জুতো চুরির মামলায় Ex উপ পুরপ্রধানকে কোর্টে তুললেন কালনার কবি, শেষ দেখে ছাড়বেন

কবির জুতো করল চুরি, হাজার ছুতো দিচ্ছে চোর, পথে ঘাটে চর্চা জোর। চুরি গিয়েছিল কালনার এক কবির জুতো। আর সেই জুতো চুরির অভিযোগ উঠেছিল খোদ তৎকালীন উপ পুরপ্রধান সিদ্ধেশ্বর আচার্যের বিরুদ্ধে। আর একটু খোলসা করে বিষয়টি বলা যাক। ২০১৫ সালের ঘটনা। কালনার বাসিন্দা মনোরঞ্জন সাহা কবিতা লেখেন। স্থানীয় এলাকায় কবিতা পাঠের আসরে গিয়েছিলেন তিনি। এদিকে সেই আসরে তৎকালীন সিপিএম পরিচালিত পুরসভার উপ পুরপ্রধান সিদ্ধেশ্বর আচার্যও ছিলেন। এতটা পর্যন্ত ব্যাপারটা ঠিকঠাকই ছিল। এদিকে কবি কবিতা পাঠ করে বেরিয়ে দেখেন তাঁর জুতো জোড়া কোথাও নেই। এরপর চারদিকে খোঁজ খোঁজ। গেল কোথায় সাধের জুতো জোড়া। জুতোর শোকে তখন বিপর্যস্ত কবি। ৩২৫ টাকা দিয়ে তিনি জুতো কিনেছিলেন। এদিকে সেই জুতোর দিকেই নজর পড়ল কার? খালি পায়ে বাড়ি ফেরার জ্বালা ভুলতে পারছেন না তিনি।

এদিকে তাঁর দাবি কিছুদিন পরে তিনি দেখেন তাঁর চুরি যাওয়া জুতো পরে ঘুরছেন খোদ উপ পুরপ্রধান। অত সহজে ছাড়ার পাত্র নন তিনি। রীতিমতো চেপে ধরেন তিনি। জুতো ফেরৎ দিন। এদিকে উপ পুরপ্রধান সিদ্ধেশ্বর আচার্য কার্যত আকাশ থেকে পড়েন। তিনি বিষয়টি মানতে নারাজ। তবে দমবার পাত্র নন মনোরঞ্জনও। হাতে অস্ত্র তো রয়েছেই। ছন্দে ছন্দে তিনি জুতো চুরির সেই ঘটনাকে ছড়িয়ে দিলেন কালনায়।

তবে এই কবিতা পড়ে ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙে উপ পুরপ্রধান সিদ্ধেশ্বর আচার্যের। তিনি সোজা থানায় চলে যান। নালিশ জানান মনোরঞ্জনের বিরুদ্ধে। এদিকে পালটা জুতো চুরির নালিশ করেন কবিও। এরপর সাত বছর কেটে গিয়েছে। সেই জুতো চুরির মামলা এখন আদালতে। আইনজীবীরাও বলছেন এমন মামলার কথা তাঁরা আগে শোনেনি।

এদিকে সিদ্ধেশ্বর আচার্য এই ঘটনার জেরে রীতিমতো অস্বস্তিতে। তাঁর দাবি সেদিন কবিতার আসর থেকে বের হওয়ার সময় তিনি দেখেছিলেন তাঁর জুতো উধাও হয়ে গিয়েছে। এরপর তিনি একটি ছেঁড়া জুতো পরে আসেন। পরে সেই জুতো তিনি তুলেও রেখে দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, তিনি জুতো চুরি করার লোক নন। পরিবারের একটা সম্মান আছে।

অন্যদিকে কবির দাবি, মামলা চালানোর খরচ জোগাড় করতে বাড়ি বিক্রি করে দেব। তবু জুতো আদায় করে ছাড়ব।

অনেকেই বলছেন, জুতো আবিষ্কারের গল্প জানা আছে। জুতো আবিষ্কার করতে না পারলে চরম শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজামশাই। তবে জুতো চুরি অভিযোগ ঘিরে এবার কী হয় সেদিকেই তাকিয়ে বঙ্গবাসী।