জামিন খারিজ, মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ও ছেলে শৌভিককে জেলে পাঠাল আদালত

একই যাত্রায় হল না পৃথক ফল। নিয়োগ দুর্নীতিতে মানিকের পর জেলে গেলেন তার স্ত্রী ও পুত্র। বুধবার তাদের জামিনের আবেদন খারিজ করে এই নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ফলে আপাতত ৬ মার্চ পর্যন্ত তাদের থাকতে হবে জেলে।

এদিন আদালতে ইডি জানায়, মানিকের স্ত্রী শতরূপার সঙ্গে এক মৃত ব্যক্তির যৌথ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টে নিয়োগ দুর্নীতির লক্ষ লক্ষ টাকা পাচার হয়েছে। মানিকের ছেলে শৌভিক ২০১৭ সালে ২ বার লন্ডন যান। প্রথমে লন্ডন যাত্রা কথা গোপন করেন তিনি। পরে পাসপোর্ট দেখিয়ে তাঁকে বিদেশযাত্রার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি গোয়েন্দাদের বলেন, পড়াশুনো করতে লন্ডনে গিয়েছিলেন। যদিও ইডি অভিবাসন দফতর সূত্রে জানতে পারে, বিদেশযাত্রার সময় শৌভিক অভিবাসন দফতরকে জানিয়েছিলেন লন্ডনে বসবাস করতে যাচ্ছেন তিনি। ইডির প্রশ্ন, কেন লন্ডন যাত্রার কথা ও কারণ গোপন করলেন শৌভিক।

এদিন আদালতে বিচারকের ব্যাপক ভর্ৎসনার মুখে পড়েন শৌভিক ও শতরূপা। এজলাসে শুনানি চলাকালীন নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন ২ জনে। তখন বিচারক বলেন, অনেক কথা বলেছেন। এর পর কথা বললে পুলিশ ডেকে জেলে ঢুকিয়ে দেব।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত ৭ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন মানিক ভট্টাচার্যের স্ত্রী শতরূপা ও ছেলে শৌভিক। ইডির চার্জশিটে নাম রয়েছে এই ২ জনেরই। সঙ্গে শৌভিকের ২টি সংস্থাও দুর্নীতিতে যুক্ত বলে চার্জশিটে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।

ইডির আইনজীবী বলেন, অভিযুক্তরা নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারা সব জানতেন। এদের জন্য হাজার হাজার যোগ্য যুবক যুবতীর সঙ্গে বছরের পর বছর বঞ্চনা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গ্রাম গ্রামান্তরে যে সব শিশুরা মাইলের পর মাইল হেঁটে স্কুলে পৌঁছয় তাদের সঙ্গেও প্রতারণা করেছেন অভিযুক্তরা। স্কুলে ভুয়ো অযোগ্য শিক্ষক পাঠিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। এমন গুরুতর অভিযোগে হেফাজতে রেখেই বিচারপ্রক্রিয়া চলা উচিত। সন্ধ্যায় রায় বেরোলে জানা যায় ইডির সওয়ালেই শিলমোহর দিলেন বিচারক।