পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দেও শর্ত, রাজ্য়কে দশ দিনের মধ্য়ে টাকা বণ্টনের নির্দেশ

চলতি অর্থবর্ষ শেষ হতে আর তিন মাস বাকি। এই পরিস্থিতিতে দুয়ারে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর এখন এতদিন বাদে রাজ্যের হাতে এল পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দের প্রথম কিস্তি। আর সেখানেই চাপিয়ে দেওয়া হল কড়া শর্ত। মোদী সরকারের জারি করা ফরমানে বলা হয়েছে, মাত্র ১০ দিনের মধ্যে ওই টাকা পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরের কাছে না পৌঁছলে বাজারি হারে চড়া সুদ দিতে হবে বাংলাকে। এদিকে কোটি কোটি টাকার বকেয়া রয়েছে কেন্দ্রের কাছে। কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাজ্যকে বিপুল আর্থিক বোঝা টানতে হচ্ছে। সেখানে একের পর এক শর্তের বোঝা চাপাচ্ছে মোদী সরকার। প্রথমে আবাস যোজনায়, এবার পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকাতেও।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ সম্প্রতি আবাস যোজনার বরাদ্দ অনুমোদনের সময়ও কেন্দ্র একগুচ্ছ শর্ত চাপিয়েছিল। এবার আবার সেই ফরমান। অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিক শুরুর একসপ্তাহ আগে ছাড়া বরাদ্দে এই ফরমান জারি করা হয়েছে। আগে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, টাকা আসার ১৫ দিনের মধ্যে তা পঞ্চায়েতের কাছে না পৌঁছলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নির্দিষ্ট হারে সুদ দিতে হল রাজ্যকে। এবার তা কমিয়ে ১০ দিন করা হয়েছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনে। আর সুদের হারও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বাজারের উপর। না হলে মোটা অঙ্কের টাকা গুনাগার দিতে হবে রাজ্যকে। যা কার্যত জরিমানার সামিল বলে মনে করছেন অনেকে। তাই এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।

কত টাকা পেল বাংলা?‌ চলতি অর্থবর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রথম কিস্তির টাকা বাংলার পাওয়ার কথা ছিল গত অগস্ট–সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু সেখানে পথের কাঁটা হয় বিগত বছরগুলির খরচের ২৫ শতাংশ অনলাইন অডিট। সেটা সম্পূর্ণ হলে তবেই মিলবে চলতি অর্থবর্ষের টাকা বলে জানিয়েছিল মোদী সরকার। সেই শর্তও পূরণ করে বাংলা। অবশেষে প্রথম কিস্তি বাবদ ৯৯৬ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা ছাড়তে কার্যত বাধ্য হয় কেন্দ্র। নবান্ন সূত্রে খবর, গত ২৩ ডিসেম্বর নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে চিঠি দিয়ে সেই কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। আর শর্ত দেওয়া হয়, এই টাকা এসে পৌঁছনোর ১০ দিনের মধ্যে তা সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদে বণ্টন করে দিতে হবে রাজ্যকে। এমনকী পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অধীনে নেওয়া প্রকল্পের কাজের জন্যই তা ব্যয় করাও বাধ্যতামূলক।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা খরচ হয় মূলত নিকাশি এবং পানীয় জল সরবরাহ সংক্রান্ত প্রকল্পে। আর নিঃশর্ত তহবিলের অধীনে চলে রাস্তা তৈরি থেকে শুরু করে গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ। আর এই নিঃশর্ত তহবিলের প্রথম কিস্তির প্রায় ৬৫০ কোটি এখনও আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তবে নবান্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দ্রুত সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলিকে বরাদ্দ অর্থ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কাজও দ্রুত শুরু হবে।