আ.লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলি ছুড়লো পুলিশ

টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রায় ৩১ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রবিবার উপজেলা আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে ঘাটাইল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তালুকদার মোহাম্মদ শাহজাহান। পরে তারা উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও কলেজমোড় চত্বরে টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করেন।

তাদের দাবি জামায়াত-বিএনপির সমন্বয়ে অসাংগঠনিকভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ঘোষিত ৭১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির ২৯ জনই জামায়াত বিএনপি ঘরনার ও অনুপ্রবেশকারী। তারা বর্তমান কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবুর বিরুদ্ধে ইউপি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্য, কমিটির পদ বাণিজ্যের অভিযোগ করেন।

পদবঞ্চিতদের ওই কর্মসূচির প্রতিবাদে ঘোষিত নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা বিকাল ৩টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করেন। অপরদিকে, পদবঞ্চিত অংশের নেতাকর্মীরা কলেজমোড় চত্বরে পাল্টা সমাবেশের আয়োজন করেন। দুপক্ষের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের দুইপাশে অবস্থান নেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে স্থানীয় প্রশাসন অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে। দুপক্ষ সড়কে অবস্থানের কারণে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দুপক্ষের দাবি।

নবগঠিত কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু দাবি করেন, দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার বিকালে জামায়াত-বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে দলীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তি সমাবেশের আয়োজন করা হয়। শান্তি মিছিল বাসস্ট্যান্ড চত্বরে গেলে সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানার অনুসারীরা নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে কমপক্ষে পাঁচ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন।

পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের পক্ষে আনেহলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তালুকদার মোহাম্মদ শাহজাহান দাবি করেন, বর্তমান কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম লেবু তৃণমূলের নিবেদিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে পদ বাণিজ্যের মাধ্যমে জামায়াত-বিএনপির লোক নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এই কমিটি মানে না। যে পর্যন্ত এই কমিটি বাতিল না করা হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন ও কর্মসূচি চলমান থাকবে।

ঘাটাইল থানার ওসি আজহারুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে পুলিশ ছয় রাউন্ড টিয়ারশেল ও শর্টগানের ৩১ রাউন্ড ফাঁকাগুলি ছোড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।