ভারতে এসে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন বিদেশিনি, তার পরের ঘটনা মারাত্মক

ভারতে এসে মারাত্মক অভিজ্ঞাতার মধ্যে দিয়ে যেতে হল দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক ইউজুং হোয়াং-কে। এই যুবতী সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে বিরাট বিতর্ক। ঠিক কী কী হয়েছে, তাঁর সঙ্গে? কী লিখেছেন তিনি?

হালে ভারতে এসেছেন ইউজুং হোয়াং। তাঁর কথায়, তিনি দিল্লিতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর তাতেই এক সরকারি হাসপাতালের আপতকালিন বিভাগে তাঁকে যেতে হয়। তাঁর বক্তব্য পর পর দেখলে, অনেকটা এরকম:

১। ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা। আমায় হাসপাতালের আপতকালিন বিভাগে যেতে হয়েছিল। সেখানে নরক দর্শন হয়ে গেল।

২। শয়ে শয়ে অসুস্থ মানুষ। তাঁরা হাসপাতালের বাড়িতে প্রবেশ করতেই পারছেন না। তাই তাঁরা বাইরে মাটিতে শুয়ে আছেন। হাসপাতাল যেন রেফিউজি ক্যাম্প। খুব নোংরা। রোগীদের দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

৩। মানুষজন মারপিট করছেন। নার্সরা চিৎকার করছেন। কয়েক জন মারা যাচ্ছেন। তাঁদের পরিবারের সবাই কাঁদছেন। ৪ ঘণ্টা ছিলাম। তার মধ্যে তিন জনকে মারা যেতে দেখলাম। তার পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পেয়ে গেলাম।

৪। ওরা আমার রক্তপরীক্ষা করল না। কোনও পরীক্ষাই করল না। উপসর্গগুলি জানতে চাইল। সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ দিল। আমায় তিনটে ইজেকশন দেওয়া হল।

৫। ইনজেকশনগুলি নেওয়ার পরেই গা গুলিয়ে উঠল। দৌড়ে বাথরুমে গেলাম। বমি করলাম। ফিরে আসতেই আবার একটা ইনজেকশন। কিছু ক্ষণ বিছানায় শুয়ে রইলাম। কিন্তু মাঝে মধ্যে উঠে পড়তে হচ্ছিল। বাঁ হাতে সূচ ফোটানো। আর তার উপরেই মাঝে মধ্যে কেউ না কেউ এসে বসে পড়ছেন।

৬। অবশেষে ছাড়া পেলাম। সূচ ফোটানোর জায়গাটা খোলাই রইল। তখন রাত আড়াইটে। তখনও সবাই ব্যস্ত।

৭। আমার মনে হয়েছে, চিকিৎসা এখানে স্বল্প হয়। বেড, চেয়ার এবং স্থানের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। একমাত্র ভালো জিনিস হল, এই পরিষেবা বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

৮। এর মধ্যে আমার মানিব্যাগ হারাল। দুটো মানিব্যাগ ছিল আমার কাছে। একটায় বিশেষ কিছু ছিল না। সেটিই চুরি গিয়েছে। তাতে একটা ডেবিট কার্ড ছিল। ব্যাঙ্ককে জানাতেই, সেই কার্ড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নতুন কার্ড আসছে। হারানো ব্যাগটায় ‘ধারাভি’ লেখা ছিল। সেটা হারালাম বলে মন খারাপ লাগছে।

এই যাবতীয় লেখার পরে তাঁকে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন, এত জনসংখ্যার, এত বড় দেশে এর চেয়ে ভালো পরিষেবা বিনামূল্যে পাওয়া সম্ভব নয়। কেউ বলেছেন, উনি কেন কোনও বেসরকারি জায়গায় যাননি? কারও দাবি, এই সব লিখে ভারতের দুর্নাম করার জন্যই এগুল করা।

তবে ইউজুং হোয়াং-এ পাশেও দাঁড়িয়েছেন অনেকে। বলেছেন, কারও কোনও কিছু দেখে খারাপ লাগলে, সেটির সমালোচনা তিনি করতে পারবেন না কেন? এইটুকু সহনশীলতা তো সকলের মধ্যে থাকা উচিত।