গঙ্গার বুকে বিলাসবহুল প্রমোদ তরণী। গঙ্গা বিলাস ক্রুজ। গত সপ্তাহে সেই তরণীর উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে যাত্রা শুরুর তৃতীয় দিনেই বিহারের ছাপরাতে গঙ্গায় আটকে গেল বিশাল ওই প্রমোদ তরী। আসলে গঙ্গার নাব্যতা কমে গিয়েছে। এর সঙ্গেই ভাটার টান। যার জেরে বিহারে আটকে গেল বিশাল তরী।
এদিকে কথা ছিল গঙ্গার দুধারে নানা দ্রষ্টব্যস্থানে থামবে ওই জাহাজ। এরপর সেখান থেকে পর্যটকরা নেমে সেই জায়গা ঘুরে দেখবেন। এদিন কথা ছিল চিরান্দ এলাকায় যাবেন যাত্রীরা। কিন্তু দরিগঞ্জ এলাকাতেই থেমে যায় গঙ্গা বিলাস। মূলত জল কম থাকার জেরেই নদীর বুকে আর এগোতে পারেনি ওই প্রমোদ তরণী।
ছাপড়া থেকে প্রায় ১১ কিমি দক্ষিণ পশ্চিমে রয়েছে চিরান্দ। প্রত্নতাত্ত্বিক নানা নিদর্শন রয়েছে এখানে। হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলমি সংস্কৃতির নানা নির্দশন রয়েছে এখানে। কিন্তু মাঝপথেই বিপত্তি। কম জলে আটকে গেল বিশাল জাহাজ।
এদিকে জাহাজ আটকে যাওয়ায় যাত্রীদের মধ্যেও উদ্বেগ ছড়ায়। ঘটনার খবর পেয়ে এসডিআরএফের টিম ছোট জলযান নিয়ে এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা পর্যটকদের পাড়ে নিয়ে আসার ব্য়বস্থা করেন।
ছাপড়ার সিও সত্যেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, পর্যটকদের নিয়ে আসার ক্ষেত্রে যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, এসডিআরএফের টিম ঘাটে রয়েছে। কোনওরকম সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কম জল থাকার জেরে তরীটিকে পাড়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছে। ছোট নৌকা করে পর্যটকদের পাড়ে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সব দিক থেকে সজ্জিত গঙ্গাবিলাস। জোয়ারের সময় প্রতি ঘণ্টায় এই জাহাজ যাবে ১২ কিমি। অন্যদিকে ভাটার সময় জাহাজের গতিবেগ প্রতিঘণ্টায় হবে ২০ কিমি। পানীয় জলের জন্য আরও সিস্টেম আছে এই জাহাজে। স্বাচ্ছন্দ্যের যাবতীয় ব্যবস্থা রয়েছে এই প্রমোদতরীতে। ভারতে এই গঙ্গা বিলাসের ভাড়া প্রতিদিন ২৫ হাজার টাকা। অন্য়দিকে বাংলাদেশে প্রতিদিন এই জাহাজের ভাড়া হবে ৫০ হাজার টাকা প্রতিদিন।
গত ১৩ জানুয়ারি বারানসীতে এই গঙ্গাবিলাসের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বারানসী থেকে অসমের ডিব্রুগড় পর্যন্ত যাবে এই প্রমোদতরণী। ৮০জন যাত্রী থাকবেন ওই তরণীতে।
এরপর অসমের ব্রহ্মপুত্র নদীতে পড়বে এই প্রমোদতরী। ভারত ও বাংলাদেশের উপর দিয়ে যাবে এটি। সব মিলিয়ে ৩২০০ কিমি পথ অতিক্রম করবে এই বিশাল তরী। অন্তত ২৭টি নদী ধরে চলবে এই গঙ্গা বিলাস।