ক্রিকেট অনেকটাই ব্যাটারদের হয়ে যাচ্ছে, ঢাকা লিট ফেস্টে স্যার গর্ডন গ্রিনিজ

ক্রিকেট এখন অনেকটাই ব্যাটারদের হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক কোচ কিংবদন্তী স্যার গর্ডন গ্রিনিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের জাতীয় দলের সাবেক এই বিধ্বংসী এই ওপেনার বলেছেন, ‘আমাদের বোলার ও ব্যাটারদের সাম্য প্রতিষ্ঠা করা উচিত।’

রবিবার (৮ জানুয়ারি) লিট ফেস্টের চতুর্থ ও শেষ দিনে ‘আই অন দ্যা বল’ শীর্ষক সেশনে কথা বলেন তিনি। গতকাল শনিবার (৭ জানুয়ারি) সত্তর ও আশির দশকে বাংলাদেশের কিংবদন্তী ব্যাটার ইউসুফ রহমান বাবুর ‘আই অন দ্যা বল’ বইটির মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। গ্রন্থের নামেই সেশনটির নামকরণ করা হয়। 

বেলা সাড়ে ১২টায় বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে ইউসুফ রহমান বাবুর সঞ্চালনায় স্যার গর্ডন গ্রিনিজের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন জিম্বাবুয় জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। সেশনে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়ি জীবন, অনুপ্রেরণা ও অর্জন নিয়ে আলোচনা হয়।

কিংবদন্তী স্যার গর্ডন গ্রিনিজ ১৯৯৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বিজয়ী বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ ছিলেন। খেলোয়াড়ি জীবনে হ্যামিল্টন মাসাকাদজাও স্বদেশ জিম্বাবুয়ের পর বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন। আলোচনার শুরুতে উভয়েই বাংলাদেশকে তাদের ‘সেকেন্ড হোম’ বলে অভিহিত করেন।

সঞ্চালক গর্ডন গ্রিনিজকে ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটি ভারতের কাছে হারার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটে যেকোনও দিন নিজেদের দিনে যেকোনও দলকে হারাতে পারে। তবে আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না, আমরা কীভাবে হেরে গিয়েছিলাম।’

প্রসঙ্গক্রমে খেলোয়াড় ও দর্শকদের উপর মিডিয়ার ব্যাপক প্রভাব আছে এমন মন্তব্য করে তিনি। বলেন, ‘মিডিয়ায় আরও বুঝে-শুনে কোনও খেলোয়াড়ের প্রশংসা বা দুর্নাম করা উচিত।’

গর্ডন ক্রিকেটের সাম্প্রতিক পরিবর্তনেরও সমালোচনা করেন। ক্রিকেট অনেকটাই ব্যাটারদের হয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের বোলার ও ব্যাটারদের সাম্য প্রতিষ্ঠা করা উচিত।’

এজন্য তিনি নীতিনির্ধারকের পাশাপাশি দর্শকদেরও দায়ী বলে মনে করেন। টেস্ট ক্রিকেটের চেয়ে কম সময়ে বিনোদনের জন্য টি-টুয়েন্টির ভক্ত বেড়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি দর্শকদের আহ্বান করেন, ‘দর্শক হিসেবে প্লিজ আপনারা খেলাটিকে বাঁচিয়ে রাখুন।’

হ্যামিল্টন মাসাকাদজা বাংলাদেশের মানুষ, ক্রিকেটবোদ্ধা ও প্রাণোচ্ছ্বল ফ্যানদের পছন্দ করেন। এ দেশের মাটিতেই তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন বলে বাংলাদেশ সবসময়ই তার কাছে স্পেশাল। দর্শকদের পক্ষ থেকে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে সাম্প্রতিক উন্নতির কারণ জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘নিজের উপর বিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখন জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়রা নিজেদের উপর আরও বেশি বিশ্বাস রাখছেন বলেই তাদের খেলায় উন্নতি হচ্ছে।’

তিনি মনে করেন শুধু ক্রিকেট নয়, যেকোনও খেলাতেই ভালো করার অন্যতম শর্ত আত্মবিশ্বাস।