Chit fund: ফের চিট ফান্ডের খপ্পরে পড়ে প্রতারণার শিকার খড়্গপুরের শতাধিক বিনিয়োগকারী

‘মরিয়াও মরে নাই’। হঠাৎ হঠাৎ রক্ত বীজের মতো আর্বিভাব হচ্ছে চিট ফান্ড সংস্থার। তেমনই এক চিট ফান্ড সংস্থার খপ্পরে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়ালেন মেদিনীপুরের শতাধিক বাসিন্দা। এই তালিকায় খড়্গপুর শহরের এক কাউন্সিলর ও কলকাতা পুলিশের এক কর্মী। ঘটনার পর থেকে পরিবারকে নিয়ে বেপাত্তা মালিক।

খড়্গপুরের বাসিন্দা এক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে এক প্রথম সারির দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপণ দেখে উৎসাহিত হন তাঁরা। বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, স্বল্প বিনিয়োগের মাধ্যমে বহুল প্রচারিত গাড়ি সংস্থাতে গাড়ি দিতে চাইলে যোগাযোগ করুন।  সেই বিজ্ঞাপন দেখে অনেক ক্যাব চালক যোগাযোগ করেন। তাঁদের বলা হয়, গাড়ির জন্য আড়াই লক্ষ টাকা দিতে হবে। এর বিনিময়ে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বিনিয়োগকারীকে। বাকি গাড়ি সমস্ত খরচ বহন করবে ওই চিটফান্ড সংস্থা। সংস্থাটি জানায়, গাড়ির মালিককে একটি পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি দেওয়া হবে। এই আশ্বাস দিয়ে রাজ্য জুড়ে ব্যবসা চালাচ্ছিল সংস্থাটি। 

খড়্গপুরের শতাধিক মানুষ এতে বিনিয়োগ করেন। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত যাঁরা এই স্কিমে বিনিয়োগ করেন তাঁরা মাসে মাসে ১০ হাজার টাকা করে পেয়েও যাচ্ছিলেন। কিন্তু কোভিড শুরু হতে সমস্যা তৈরি হয়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বন্ধ হয়ে যায় টাকা দেওয়া। প্রায় দু’বছর ধরে টাকা দেওয়া বন্ধ থাকে। ২০২২ সালে ওই চিটফান্ড সংস্থার মালিক জানান, ‘কোভিডের সময় গাড়ি চলেনি। তাই ইএমআই দেওয়ার মতো টাকা হয়নি। ফাইনান্স কোম্পানি সব গাড়ি টেনে নিয়েছে।’ তিনি আশ্বাস দেন টাকা ফেরত দেবেন তবে একটু সময় লাগবে। এর পরই হঠাৎ গত ২৮ ডিসেম্বর পরিবারকে নিয়ে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। তাঁর সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। কলকাতা ওই ব্যক্তির একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট রয়েছে। সেটিতেও তালা দেওয়া। এর পর বিনিয়োগকারীরা পুলিশে অভিযোগ জানায়। অভিযুক্ত চিটফান্ড সংস্থার মালিক ওই দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

বিনিয়োগকারীরা জানাচ্ছেন, কেউ ২০ লক্ষ টাকা কেউ বা ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে প্রতারিত হয়েছেন। সারদা, রোজভ্যালি বা অন্যান্য চিটফান্ডের মতো প্রথম দিকে যারা বিনিয়োগ করছিলেন তারা অনেকেই টাকা ফিরত পেয়েছিলেন। পরের দিকে কেউ আর টাকা ফেরত পাননি। বিনিয়োগকারীরা খড়্গপুর টাউন থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।