ভুয়ো কললেটার নিয়ে প্রাথমিক পর্ষদে হাজির দক্ষিণ দিনাজপুরের যুবক, গ্রেফতার

শনিবার তখনও বেলা সেভাবে গড়ায়নি। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে এক যুবক ঘুরঘুর করছিলেন। এরপর তিনি গেটে একটি কললেটার দেখান। সেখানে লেখা ছিল প্রীতম ঘোষ। কিন্তু এপিসি ভবনের কর্মী সৌরভ ঘোষের ওই কললেটার দেখেই সন্দেহ হয়। তাছাড়া এদিন প্রীতম বলে কাউকে এদিন ডাকা হয়নি বলেও জানতে পারে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এরপর সেই কললেটারে থাকা যাবতীয় তথ্য় মিলিয়ে দেখেন পর্ষদের আধিকারিকরা। তারপরই বোঝা যায় এটি ভুয়ো কললেটার। এদিকে ওই যুবকের সঙ্গে আরও একজন এসেছিলেন। দুজনকেই প্রাথমিকভাবে আটক করা হয়।

এদিকে ওই যুবককে অ্যাডমিট কার্ড দেখাতে বললে তিনি তার একটি প্রতিলিপি দেখান। এর সঙ্গেই ওই যুবকের সঙ্গে থাকা আত্মীয় জানিয়ে দেন, বাইরে থাকা আত্মীয়ের কাছে আসল অ্য়াডমিট কার্ড রয়েছে। এরপর পুলিশের কাছে প্রীতম জানান বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা আত্মীয় অ্যাডমিট কার্ডের জন্য ৫০ হাজার টাকা চাইছে। এরপর তাকেও ফোন করে ডেকে আনে পুলিশ। তারপর তিনজনকে আটক করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় তাদের।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ জেনেছে, প্রীতম আসলে দক্ষিণ দিনাজপুরের বাসিন্দা। আত্মীয় ছাড়াও অপর ব্য়ক্তি হল মিডলম্যান। সে আবার নিজেকে শিক্ষক বলে দাবি করেছে। এদিকে এই ঘটনার পেছনে বড় চক্র কাজ করছে বলে মনে করছে পর্ষদ। বিধাননগর পূর্ব থানার পুলিশ ধৃতদের জেরা করছে। এই ঘটনার সঙ্গে আর কেউ যুক্ত কি না সেটাও দেখা হচ্ছে।

পর্ষদ সূত্রে খবর, ওই যুবকের কললেটার দেখে সন্দেহ হয়েছিল। এদিন যে তালিকা ছিল তার মধ্যেও প্রীতম নামে কেউ ছিল না। অন্য কারোর নথিকে নকল করে এই ধরনের ভুয়ো নথি তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নানা অসংগতির অভিযোগ ওঠে মাঝেমধ্যেই। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ। নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপোষন, আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগ রয়েছে। এমনকী নিয়োগ দুর্নীতিকে ঘিরে একাধিক গ্রেফতারও হয়েছে। তবে এবার একেবারে ভুয়ো কললেটার নিয়ে চাকরি পাওয়ার জন্য় এক যুবকের হাজির হওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে নতুন করে নানা চর্চা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে এবারই কি প্রথমবার কেউ ভুয়ো কললেটার নিয়ে হাজির হলেন পর্ষদে? নাকি এর আগে প্রীতমের মতো অন্য কেউ ভুয়ো কললেটার নিয়ে দিব্যি চাকরি করে যাচ্ছেন? প্রশ্নটা ঘুরছে বাংলায়।