তথ্য প্রযুক্তি আইনে বডি বিল্ডার হারুনের ১০ বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশিত: ৭:২১ অপরাহ্ণ, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, অশ্লীল মানহানিকর কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস ও বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে বডি বিল্ডার হারুনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুনাল আদালত। একই সাথে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

সোমবার ( ১৬ জানুয়ারী) চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইমুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে বডি বিল্ডার হারুনকে দোষী সাব্যস্ত করে এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্ত বডি বিল্ডার হারুন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা মৃত সিদ্দিকী আহমেদের ছেলে।

প্রধানমন্ত্রী সাবেক সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোঃ জয়নুল আবেদীন পিএসসি, চট্টগ্রাম- ১৫ আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ডক্টর আবু রেজা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন নাদভীসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, লোহাগাড়া থানা ও উপজেলার বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, অশ্লীল চরম মানহানিকর কুরুচিপূর্ণ স্ট্যাটাস অপপ্রচার চালানোর অভিযোগে বডি বিল্ডার হারুনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাইবার ট্রাইবুনাল আদালত।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহউদ্দিন বিডি২৪লাইভকে জানান, ২০১৭ সালে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের মৃত সিদ্দিকী আমাদের ছেলে হারুন প্রকাশ বডি বিল্ডার হারুনসহ তার পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত কতিপয় আইডি হতে ফেইসবুকে সাইবার অপরাধের অবতারণা করেন। বিচারিক আদালতে সর্বমোট ৮ জনের মধ্যে ১ জন সাক্ষী মৃত্যুবরণ করায় ৭ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে নগরীর কোতোয়লি থানায় কতিপয় আইডি ও আসামিদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ দায়ের করেন লোহাগাড়া উপজেলা যুবলীগ নেতা ফজলে এলাহী আরজু। পরবর্তীতে এস আই ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ঘটনার তদন্ত শেষে শুধুমাত্র হারুনুর রশিদ প্রকাশ বডি বিল্ডার হারুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

রায়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর ৫৭(২) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে অনুপস্থিত ছিল।

এর আগে রাজধানীর মতিঝিল থানায় দায়ের করা একটি প্রতারণার মামলায় ৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি এই বডি বিল্ডার হারুন। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, পটিয়া, সাতকানিয়া, কোতোয়ালি ও রাজধানীর মতিঝিল এবং কোতোয়ালী থানায় একাধিক মামলা ও সাধারণ ডায়েরি রয়েছে।

প্রতারণা, দাঙ্গাবাজ, ডাকাতি, অবৈধ অস্ত্রধারী,মাদক ব্যবসা, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আক্রমণ, বিভিন্ন জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত, মাদকদ্রব্য কেনাবেচাসহ বিভিন্ন অপরাধের দায়ে বেশ কিছু মামলা তদন্তাধীন ও বিচারাধীন রয়েছে ঢাকা এবং চট্টগ্রাম আদালতে।

উল্লেখ্য, কখনো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, কখনো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), কখনো বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশ’ কিংবা শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মতো সরকারি দপ্তরের ভয় দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছে হারুন অর রশিদ ওরফে বডিবিল্ডার্স হারুন। তার বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে অপরাধ ও প্রতারণার বেশকিছু লোমহর্ষক ঘটনা। একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশের তদন্তে তার ভয়াবহ প্রতারণার স্পর্শকাতর তথ্য উঠে এসেছে।

তুহিন/সাএ