দার্জিলিং পুরসভার রাশ এবার অনীত থাপার হাতে, গুরুংদের দাবিয়ে রেখে কৌশলী BGPM

প্রমোদ গিরি

পাহাড়ের রাজনীতিতে কার্যত ধূমকেতুর মতো উঠে এসেছিল অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। দার্জিলিং পুরসভায় ক্ষমতাও দখল করেছিল তারা। কিন্তু সেসব আজ অতীত। অনীত থাপার নেতৃত্বে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা সোমবার দার্জিলিংয়ে নতুন বোর্ড তৈরি করল। আর চেয়ারম্যান পদে বসলেন দীপেন ঠাকুরি।

দেশের অন্য়তম প্রাচীন পুরসভা বলে গণ্য় করা হয় দার্জিলিংকে। সেই ১৮৫০ সাল থেকে পথচলা শুরু হয়েছিল। এদিকে অনীথ থাপা দল তৈরি করেছিলেন ২০২১ সালে। আর সেই দলই ক্ষমতা দখল করল দার্জিলিংয়ে।

চেয়ারে বসেই দীপেন ঠাকুরি বলেন, আমি মঙ্গলবার শপথ নেব। আর বৃহস্পতিবার থেকে কাজ শুরু করে দেব।

এদিকে ২০২২ সালের মার্চ মাসের ভোটে ৩২টি আসনের মধ্যে ১৮টি আসনে ক্ষমতা দখল করেছিল হামরো পার্টি। তারাই বোর্ড তৈরি করেছিলেন। এদিকে গত বছর নভেম্বর মাসে ঠাকুরি সহ ৬জন হামরো পার্টির কাউন্সিলর বিজিপিএমে যোগ দেন। এরপরই সংকটে পড়েন অজয় এডওয়ার্ড।

এদিকে ২৮ ডিসেম্বর আস্থা ভোটে ১৬জন কাউন্সিলার যোগ দেন। তার মধ্যে দুজন টিএমসি কাউন্সিলর ছিলেন। এরপর হামরো পার্টি কলকাতা হাইকোর্টেরও দ্বারস্থ হয়। তাদের দাবি ছিল এই আস্থা ভোট ও দল ভাঙানোর বিষয়টি বেআইনী। তবে আদালতে বিশেষ সুবিধে করতে পারেনি হামরো পার্টি।

১৫জন বিরোধী দলের কাউন্সিলর সোমবারের মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন না। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে দার্জিলিং পুরসভাতে ক্ষমতা দখল করে পাহাড়ে এক অন্য সমীকরণের জন্ম দিলেন অনীত থাপা। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে নানা ট্রোল করা চলছে। সেকারণে তিনি সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে দিয়েছেন বলেও খবর। তিনি বলেন, আমি সামনের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। দার্জিলিংয়ের ভালোর জন্য কাজ করে যাব।

এদিকে পাহাড়়ে অনীতের উত্থানটা যথেষ্ট চমকপ্রদ। বিমল গুরুংয়ের হাত ধরেই তাঁর জনপ্রিয়তা অর্জন। ২০০৬ সাল থেকে গুরুংয়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা। ২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান আইডল সিজন ৩ এ প্রশান্ত তামাং ফ্যান ক্লাবের হয়ে তিনি প্রচার শুরু করেছিলেন। এরপর ২০০৭ সালের ৭ অক্টোবর গুরুং, অনীত সহ কয়েকজন মিলে তৈরি করেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এরপর শুরু হয়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন। পরে অবশ্য বিমলের সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। বায়ো সায়েন্সের গ্র্যাজুয়েট অনীত থাপা। তার হাতেই কার্যত এখন পাহাড় রাজনীতির রাশ।

অনীত বলেন, আমি জয় নিয়ে উচ্ছসিত হই না। হারলেও মন খারাপ হয় না। আসলে এগুলো দেখতে আমি অভ্যস্ত। এদিকে তৃণমূলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোর্খল্যান্ড আন্দোলনকে স্তব্ধ করে দেওয়ার পেছনে বলা হয় অনীতের হাত ছিল। আর এখন তৃণমূল ত্যাগ করা বিনয় তামাং বলছেন, জিটিএতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। ইডির তদন্ত দরকার।

অনীত বলেন, সব তদন্তকে স্বাগত।