Joginder Sharma reveal the inside story of 2007 T20 World Cup final on the day of retirement

সব্যসাচী বাগচী 

অবশেষে থামলেন যোগিন্দর শর্মা (Joginder Sharma)। থেমে গিয়েছিলেন অবশ্য ১৬ বছর আগেই। কারণ সেই ২০০৭ সালের পর তাঁকে আর ভারতীয় দলের (Indian Cricket Team) জার্সি গায়ে দেখা যায়নি। কারণ জাতীয় দলের হয়ে তাঁর পারফরম্যান্স একেবারেই আহামরি ছিল না। সমসাময়িক হরভজন সিং (Harbhajan Singh), যুবরাজ সিং (Yuvraj Singh), বীরেন্দ্র শেহওয়াগরা (Virender Sehwag) শুধু ভারত নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেও কিংবদন্তি হিসেবে পরিচিত। সেদিক থেকে দেখতে গেলে যোগিন্দর তাঁর সতীর্থদের কাছে অনেকটাই ম্লান। ঝুলিতে মাত্র ৪টি ওডিআই এবং সমসংখ্যক টি-টোয়েন্টি। তবুও ভারতীয় ক্রিকেট থেকে এহেন জোরে বোলারকে মুছে ফেলা যাবে না। কারণ তাঁর সেই ঘাতক বলেই ইতিহাস রচনা করেছিল টিম ইন্ডিয়া (Team India)। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের (Pakistan) বিরুদ্ধে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (2007 ICC World Twenty20) জিতে ক্রিকেট দুনিয়ার কাছে নিজের অস্তিত্ব বুঝিয়ে দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni)।  

এহেন যোগিন্দর শেষ পর্যন্ত সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েই ফেললেন। অবশ্য সেটা না করে উপায়ও ছিল না। কারণ ২০০৭ সালে হরিয়ানা পুলিসে (Haryana Police) যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁর জীবন যে একেবারে বদলে গিয়েছে। ভালো কাজ করার সুবাদে পেয়েছেন প্রোমোশন। ২০২০ সাল থেকে তিনি হরিয়ানা পুলিসের ডেপুটি সুপারেন্টেডেন্ট অফ পুলিস (DSP)। অবসর নিয়ে জি ২৪ ঘণ্টাকে টেলিফোনে সেই মেগা ফাইনালের শেষ ওভারের সেই উত্তেজক ঘটনার বিবরণ শোনালেন যোগিন্দর। ফর্মে থাকা মিসবা উল হক-কে আউট করার জন্য ধোনি তাঁকে কী পরামর্শ দিয়েছিলেন? সেটাই খোলসা করলেন সদ্য প্রাক্তন। 

যোগিন্দর বলছিলেন, “শেষ ওভারের আগে কোন লাইন এবং লেন্থে বল করা উচিত বা আমার বোলিং কৌশল কী হওয়া উচিত, সেটা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। মাহি আমাকে চাপই নিতে বারণ করেছিল।” থেমে থাকলেন না তিনি। পুরনো স্মৃতি হাতড়িয়ে ফের যোগ করলেন, “মিসবাহ দ্বিতীয় বলে আমাকে ছক্কা মারার পরেও, আমি চাপে ছিলাম না। ধোনিও শান্ত ছিল। সেই মুহূর্তে কোন ছকে বল করা উচিত, সেটা নিয়ে মাহির সঙ্গে কথাই হয়নি। আমি তৃতীয় বলের জন্য রান আপ নেওয়ার সময় খেয়াল করেছিলাম যে, মিসবাহ স্কুপ শট মারার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ওকে ‘কমিট’ হতেই আমি লাইন ও লেন্থ বদলে ফেলেছিলাম। স্লোয়ার দিয়েছিলাম। মিসবাহ মিস হিট করতেই, ফাইন লেগে থাকা শ্রীসন্ত লোপ্পা ক্যাচ ধরে নেয়। আর বাকিটা তো সবাই দেখেছিলেন।” 

আরও পড়ুন: Virat Kohli, Border Gavaskar Trophy 2023: শুধু নেটে নয় মহারণের আগে জিমেও গা ঘামাচ্ছেন বিরাট, ভাইরাল হল ছবি

আরও পড়ুন: Border Gavaskar Trophy 2023: প্যাট কামিন্সদের মহড়া নেওয়ার আগে কোন বিশেষ ছকে প্রস্তুতি নিচ্ছে রোহিতের টিম ইন্ডিয়া?

১৫৮ রান তাড়া করতে গিয়ে শেষ ওভারে পাকিস্তানের ১৩ রান দরকার ছিল। শোনা যায় ৩ ওভারে ৩৬ রান দেওয়া হরভজন সিং বল করতে রাজি হননি। এমন পরিস্থিতিতে ধোনি ফাটকা খেলে যোগিন্দরের হাতে বল তুলে দেন। অধিনায়কের আস্থার পূর্ণ মর্য়াদা দেন যোগিন্দর। সেই ওভারে মিসবাহকে আউট করে ভারতকে পাঁচ রানে জিতিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন করেন যোগিন্দর। ভারতকে উদ্বোধনী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছিলেন। নিয়েছিলেন ২০ রানে ২ উইকেট। 

দেশকে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতালেও, দুর্ভাগ্য তাঁর পিছু ছাড়েনি। কারণ মেগা ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই ম্যাচটাই ছিল তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। সেটা নিয়ে একটা সময় আক্ষেপ করতেন। তবে সময়ের সঙ্গে তিনিও সেই যন্ত্রণা ভুলে গিয়েছেন। তাই বলেছিলেন, “আসলে তখন সুযোগ না পেয়ে খুব রাগ হতো। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে আমি বুঝতে পেরেছি। আসল আমি ভালো পারফর্ম করতে পারিনি বলেই দল থেকে বাদ পড়েছিলাম। আর তাছাড়া পুরনো সময় তো আর ফিরে আসবে না। তাই এখন আর সেগুলো ভেবে লাভ নেই। সময়ও নষ্ট করতে চাই না।”  

বিশ্বজয়ী দলের অন্যতম সদস্য থেকে অজান্তেই হয়ে গিয়েছেন পুলিস। তিনি এখন হরিয়ানা পুলিসের ডিএসপি। সরকারি দায়িত্ব সামলানো, নিয়মকানুনের রক্ষা করাই আপাতত তাঁর জীবনের ব্রত। সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে যেতে চান ‘শেষ ওভারের নায়ক’।  

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)