো রহস্য, পাণিনির সূত্রে কী ছিল, ধরলেন কেমব্রিজের ভারতীয় ছাত্র

প্রায় আড়াউ হাজার বছর আগের এক রহস্য। সেটির সমাধান এখনও পর্যন্ত কেউই করে উঠতে পারেননি। আর সেই কাজটিই করে দেখালেন ভারতীয় ছাত্র। কী ঘটিয়েছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঋষি রাজপোপট? দেখে নেওয়া যাক। 

ভারতীয় ভাষাতত্ত্বের ক্ষেত্রে তো বটেই, ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার ক্ষেত্রেও যাঁকে ভাষাতত্ত্বের জনক বলে মনে করা হয়, তিনি হলেন পাণিনি। এই পাণিনির ভাষাতত্ত্বের অনেক রহস্যই এখনও অনুদ্ঘাটিত। পাণিনির যে সব তত্ত্ব নিয়ে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হয়েছে বিশেষজ্ঞদের, তার মধ্যে ‘অষ্টাধ্যায়ী’ অন্যতম। আর সেটির রহস্য নিয়েই বেশ ঝামেলায় পড়তেন বিশেষজ্ঞরা।

কী ধরনের ঝামেলা? এই অষ্টাধ্যায়ী একটি পর্যায়ে এসে তার সমাধান করতে পারতেন না বিশেষজ্ঞরা। এখানে পাণিনি বর্ণিত একাধিক ধাপের মধ্যে কোন ধাপটি তাঁরা গ্রহণ করবেন, সেটি বুঝে ওঠা যেত না। বিশেষ পর্যায়ের জন্য একাধিক ধাপের কথা বলা আছে পাণিনির ব্যাকরণে। তার মধ্যে কোনটি গ্রহণযোগ্য হবে, তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারতেন না তাঁরা। আর সেই পদ্ধতিটিরই সামাধান করে ফেলেছেন ঋষি। তাঁর আবিষ্কার পরিষ্কার করে দিতে পেরেছে, পাণিনি কোন পথে হাঁটতে বলেছেন। এর পাণিনির ব্যাকরণের সূত্র ধরে শব্দ এবং বাক্য গঠনকে একটি নিয়মের আওতায় ফেলা যাবে। 

আদি যুগেও পাণিনি র এই তত্ত্বের রহস্য সমাধানের চেষ্টা হয়নি তা নয়। জয়াদিত্য এবং বামন নামের দুই ভাষাতাত্ত্বিক তাদের তত্ত্বে পাণিনি প্রণীত রহস্যের সমাধানের চেষ্টা করেছেন এবং কিছু ক্ষেত্রে পাণিনির বিরোধিতাও করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই রহস্যের জট কাটেনি। আর সেটিই করতে পেরেছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় গবেষক ঋষি।

সংবাদমাধ্যমকে ঋষি জানিয়েছেন, টানা ৯ মাস ধরে এই সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত হাল ছেড়ে দেবেন বলেই ভেবেছিলেন। ‘কোথাও এগোতে পারছিলাম না। তাই এক মাসের জন্য বইপত্র তুলে রেখে দিই। গরমকালটা উপভোগ করি। সাঁতার কাটি, সাইকেল চালাই, মেডিটেশন করি। তার পরে এসে আবার বই খউলি। সঙ্গে সঙ্গে চোখের সামনে সূত্রগুলি ফুটে ওঠে। সব কিছু বুঝতে শুরু করি। তার পরের কয়েকটি সপ্তাহ মারাত্মক উত্তেজনায় কাটে। ঘুমোতে পারিনি। তার পরে আর আড়াই বছর লেগেছে গোটাটা সমাধান করতে।’

ঋষির গাইড অধ্যাপক ভিনসেনজো ভেরজানি বলেছেন, ‘সমাধানটি যদি খুব জটিল হয়, তাহলে বুঝতে হবে, সেটি সঠিক সমাধান নয়। এমনটিই মনে হয়েছিল আমার। সে কথাই ঋষিকে বলেছিলাম। আর ঋষি শেষ পর্যন্ত সহজ রাস্তাই বার করে ফেলল।’

এর ফলে ঠিক কী কী হতে চলেছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঋষির এই আবিষ্কারের পরে পাণিনির ভাষাতত্ত্বকে এবার সহজেই কমপিউটার প্রোগ্রামিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা যাবে। এত দিন ধরে এই কাজটি খুব কঠিন হয়েছিল। কিছুতেই এর সমাধান করা যাচ্ছিল না। ফলে প্রযুক্তির মাধ্যমে সঠিক বাক্য ও শব্দ বিন্যাস সম্ভব হচ্ছিল না। আগামী দিনে এই কাজটিই সহজ করে দিল ভারতীয় গবেষকের আবিষ্কার।