তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা সাজাচ্ছেন কয়েকজন আইপিএস অফিসার। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাইপো অভিষেকের নির্দেশেই সেই কাজ করা হচ্ছে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে অভিযোগ করলেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যদিও পালটা শুভেন্দুকে কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
মঙ্গলবার সংসদ ভবনে শাহের সঙ্গে ৩০ মিনিটের মতো শুভেন্দুর সাক্ষাৎ-পর্ব চলে। তারপর শুভেন্দু বলেন, ‘আমি ওঁনাকে জানিয়েছি যি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর ভাইপোর (তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক) নির্দেশে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা সাজাচ্ছেন এবং আমার গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করছেন কয়েকজন আইপিএস অফিসার। বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে (আমার বিরুদ্ধে) যে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখেছেন অমিতজি।’
তবে তাঁকে শাহ কী বলেছেন, তিনি আর কী কী বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপিকে বুস্টার ডোজ দেওয়া নিয়ে কোনও কথা হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে কিছু জানাতে চাননি শুভেন্দু। বরং তিনি বলেন, ‘একান্ত সাক্ষাৎকারে কী কী আলোচনা হয়েছে, সেটার পুরোটা আমি প্রকাশ্যে আনতে পারি না। কারণ আমি দলের অনুগত সৈনিক।’
বিজেপি সূত্রের খবর, শাহকে হিন্দিতে লেখা আট পৃষ্ঠার একটি বুকলেট দিয়েছেন শুভেন্দু। তাতে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়ার ২৬ টি এফআইআরের উল্লেখ করা আছে। যা ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর শাহের হাত ধরে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদানের পর থেকে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। সেই বুকলেটের আবার নাম দেওয়া হয়েছে ‘১৯৫৬’ । যে ভোটের ব্যবধানে গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকে মমতাকে হারিয়েছিলেন শুভেন্দু।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘এইসব মামলায় গ্রেফতারি থেকে আমায় কলকাতা হাইকোর্ট সুরক্ষাকবচ দিলেও একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কিন্তু সেই মামলা হাইকোর্টে ফিরিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তা থেকে ইঙ্গিত মিলছে, আমি যে সওয়াল করেছি, তা নিয়ে সওয়াল-জবাবের প্রয়োজন আছে।’
যদিও শুভেন্দু এবং শাহের সেই সাক্ষাৎ-পর্বকে একেবারেই পাত্তা দিতে চায়নি তৃণমূল। ঘাসফুল শিবিরের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ উলটে খোঁচা দেন, নারদকাণ্ডে যাতে ছাড়া পান, সেজন্য শাহের হাতে-পায়ে ধরতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু। যে মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা বা সিবিআই। কুণাল বলেন, ‘শাহকে শুভেন্দু যে তালিকা দিয়েছে, তাতে কি নারদকাণ্ডের উল্লেখ আছে? যে মামলায় সিবিআইয়ের এফআইআরে তাঁর নাম আছে। শাহের জুতো পালিশ করতে দিল্লি গিয়েছিলেন উনি (শুভেন্দু)।’