জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: হরিয়ানাকে এক ইনিংস ও ৫০ রানে হারিয়ে চলতি রঞ্জি ট্রফির (Ranji Trophy 2022-23) কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল বাংলা (Bengal vs Haryana)। শুক্রের সকালেই বাংলার একেবারে ‘ফ্রাইডে ব্লকবাস্টার’ বাংলার ক্রিকেট ফ্যানদের দুরন্ত ক্রিকেট উপহার দিয়েছে মনোজ তিওয়ারি (Manoj Tiwary) অ্যান্ড কোং। হরিয়ানার লাহলির চৌধুরী বংশী লাল স্টেডিয়ামে (Chaudhry Bansi Lal Cricket Stadium) দুই ইনিংসে আগুন ঝরিয়েছেন বাংলার তিন পেসার আকাশ দীপ (Akash Deep), মুকেশ কুমার (Mukesh Kumar) ও ঈশান পোড়েল (Ishan Porel)। ম্যাচের পর জি ২৪ঘণ্টা ডিজিটালের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন অধিনায়ক মনোজ ও বাংলার সহকারী কোচ সৌরাশিস লাহিড়ী (Saurasish Lahiri)।
লাহলির চৌধুরী বংশী লাল স্টেডিয়াম নামটা শুনলেই ব্যাটারদের বুক রীতিমতো কেঁপে যায়। ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের মাত্র কয়েকটি ভেন্যুর মধ্যে লাহলির পিচে জোরে বোলারদের দাপট দেখা যায়। মনোজ গর্বিত তাঁর টিমের তিন পেসার নিয়ে। বলছেন আগামীতে তাঁরা ভারতীয় ক্রিকেট কাঁপাবেন। মনোজ বলছেন, ‘দেখুন লাহলিতে স্পোর্টিং উইকেট পেয়েছি। এটা কিন্তু আগের লাহলি নয়। আগে এখানে পিচে ঘাস থাকত, ভেজা পিচে দেড়-দু’দিনেই খেলা শেষ হয়ে যেত। এখন সেরকম নয়। সার্বিক ভাবে আমরা ভালো পারফর্ম করেছি। সবাই অবদান রেখেছে দলে। বোলাররা সত্যিই অসাধারণ। ২০ উইকেট পাওয়া কিন্তু সহজ কথা নয়। রুকুর প্রথম ইনিংসের ব্যাটিং ছিল দুর্দান্ত। আমি বরাবর বলে এসেছি যে, বোলারদের ৩৫০ রান দিতে পারলে, ওরা ২০ উইকেট বার করে আনবেই। কেউ রুখতে পারবে না। আমরা জিতবই জিতব। দলের পারফরম্য়ান্সে সত্যিই খুব খুশি। বাংলার তিন পেসারেরই ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। আমরা সেটা দেখতেই পাচ্ছি। তারা পুরস্কারও পাচ্ছে পারফরম্যান্সের। আকাশ দীপ আইপিএল দলে আছে। ওরা যেভাবে পারফর্ম করছে আগামীতে হয়তো ইন্ডিয়া এ দলের হয়ে খেলবে। পোড়েল তো বোর্ড প্রেসিডেন্ট দলে খেলেছে, ইন্ডিয়া এ খেলেছে। শরীর খারাপের জন্য শর্টার ফরম্যাটে খেলতে পারেনি। এই তিন পেসার যদি ৮০ শতাংশও দিতে পারে, আমাদের আটকানো কঠিন হবে। এরকম হলে অধিনায়কত্ব করতেও ভালো লাগে। যখন পরিকল্পনাগুলি ঠিকঠাক কাজে লাগে। আমি দলের তরুণদের সঙ্গে সবসময় কথা বলি। সব অভিজ্ঞতাই শেয়ার করি। যাতে ভুল না হয়, ভুল করলেও ফিরে আসতে পারে বা ভুলের দিকে এগিয়ে যেতে না হয় ওদের।
আরও পড়ুন: Ranji Trophy 2022-23: আকাশ দীপের দুই ইনিংসে ১০ উইকেট, হরিয়ানাকে হেলায় হারিয়ে নক আউটে বাংলা
এই জয়ে খুশি সৌরাশিসও। তিনি বলছেন, ‘অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছি আমরা। প্রথম বল থেকেই আমরা ম্যাচে আধিপত্য বজায় রেখেছিলাম। উত্তরপ্রদেশ ও বরোদার বিরুদ্ধে জয়ের কথা বলব আমি। পিছিয়ে পড়েছিলাম আমরা। সেখান থেকে ফিরে এসেছিলাম। হিমাচল, বাংলা ও উত্তরাখণ্ডের মধ্যে দু’টি দলের কোয়ালিফাই করার কথাই ছিল। দেখুন শাহবাজকেও এই ম্যাচে আমরা পাইনি। আমাদের অন্যতম সেরা প্লেয়ার ও। সেখানে দাঁড়িয়ে এরকম দাপুটে জয়, এটাই দলের চরিত্র বুঝিয়ে দেয়। আজকে যখন রাউন্ড সিক্স শেষ হবে, তখন দেখবেন যে, চলতি রঞ্জিতে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক ব্যাটার বা সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া বোলারদের তালিকায় বাংলারই সাত-আট জন রয়েছে। এটাই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে, দল হিসাবে কত ভালো খেলছি আমরা। সবাই অবদান রাখছে। এটা বিরাট বড় ব্যাপার।’ বাংলা দারুণ খেলেও সেমি বা ফাইনালে চোক করে যাচ্ছে। ফিনিশিং লাইন আর পার করা হচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে সৌরাশিস বলছেন, ‘এটা অস্বীকার করার কোনও জায়গাই নেই। তবে এটারও কিন্তু দু’টি দিক রয়েছে। একটা টিম যখন প্রতিবার সেমিফাইনাল বা ফাইনাল খেলছে, তার মানে দলটার ধারাবাহিকতা নিয়ে কোনও প্রশ্নই নেই। ভাবনা একটাই যে, এই টিমটা ট্রফি জিতছে না কেন! এটা নিয়েই আমরা ভাবিত। আসলে জেতাটা প্রক্রিয়ার মতো। ঘুম থেকে উঠে রাতারাতি জেতা যায় না। দেখুন জকোভিচ, ফেডেরার বা নাডালরা যখন কোনও টুর্নামেন্টে নামেন, ওঁরা কিন্তু ফেভারিট হয়েই নামেন। কারণ বছরের পর বছর জিতে ওই জায়গাটা ওঁরা তৈরি করে এসেছেন, প্রত্যাশা থাকে যে, ওঁরা জিতবেন। বাংলাও কিন্তু নিজেদের একটা মানদণ্ড তৈরি করে ফেলেছ। যা অত্যন্ত ওপরের দিকেই। আমাদের এরপর জয়টা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজগুলো ঠিকঠাক করতে পারলেই, নিশ্চয়ই ট্রফি আসবে।’ এখন দেখার বাংলা রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন হতে পারে কিনা! এই মুহূর্তে এ গ্রুপে ৬ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই রয়েছ গেল বাংলা। সঙ্গে রয়েছে চারটি জয় ও দুটি ড্র।
(সমগ্র প্রতিবদেন ব্যবহৃত ছবিগুলি সৌরাশিসের ফেসবুক পোস্ট থেকে)
(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)