NASA InSight: ‘অবসর’ নিচ্ছে নাসার মঙ্গলযান, শেষ ছবি পোস্ট করল মার্কিন মহাকাশ সংস্থা

InSight ল্যান্ডারের সম্ভাব্য শেষ ছবি প্রকাশ করল নাসা। প্রায় ৪ বছর আগে লাল গ্রহের মাটি ছুঁয়েছিল নাসার এই মঙ্গলযান। সেই সময় থেকে মঙ্গল গ্রহের গবেষণার প্রধান মাধ্যম ছিল নাসার এই ল্যান্ডার। তবে প্রায় ৪ বছর সময় পর এবার তার ‘ডিউটি’ সম্ভবত শেষ হতে চলেছে। ল্যান্ডারের সোলার প্যানেল লাল গ্রহের ধুলোর আস্তরণে ঢেকে গিয়েছে। শক্তি ক্রমেই কমে চলেছে। ইনসাইটের থমকে যাওয়া এখন খালি সময়ের অপেক্ষা মাত্র। তার আগে ইনসাইট থেকে পাঠানো সম্ভাব্য শেষ ছবিটি টুইট করল মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। আরও পড়ুন: 

এ যেন মঙ্গলযানের আত্মকথা। কিছুটা তেমন সুরেই টুইট করা হল নাসার ইনসাইট-এর অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে। সেখানে লেখা হল, ‘আমার শক্তি সত্যিই কমে এসেছে। তাই এটিই আমার পাঠানো শেষ ছবি হতে পারে। তবে আমাকে নিয়ে চিন্তা কর না। আমার এখানে সময় যথেষ্ট কার্যকর ও সুন্দর ছিল। আমি যদি আমার মিশন টিমের সঙ্গে যোগাযোগ চালিয়ে যেতে পারে, তা করে যাব। তবে আমি শীঘ্রই আমার কাজে ইতি টানব। আমার সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।’

মঙ্গলকে প্রদক্ষিণরত মহাকাশযানের মাধ্যমে এই ল্যান্ডারের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখে নাসা। এই অরবিটারের সঙ্গে ল্যান্ডারের সংযোগের প্রচেষ্টা পরপর দুইবার ব্যর্থ হলেই নাসা আনুষ্ঠানিকভাবে এই মিশনটি সম্পন্ন ঘোষণা করবে। চলতি বছরে মাঝামাঝি থেকেই ইনসাইটের শেষ নিঃশ্বাসের প্রহর গুনছ

ফাইল ছবি: টুইটার

(Twitter)

গত অক্টোবরে প্রথমবার নাসার এই রোবোটিক ল্যান্ডার মঙ্গলগ্রহের পৃষ্ঠের কাছাকাছি সিসমিক তরঙ্গ সনাক্ত করে। ভূপৃষ্ঠ বরাবর এই তরঙ্গের কম্পন উত্তর গোলার্ধ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। এই ভিন্ন ধরনের ভূকম্পনের মাধ্যমে নাসার মঙ্গল গ্রহণের গঠন সম্পর্কিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি মেলে।

২০১৮ সালের নভেম্বরে মঙ্গলের মাটি ছোঁয় ইনসাইট। তার পর থেকে এটিই এই ল্যান্ডার থেকে প্রাপ্ত সবচেয়ে যুগান্তকারী তথ্য ছিল। প্রাথমিকভাবে ইনসাইটের মিশন মূলত দুই বছর স্থায়ী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে তা ডিসেম্বর পর্যন্ত আরও দুই বছরের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এর নির্মাতা লকহিড মার্টিন স্পেস সিস্টেম। NASA-র জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (JPL) দ্বারা এই যান পরিচালিত হয়। এর বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ইউরোপীয় বিভিন্ন সংস্থার নির্মিত।

ইনসাইটের প্রেরিত তথ্যের মাধ্যমে মঙ্গলে এক হাজারেরও বেশি ভূকম্পন চিহ্নিত করা হয়। আর তার মাধ্যম এটি প্রমাণিত হয় যে, ভূতাত্ত্বিকভাবে মঙ্গল গ্রহ এখনও যথেষ্ট সক্রিয়। চলতি বছরের মে মাসে ৫.০ মাত্রার একটি বৃহত্ ভূমিকম্পও সনাক্ত করে নাসার এই যান। পৃথিবীর ক্ষেত্রে যা প্রায় মাঝারি মাপের ভূমিকম্প। আরও পড়ুন: Skyroot: সফলভাবে রকেট পাঠাল স্কাইরুট, নেপথ্যে IIT খড়গপুরের প্রাক্তনী

মঙ্গলের নিরক্ষরেখার ঠিক উত্তরে এলিসিয়াম প্লানিটিয়া নামের একটি বিস্তীর্ণ সমতল ভূমিতে তিন পায়ে দাঁড়িয়ে সে। গত ৪ বছর ধরে আমাদের অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে চলেছে ইনসাইট। সিসমিক ইনভেস্টিগেশন, জিওডেসি এবং হিট ট্রান্সপোর্টের মাধ্যম মঙ্গলের অভ্যন্তরীণ গবেষণায় উল্লেখযোগ্য সহায়তা করেছে নাসার এই যান। এবার সময় এসেছে তার অবসর নেওয়ার।