New Discovery in Himalaya: রূপকথার বইতে ছিল এ গুহার কথা! এত দিনে হিমালয়ে খুঁজে পেলেন বাঙালি অভিযাত্রীরা

কলকাতার বুকে যেমন পুরনো দিনের ছাপ এখনও ইতিউতি খুঁজলে অনেক মেলে, তেমনই বাংলার উত্তরবঙ্গ। পাহাড়ি দুর্গমতার কারণে হিমেল বঙ্গভূমির অনেক এলাকাই এখনও মানুষের অজানা অধরা। অনেক পাহাড়ি উপত্যকা ও গভীর নির্জন জঙ্গলের সত্য এখনও গোপন রয়ে গিয়েছে। শুধু স্থানীয় উপকথায় সেগুলি মানুষের মুখে মুখে ধরা দেয়।

সেদিক থেকে লেপচা উপকথা থেকে আজকের রাজা-রানি পাহাড়ের অভিযান। ঠিক কত যুগের তফাত এই দুই ঘটনার মধ্যে? ইতিহাসবিদরাই তা ভালো বলতে পারবেন। তবে এর মধ্যে তিস্তা আর মহানন্দা বয়ে গিয়েছে অনেক জল। দুইয়ের মাঝামাঝি এলাকায় কালিঝোরার অদূরে লাটপাঞ্চার‌। সেখানেই মহানন্দা অভয়ারণ্যের সবুজ গাছাগালিতে ঢাকা দুটি প্রাচীন গুহা। যেন রূপকথার মোড়কে মোড়া।‌ সেই রূপকথার গর্ভেই প্রবেশ করল ছয় বাঙালি অভিযাত্রী। দলের নেতৃত্বে পর্বতারোহী অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়।

কার্সিয়াংয়ের দক্ষিণ পূর্ব ঢাল বরাবর আড়াআড়িভাবে রয়েছে রাজা-রানি পাহাড়। স্থানীয় লেপচাদের বিশ্বাস, সেই পাহাড়ে একা একা যাওয়া আর মৃত্যুবরণ করা সমান। সেখানে গেলে কেউ আর ফিরে আসে না বলেই জানে সবাই। তাই একা যাওয়ার সাহসও দেখাননি কেউ। কিন্তু এই অভিযাত্রীদের দল দুঃসাহসী বললেও ভুল বলা হয় না। দার্জিলিং, কালিম্পং ও কার্সিয়াং একসময় সিকিমেরই অংশ ছিল। সেখানকার আদি অধিবাসীরা হলেন লেপচা। ইতিহাসবিদদের বয়ান মাফিক, লেপচাদের প্রথম রাজা ছিলেন তোরভে পানো। তার রাজত্বের সময়কাল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। মনে করা হয়, ১৪০০ থেকে ১৭০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তাঁর রাজত্বকাল ছিল। তারপরে আরও তিন প্রজন্ম সামলেছে লেপচা জগতের রাজ্যপাট। লেপচাদের উপকথা অনুযায়ী, তাদের রাজারা যুদ্ধের সময় এই গুহা দুটিতে আত্মগোপন করতেন। স্থানীয় লেপচাদের ভাষায় রাজাকে ‘গুলমা রাজা’ ও রানিকে ‘গুলমা রানি’ বলা হয়। সেই থেকেই এই পাহাড়ের নাম রাজা-রানি পাহাড় বলে মনে করা হয়।

অভিযানের পর অনিন্দ্য সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘গুহা দুটি কার্সিয়াংয়ের কাছে।‌ তবে ২০০ ফুট উচু খাড়া পাহাড়ের দেওয়ালে ঢাকা পড়েছে। তাই বাইরে থেকে দেখে বোঝা যাবে না ঠিক কোথায় গুহা দুটি। রক ক্লাইম্বিং ছাড়া সেখানে পৌঁছানোও অসম্ভব। তবে ছয় বাঙালির দুঃসাহস অবশেষে সেটাই সফল করে দেখাল।’

এই দুর্গম আঞ্চলের খাড়া পাহাড় বেয়ে, গভীর অরণ্য ভেদ করেই ছয় বাঙালির দল পৌঁছেছে রূপকথার গুহায়। অনিন্দ্যর কথায়, ‘মিথ কখনও এমনি এমনি তৈরি হয় না। রোলা বার্থ যেমন বলেছিলেন, মিথের সঙ্গে মানুষের ইতিহাসের যোগ থাকেই। মিথ তৈরির পিছনেও কোনও না কোনও উদ্দেশ্য থাকে। মিথকে বদলানো যায়, তাতে মুছে ফেলা যায়। তার পরেও যেখানে মিথের জন্ম, সেখানে কোনও না কোনও সূত্রে থেকেই যায়। এক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছে। পুরনো গল্পের মধ্যেই ছিল এই গুহার সূত্র। এত দিনে তার সন্ধান পাওয়া গেল। ’

এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup