জন্মের ১৭ বছর পর প্রথমবার বাবার সঙ্গে আদালতে দেখা সন্তানের

ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর ১৮ বছর ধরে পলাতক ছিল অভিযুক্ত আরিফ হোসেন সিকদার। এরই মধ্যে ধর্ষণের শিকার নারী মা হয়েছেন। তার সন্তানের বয়স এখন ১৭ বছর। হঠাৎ করে বাবাকে গ্রেফতারের খবর পেয়ে আদালতে দেখতে এলো সেই সন্তান।

জন্মের পর বাবার সঙ্গে প্রথম দেখা হলেও কথা বলেনি ছেলেটি। তবে বাবাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় খারাপ লেগেছে বলে জানিয়েছে এই স্কুলছাত্র। বুধবার দুপুরে বাবাকে দেখতে বরিশাল আদালতে এসেছিল সে।

আদালত সূত্র জানায়, ধর্ষণের মামলার পর থেকে পলাতক আরিফ হোসেন সিকদারকে (৫০) ১৮ বছর পর সাভার থেকে গ্রেফতার করে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। আদালতের বিচারক আরিফকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আরিফ মেহেন্দিগঞ্জ পৌর এলাকার অম্বিকাপুর এলাকার কালাম সিকদারের ছেলে। পরিচয় গোপন করে এতদিন সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে ছিল আরিফ। সবশেষ সাভারে নলকূপ মিস্ত্রির কাজ করতো।

পুলিশ জানায়, বিয়ের কথা বলে মামাতো শ্যালিকাকে ধর্ষণ করেছিল আরিফ। এতে ওই নারী অন্তঃসত্ত্বা হন। এরপর বিয়ের কথা বললে টালবাহানা শুরু করে। এ অবস্থায় ২০০৫ সালে আরিফকে আসামি করে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ওই নারী। মামলার পর থেকেই পলাতক ছিল আরিফ। এরই মধ্যে ২০০৬ সালে ওই নারী ছেলেসন্তানের মা হন।

গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া মেহেন্দিগঞ্জ থানার এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাভারের নবীনগর জিলানী বাজার এলাকা থেকে আরিফকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে নাম পরিবর্তন করে নলকূপের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতো আরিফ। গত ১৮ বছরে একবারের জন্যও মেহেন্দিগঞ্জে আসেনি।

বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী হুমায়ুন কবির মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে বলেন, মামলার পর থেকে আরিফের কোনও হদিস ছিল না। ২০০৯ সালের ২৮ অক্টোবর আরিফের অনুপস্থিতিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আরিফকে বুধবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠান।

বেঞ্চ সহকারী আরও বলেন, বাবাকে গ্রেফতারের খবরে আদালতে দেখতে এসেছিল সেই সন্তান। বাবাকে কাছ থেকে দেখলেও কোনও কথা বলেনি ছেলে। তবে এতদিন পর বাবার পরিচয় জেনে খুশি হয়েছে। বর্তমানে নানির কাছে থেকে পড়াশোনা করছে সে। তবে তার মায়ের অন্যত্র বিয়ে হয়েছে।