Mamata-Ananda: সরাসরি প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপের চেষ্টা, সংঘাতের পথে নবান্ন–রাজভবন

রাজ্য–রাজভবন ‘মধুচন্দ্রিমা’ শেষ। এই সৌজন্য শেষ হতে সময় লাগল মাত্র আড়াই মাস! জগদীপ ধনখড়ের পথেই হাঁটলেন বাংলার নয়া রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি উপদেষ্টা কমিটি গড়েছেন। তিনটি উপদেষ্টা কমিটি গড়ে তোলা হচ্ছে বলে সূত্রের খবর। সেখানে ভিন রাজ্যের প্রাক্তন আইএএস, আইপিএস, ম্যানেজমেন্ট গুরু, এমনকী ড্রোন বিশেষজ্ঞরা পর্যন্ত সদস্য হিসাবে থাকবেন। অভিযোগ, নবান্নকে কার্যত অন্ধকারে রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলার দৈনন্দিন প্রশাসনিক কাজকর্মে ‘কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ’ করা মূল উদ্দেশ্য। সব মিলিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে নতুন করে সংঘাতের রাস্তায় রাজভবন।

কেন হঠাৎ এমন ঘটতে চলেছে?‌ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের শীর্ষস্তরের ইন্ধনেই এই কাজ বলে আঙুল তুলেছে নবান্ন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু রাজভবন এখনও নির্বিকার। তাদের দাবি, সংবিধানই এরকম উপদেষ্টা কমিটি গড়ার অধিকার দিয়েছে রাজ্যপালকে। ইতিমধ্যে রাজভবনে কমিটির সদস্যদের অফিস ঘর তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তাঁদের সাম্মানিক, যাতায়াতের গাড়ি এবং দেহরক্ষী–সহ যাবতীয় আয়োজন করতে হবে রাজ্য সরকারকে।

এই তিনটি কমিটি কী কী?‌ সূত্রের খবর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বাংলার প্রশাসনিক কাজকর্মে ‘নজরদারি’র জন্য গড়া হয়েছে তিনটি কমিটি। কমিটিগুলি হল—গভর্নর’স অ্যাডভাইজারি কাউন্সিল, গভর্নর’স এক্সপার্ট কমিটি এবং গভর্নর’স রিসোর্স গ্রুপ। কমিটিগুলিতে রয়েছেন তামিলনাড়ুর প্রাক্তন প্রধান সচিব এম শীলা প্রিয়া, কর্ণাটকের প্রাক্তন আইএএস জয় ওম্মেন, কেরলের ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস’–এর ডাঃ পি জি রামকৃষ্ণ পিল্লাই, তামিলনাড়ুর টি আর কেশবন, কর্পোরেট মেন্টর ভি কে মাধবমোহন–সহ অন্যান্যরা। তৈরি করা হয়েছে ‘গভর্নর’স গোল্ডেন গ্রুপ’। সেখানে রয়েছেন গুজরাট ক্যাডারের প্রাক্তন আইপিএস তথা সিবিআইয়ের প্রাক্তন স্পেশাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা, ড্রোন বিশেষজ্ঞ রাজীব রঘুনাথ এবং ম্যানেজমেন্ট গুরু অজিত মেনন। এরা প্রত্যেকেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিশেষ আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত।

কেন সরতে হল নন্দিনীকে?‌ সূত্রের খবর, অযথা এই উপদেষ্টা কমিটি নিয়ে নিজের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন রাজ্যপালের সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। আটকে দিয়েছিলেন ফাইল। তাই রাজ্যপালের বিরাগভাজন হওয়া এবং তাঁকে অব্যাহতি দিতে চাওয়ার বিষয়টি সামনে এসেছে। রাজ্যে চলা কেন্দ্রের প্রকল্পগুলির হাল–হকিকত খতিয়ে দেখতেই এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। সব বিষয়েই নজরদারি চালাবেন কমিটির সদস্যরা। এমনকী প্রয়োজনে রাজ্যের আধিকারিকদের ডেকে কৈফিয়ৎও চাইতে পারবেন। তবে উপদেষ্টা কমিটিতে একজন ড্রোন বিশেষজ্ঞ ঠিক কী ভূমিকা পালন করবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা চরমে।