আবাস যোজনা: পিঠ বাঁচাতে মুর্শিদাবাদের পঞ্চায়েতে গণইস্তফা, কেঁদে ভাসালেন প্রধান

আবাস যোজনায় ভয়াবহ দুর্নীতির অভিযোগ মুর্শিদাবাদের ভরতপুরে। আর তার জেরে এবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুর ২ পঞ্চায়েতে একেবারে গণ ইস্তফা। দল বেঁধে ইস্তফা দিলেন পঞ্চায়েত সদস্য়রা। শাসকদলের ১৭জন পঞ্চায়েত সদস্য এদিন গণ ইস্তফার চিঠি দেন। প্রধানও ওই দলে ছিলেন। জনরোষের আশঙ্কায় তাঁরা গণ ইস্তফা দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এই ঘটনায় শোরগোল চরমে পৌঁচেছে। কার্যত নজিরবিহীন ঘটনা। ঠিক কী বললেন পঞ্চায়েত প্রধান?

পঞ্চায়েত প্রধান সৈয়দ নাসিরুদ্দিন জানিয়েছেন, অসহায়,মাটির বাড়ি, ঝুরঝুরে মাটি ঝড়ে পড়ছে সেই মানুষরা ঘর পাননি।( এরপরই কেঁদে ফেলেন তিনি) । তিনি বলেন, আমরা চাই গরীব মানুষ ঘরটা পান। কিন্তু তাঁরা পাননি। ছিটেবেড়ার বাড়ি, শীতের রাতে কষ্ট পাচ্ছেন, শীতে থরথর করে কাঁপছে, সেই মানুষগুলো চিৎকার করে আমাদের সামনে কাঁদছেন। আমরা তাদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। (এরপর ফের কেঁদে ফেলেন তিনি)।

এদিকে এই ঘটনায় জেলার রাজনীতিতে একেবারে হইচই পড়ে গিয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, আবাস যোজনায় দুর্নীতির জেরে জনরোষ আছড়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকায়। এর জেরে ক্রমেই অস্বস্তি বাড়ছে তৃণমূল শিবিরে। বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ বিক্ষোভ লেগেই আছে। প্রধানের বাড়ির সামনেও ক্ষোভে ফেটে পড়়ছেন সাধারণ গরিব মানুষ। অন্য়দিকে শাসকদলের ঘনিষ্ঠ অবস্থাপন্ন লোকজনের নাম উঠেছে এই তালিকায়। আর তার জেরেই এবার বড় সিদ্ধান্ত নিলেন মুর্শিদাবাদের একটি পঞ্চায়েতের সদস্যরা। ভরতপুর ২ পঞ্চায়েতের অন্তত ১৭জন সদস্য এই গণ ইস্তফায় অংশ নেন। মূলত জনরোষের হাত থেকে বাঁচতেই এই পদক্ষেপ নিয়েছেন তাঁরা। এমনটাই মনে করা হচ্ছে। এনিয়ে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও বিশেষ মুখ খুলতে চাননি।

তবে গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে দলের তরফে খোঁজ নেওয়া শুরু হয়েছে। কীভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে বিরোধীদের অভিযোগ, গোটা জেলা জুড়েই এই অবস্থা। ভুরি ভুরি দুর্নীতি। কাটমানির বিনিময়ে এসব করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, বুকে ব্যথা নিয়ে পদত্যাগ করছি।

তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের বলেন, কীসের দুর্নীতি? এটা প্রধান তৈরি করেনি। সরকারি কর্মচারীরা এটা তৈরি করেছিলেন। এখানে প্রধানের কোনও ভূমিকা নেই। জনরোষের সম্ভাবনা নেই। সবটাই দুর্নীতি, স্বজনপোষণ এমন নয়। কোথাও ঘটনা ঘটে থাকলে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হবে।