Lac Of Confidence Cost Us, Clarifies Atk Mohun Bagan Coach Juan Ferrando

কলকাতা: রবিবার ঘরের মাঠে বেঙ্গালুরু এফসি-র (Bengaluru FC) কাছে ১-২ হারের পর দলের খেলায় মোটেই সন্তুষ্ট নন এটিকে মোহনবাগানের কোচ হুয়ান ফেরান্দো। তাঁর মতে, ফুটবলারদের আত্মবিশ্বাসের অভাবই ডোবাল দলকে। ফলে গত ম্যাচে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখানোর পরও এই ম্যাচে প্রায় অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হল রয় কৃষ্ণা, হাভিয়ে হার্নান্ডেজ, প্রবীর দাস, সন্দেশ ঝিঙ্গনদের সামনে।

এ দিন ২-১-এ জিতে চলতি লিগের সেরা ছয়ে ঢুকে পড়ল বেঙ্গালুরুর দল। এই নিয়ে টানা পাঁচটি ম্যাচ জিতে ঘুরে দাঁড়াল বেঙ্গালুরু এফসি এবং ওডিশা এফসি-কে টপকে লিগ টেবলের ছ’নম্বর স্থানে উঠে এল। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ১২ মিনিট আগে দূরপাল্লার শটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার হার্নান্ডেজ। ৯০ মিনিটের মাথায় ব্যবধান দ্বিগুন করেন ফিজিয়ান স্ট্রাইকার রয় কৃষ্ণা। বাড়তি সময়ের তৃতীয় মিনিটে দলকে একমাত্র সান্ত্বনা গোলটি এনে দেন সবুজ-মেরুন তারকা দিমিত্রিয়স পেট্রাটস।

ওডিশার বিরুদ্ধে দাপুটে পারফরম্যান্সের পরেও বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে কেন এমন ভরাডুবি, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কোচ ফেরান্দো বলেন, “সুযোগ পেয়েও আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। ফলে আত্মবিশ্বাসের অভাব হয়। সহজ পাসও মিস করেছে ছেলেরা। ওদের দেখে মনে হচ্ছিল বিভ্রান্ত, আত্মবিশ্বাসী নয়। ৬২-৬৩ মিনিটের পর থেকে মনে হচ্ছিল ওরা ভয় পাচ্ছে। কেন, জানি না। ড্রেসিং রুমে এই নিয়ে কথাও হচ্ছিল, কেন এত ভয়। হয়তো হারের ভয়, দ্রুত ওঠা-নামার ভয়। এক গোল খেয়ে যাওয়ার পরে যদি ধরে নেওয়া হয়, আমরা হারছি, তা হলে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন”।   

কোনও একজন বা দু’জন ফুটবলারকে দায়ী না করে পুরো দলকেই এই হারের জন্য দায়ী করতে চান স্প্যানিশ কোচ। বলেন, “পুরো দলের খেলাতেই খুশি নই আমি। প্রথম কুড়ি মিনিটে দল বেশ ভাল খেলছিল, জায়গা তৈরি করছিল। তার পরে রেফারির কিছু সিদ্ধান্তের জন্য ছেলেরা ফোকাস হারিয়ে ফেলে। হার-জিত পুরো দলের ওপর নির্ভর করে, কোনও দু-একজন খেলোয়াড়ের জন্য নয়”।

নিজেদের ভুলের আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, “আজ আমরা সেকেন্ড বল অর্জন করার দিক থেকে পিছিয়ে ছিলাম। পায়ে যথাসম্ভব বেশি বল রাখার ক্ষেত্রে যা জরুরি। দল সঙ্ঘবদ্ধ ফুটবল খেলতে পারেনি। ট্রানজিশনে সফল হলেও সেকেন্ড বল যদি বেশিরভাগ সময় প্রতিপক্ষ ছিনিয়ে নেয়, তা হলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যায়। আজ সেটাই হয়েছে। বেঙ্গালুরুই বেশিরভাগ সেকেন্ড বল পেয়েছে এবং ওরা সব ম্যাচেই এ ভাবেই খেলে আসছে। আমাদের মেনে নিতেই হবে যে, নিজেদের ভুলের জন্য ম্যাচটা হারতে হল”।

মূলত হুগো বুমৌস ও আশিক কুরুনিয়ান খেলতে না পারায় এবং দুই ফরোয়ার্ড লিস্টন কোলাসো ও মনবীর সিং চেনা ছন্দে না থাকায় এ দিন ব্যর্থতার মুখোমুখি হতে হয়ে সবুজ-মেরুন বাহিনীকে। দুই তরুণ ফরোয়ার্ড কিয়ান নাসিরি ও ফারদিন আলি মোল্লাকে ৮৪ মিনিটের মাথায় নামান কোচ হুয়ান ফেরান্দো, যে সিদ্ধান্ত নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে প্রশ্নও ওঠে।

এর উত্তরে কোচ স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, “গতকালই বলেছি, এদের পেশীর সমস্যা রয়েছে। ফলে ওরা কুড়ি মিনিটের বেশি খেলার মতো অবস্থায় নেই। আমার হাতে ৫০ মিনিট খেলার মতোও যদি কেউ থাকত, তা হলে তাকে বিরতির পর নামাতাম। কিন্তু এরা এখনও কমবয়সী, ২০-২৫ মিনিটের বেশি এরা খেলার মতো অবস্থায় আসেনি। মাঝে মাঝে যখন দল ভাল খেলে, আত্মবিশ্বাসী ফুটবল খেলে, তখন ওদের আগে নামানো যায়। কঠিন সময়ে তরুণ খেলোয়াড়দের নামালে ওরা স্বাচ্ছন্দবোধ করে না। তবে আজ ওদের শেষ দিকে নামালেও ওরা চেষ্টা করেছে উন্নতি করার”।

দলের প্রাক্তনী রয় কৃষ্ণাই এ দিন জয়সূচক গোল করেন। যাঁকে গত মরশুমের পরে বিদায় জানিয়েছিলেন ফেরান্দো, তাঁরই গোলে হেরে যাওয়ায় অবশ্য মোটেই অনুতপ্ত নন নন তিনি। বলেন, “রয় কৃষ্ণার গোলটা আমাদের ভুলে হয়েছে। ১৬টা ম্যাচে ও যদি ২৫টা গোল করে ফেলত, তা হলে আমার কিছু বলার থাকত না। মরসুমে তিনটে মাত্র গোল করেছে ও, তাও শেষটা আমাদের ভুলে। এই নিয়ে তাই বেশি কথা বলার প্রয়োজন নেই। এই দলের তরুণ খেলোয়াড়দের নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার”।