Jalpaiguri: হাসপাতালে মিলল না অ্যাম্বুলেন্স, মায়ের মৃতদেহ কাঁধে তুলে নিয়েই হাঁটলেন ছেলে!

তিনগুণ বেশি ভাড়া চেয়েছিলেন অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। কিন্তু, অর্থের অভাবে এত টাকা দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করার সমর্থ্য ছিল না। সরকারি হাসপাতাল থেকেও মেলেনি বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা। তাই বাধ্য হয়েই মৃত মায়ের দেহ কাঁধে তুলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটলেন ছেলে। আর তার সঙ্গে ছিলেন বৃদ্ধ বাবা। অমনাবিক এই দৃশ্য অন্য কোনও রাজ্যের নয়, এই দৃশ্য হল বাংলারই একটি জেলার। ছত্রিশগড়ের পর এবার এমন অমানবিক দৃশ্যের সাক্ষী থাকল জলপাইগুড়ি। এমন ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে। যদি হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা রয়েছে বলে দাবি করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জানা গিয়েছে, মাল মহকুমার ক্রান্তি ব্লকের বাসিন্দা রামপ্রসাদ দেওয়ান। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে তাঁর মা লক্ষ্মীরাণী দেওয়ানকে গতকাল রাতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতেই সেখানে মারা যান বছর একাত্তরের লক্ষ্মীরাণী দেওয়ান। আজ সকালে মায়ের মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে আসতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। একটি অ্যাম্বুলেন্স জন্য ভাড়া করতে গিয়েই দুশ্চিন্তায় পড়ে যান রামপ্রসাদ। অভিযোগ, ৯০০ টাকা ভাড়ার জায়গায় অ্যাম্বুলেন্সে ভাড়া চাওয়া হয় ৩০০০ হাজার টাকা। সেই সামর্থ্য না থাকায় মায়ের মৃতদেহ কাঁধে করে নিয়েই প্রায় ৫০ কিমি দূরে অবস্থিত পায়ে হেঁটে ক্রান্তির উদ্দেশ্যে রওনা দেন রামপ্রসাদ দেওয়ান৷

পরে রাস্তায় বিষয়টি গ্রিন জলপাইগুড়ি নামে একটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের চোখে পড়লে তারা শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করেন। ওই গাড়িতে মৃতদেহ বাড়ি নিয়ে যান রামপ্রসাদ। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন রামপ্রসাদ, ‘তিনি বলেন আমরা গরীব মানুষ। আমাদের কাছে বেশি টাকা নেই। এখানে বেশ কয়েকটা অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তারা ৯০০ টাকার পরিবর্তে ৩ হাজার টাকা ভাড়া বলেছে। আমাদের কাছে অত টাকা ছিল না। তাই পায়ে হেঁটে বাড়ি যাওয়া ছাড়া আমাদের কোনও উপায় ছিল না।’ হাসপাতাল থেকেও তিনি কোনও অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পাননি বলে জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা রয়েছে। বিনামূল্যেই এখানে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে বিষয়টি রামপ্রসাদের জানা ছিল না বলে মনে করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।