Kuntal Ghosh-Partha Chatterjee: বিকাশ ভবনে কেন যেতেন কুন্তল ঘোষ?‌ বিস্ফোরক তথ্য সামনে আনল ইডি

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেতা কুন্তল ঘোষের। অর্থ থেকে নিয়োগ—গোটা প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিলেন কুন্তল বলে অভিযোগ। চাকরির পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণদের জন্যও যে ‘ইন্টারভিউ’ নেওয়া হতো বিকাশ ভবনে খোদ শিক্ষা দফতরের অফিসে বসে সেটা নিতেন যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। তাঁর সঙ্গে হাজির থাকতেন সরকারি কর্তারাও। ইন্টারভিউয়ের নামে কার্যত হতো চাকরি বিক্রির ‘ডিল’। সেই প্রক্রিয়া শেষে এসএসসি অফিস থেকে নিয়োগপত্র হাতে পেতেন অনুত্তীর্ণরা। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি ইডি অফিসারদের। এই ইন্টারভিউতে বসা অফিসারদের তালিকা তৈরি করে ফেলেছে ইডি। শীঘ্রই তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হবে বলে সূত্রের খবর।

আর কী তথ্য হাতে পেয়েছে ইডি?‌ ইডি’‌র তদন্তকারীরা তথ্য পেয়েছেন, এক নেতার মাধ্যমে পার্থ–কুন্তল পরিচয় ঘটে। সেখান থেকেই কুন্তল চাকরি বিক্রির সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য হয়ে ওঠেন। নামের তালিকা পাঠাতেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীকে। কুন্তলের তালিকার প্রার্থীদের অধিকাংশই টেট, নবম–দশম এবং একাদশ–দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক পদে চাকরি পেয়েছেন। মেধা তালিকায় অনুত্তীর্ণরা স্থান পেলেন কীভাবে? সেটা জানতেই লাগাতার তাঁদের জেরা করেন ইডি অফিসাররা। এমনকী এজেন্ট হিসেবে কাজ করা ব্যক্তিদের বয়ানও রেকর্ড করা হয়। সেখান থেকেই ‘ভুয়ো ইন্টারভিউ’ সংক্রান্ত তথ্য পান ইডি অফিসাররা।

ঠিক কী জানতে পেরেছে ইডি? ইডির দাবি, পার্থবাবুর কাছে কুন্তল এবং অন্যরা যে তালিকা পাঠাতেন সেই প্রার্থীদের ওএমআর শিটে কারচুপি তো ছিলই। লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেছেন দেখানোর পর স্পেশাল ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা ছিল তাঁদের জন্য। সেটি নিতেন কুন্তল ঘোষ। কাদের কবে ইন্টারভিউ হবে সেটা এসএসসি অফিসে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হতো। সেখানে হাজির থাকতেন উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং বিকাশ ভবনে কর্মরত মন্ত্রীঘনিষ্ঠ অফিসাররা। সব চূড়ান্ত হওয়ার পর অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের মোবাইলে যেত ইন্টারভিউয়ের এসএমএস। কী কী নথি আনতে হবে তারও উল্লেখ থাকত তাতে।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ নির্ধারিত দিনে বিকাশ ভবনে শিক্ষা দফতরের সরকারি অফিসারদের সঙ্গেই হাজির হতেন কুন্তল ঘোষ। সেখানে সমস্ত প্রার্থীর ডাক পড়ত ‘ভুয়ো ইন্টারভিউতে’। আর এখানেই টাকাপয়সা সংক্রান্ত ‘ডিল’ চূড়ান্ত করা হতো। তখনই জানিয়ে দেওয়া হতো, চাকরি এবং পোস্টিংয়ের তথ্য। তারপর প্রত্যেককে এসএসসি অফিসে ডেকে ওই যুবনেতা নিয়োগপত্র তুলে দিতেন। কোনও প্রার্থীর সার্টিফিকেটে গোলমাল থাকলে টাকার বিনিময়ে জাল শংসাপত্রও তৈরি করে দিতেন কুন্তল ঘোষ। এমনকী পছন্দের পোস্টিং দিয়েও তিনি বড় অঙ্কের টাকা কামিয়েছেন এবং ভাগ দিয়েছেন পার্থবাবুকে বলে তদন্তকারীদের দাবি।