Fake Call Centre: ভুয়ো কলসেন্টারের আড়ালে প্রতারণার ফাঁদ, সল্টলেক থেকে গ্রেফতার ১১ জন‌

ঝাঁ চকচকে অফিস। নামের চোটে গগন ফাটে। গোটা অফিসের আয়তন ১২০০ স্কোয়ার ফুট। আর সল্টলেক সেক্টর ফাইভে অবস্থিত সেই অফিস। এখান থেকেই চলছিল ভুয়ো কল সেন্টার। আর মানুষজনের পকেট কাটা হচ্ছিল সুকৌশলেই। কখনও অ্যামাজন, কখনও মাইক্রোসফটের মতো নামি বহুজাতিক সংস্থার নাম করে ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। আর ক্রেতা সেই ভুয়ো প্রতিশ্রুতিতে পা দিলেই পকেট সাফাই। এভাবেই বিদেশিদের থেকে অর্থও তুলছিল এই দল। কলসেন্টারের আড়ালে এভাবে প্রতারণা চক্র চলছিল বলে সেখানে অভিযান চালিয়ে মালিক–সহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছেন বিধাননগর সাইবার ক্রাইম পুলিশ।

ঠিক কী তথ্য পেয়েছে পুলিশ?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, এই কলসেন্টারের একটা কেতাদুরস্ত নাম দিয়েছিল তারা। উই কেয়ার সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড নামে কলসেন্টার খুলে চলছিল প্রতারণা। সল্টলেক সেক্টর ফাইভের ডিএন–২ ভবনে ছিল উই কেয়ারের অফিস। ভুয়ো কলসেন্টারের ডিরেক্টর সুমিত মাজি এবং হাফিজুর রহমান সর্দার নিয়োগ করেছিল ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের যুবক–যুবতীদের। এখান থেকেই নানা ভুয়ো ফোন যেত অ্যামাজন–মাইক্রোসফটের নাম করে। এরা ক্রেতাদের ব্যক্তিগত কম্পিউটারে সফটওয়্যারের মাধ্যমে ঢুকে পড়তেন। তার পর তাঁদের বাধ্য করতেন টাকা দিতে। এভাবেই চলছিল গোটা প্রতারণা চক্র।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ এই প্রতারণার কাজ শুরু হয়েছিল ২০২০ সাল থেকে। আমেরিকা, স্পেন–সহ বিদেশের নানা দেশে ফোন যেত। তারপর পাতা ফাঁদে পা দিতেই সর্বসান্ত হতে হতো। বহু বিদেশি নাগরিকরাই ছিলেন এই ভুয়ো কলসেন্টারের কর্মীদের শিকার। কয়েকদিন আগে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই কলসেন্টারে হানা দেয় পুলিশ। কিন্তু পুলিশকে কলসেন্টার চালানোর কোনও বৈধ নথি দেখাতে পারেনি সুমিত ও হাফিজুর। তখন তাদের গ্রেফতার করা হয়। এই অফিস থেকে ৩৫টি কম্পিউটার, ১৪টি স্মার্টফোন, পাঁচটি হার্ড ডিস্ক–সহ একাধিক জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

আর কারা জড়িত ছিল?‌ এই ভুয়ো কলসেন্টারের মাথা ছিল সুমিত মাজি এবং হাফিজুর রহমান সর্দার। বড় অঙ্কের টাকার লোভ দেখিয়ে নিয়োগ করা হতো যুবক–যুবতীদের। এদিন গ্রেফতার করা হয়েছে ফারুক মোল্লা, আজাদ আলি, হাফিজুর রহমান সর্দার, জ্যোতির্ময় হালদার, অভিষেক শাহ, অবিনাশ প্রসাদ, কমলেশ ঝা, অনন্ত রায়, দেবজ্যোতি রায়, দীপক পান্ডে, সুমিত কুমার মাজি। আজ, বুধবার এদের আদালতে তোলা হয়েছে।