বিন্দু বিন্দুতে ১৭৭ জন মনীষীর ছবি, লিমকা বুক অফ রেকর্ডে হাওড়ার শিল্পী বিমান

বিন্দু থেকে সিন্ধু। এই কথা সবারই জানা। কিন্তু শুধুমাত্র বিন্দু দিয়েই আস্ত মানুষের অবয়বও যে আঁকা যেতে পারে, তা কখনও কল্পনা করেছিলেন? হ্যাঁ, সেই অসাধ্য সাধনই করলেন হাওড়ার খ্যাতনামা শিল্পী বিমান দাস। লিমকা বুক অফ রেকর্ডস ২০২৩-এ স্থান পেয়েছেন পোর্ট্রেট শিল্পী।

গত ২২ বছর ধরে বিন্দুর মাধ্যমে ছবি আঁকছেন বিমান দাস। সাধারণত অভ্যাসের মাধ্যমে অনেকেই প্রতিকৃতি আঁকতে পারেন। কিন্তু শুধুমাত্র একটি, একটি করে বিন্দু দিয়ে এমন আঁকা অনেক বেশি কঠিন। আর সেই কঠিন কাজের মধ্যেই নিজের ‘প্যাশন’ খুঁজে পেয়েছেন হাওড়ার এই শিল্পী। আরও পড়ুন: পা দিয়েই নিখুঁত তীর ছুঁড়তে দক্ষ অস্ট্রেলিয়ান তরুণী, রেকর্ড ভেঙে নাম গিনেস বুকে

দেশ-বিদেশের নানা মনীষিদের প্রতিকৃতি এঁকে বারবার সকলের নজর কেড়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৭৭-এরও বেশি নামজাদা ব্যক্তিত্বের প্রতিকৃতি এঁকেছেন বিমান দাস। আর প্রতিটি ছবিই মনমুগ্ধকর। এক নজর দেখলে সাদা-কালো ফটোগ্রাফ বলে ভ্রম হতেই পারে!

বিমান জানিয়েছেন, তাঁর ছবিগুলি আঁকতে Crowquill ও জেল পেন ব্যবহার করেছেন। ছবির পরিমাপ ৬x৮ ইঞ্চি।

কিন্তু বিন্দু দিয়ে ছবি কীভাবে?

সাধারণ ছবি আঁকা হয় রেখার মাধ্যমে। পেনসিল, পেন বা অন্য মিডিয়ামের আঁচড় টেনে কাগজের উপর আঁকা হয়। হাতের চাপ, পাশাপাশি দু’টি রেখার ঘনত্ব ব্যবহার করা হয়। অনেকে আবার পেনসিল বা কাঠকয়লা দিয়ে ছায়ার স্থানগুলি শেডিং করেন। আঙুলে ঘষে সেই স্থান আরও ঘন ও মসৃণ করে তোলেন। ছায়ার মাঝে আলো ফোটাতে ইরেজারের সাহায্য ঘন স্থানগুলির মাঝে রেখা, বিন্দু টানা যায়। কখনও কখনও সাদা পেনসিল বা পেনও ব্যবহার করা হয়।

কিন্তু সেই পদ্ধতি থেকে একেবারে আলাদাভাবে আঁকেন বিমান দাস। তাঁর আঁকায় কোনও রেখার ব্যাপার নেই। সম্পূর্ণটাই বিন্দুর মাধ্যমে। কোথাও কাছাকাছি অনেক বিন্দু থাকলে সেই স্থান আরও কালচে দেখাবে। আবার যেখানে একটু ফাঁকা রাখা হবে, সেখানে আলো মনে হবে। এভাবেই বিন্দু বিন্দুতে সিন্ধু গড়েছেন তিনি। বিষয়টি যে অত্যন্ত ধৈর্য্যের পরীক্ষা, তা বলাই বাহুল্য।

এই ধরনের আঁকার পদ্ধতিকে চারুকলার পড়ুয়ারা ‘স্টিপলিং'(Stippling) বলে থাকেন।

লিমকা বুক অফ রেকর্ড কর্তৃপক্ষ তাঁর এই অসামান্য প্রতিভার স্বীকৃতি দিয়েছেন। আর সেই কারণেই তাঁরা জানিয়েছেন, ভারতে মধ্যে এমন রেকর্ড এই প্রথম। সেই সঙ্গে আরও বলা হয়েছে যে, আগামিদিনে এই একই সেগমেন্টে আর অন্য কেউ আবেদন করতে পারবেন না। এতটাই বিরল ও অভিনব এটি। আরও পড়ুন: লাফ দিয়েই গিনেস বুকের পাতায়! ভিডিয়ো দেখে তাজ্জব সকলে

‘স্টিপলিং’ পদ্ধতিতে অনেকেই ছবি আঁকেন। কিন্তু এক্ষেত্রে শুধু আঁকাই নয়, এত বছর ধরে এই কঠিন মাধ্যমে এত পোর্ট্রেট করাই এক অভাবনীয় প্রতিভার নিদর্শন। 

এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup