সাংবাদিকরা হাসপাতালে ঢুকলে ভাইরাস ছড়ায়, দলবল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঢুকলে ছড়ায় না?

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের মুহুর্মুহু অভিযোগ করেন তিনি। আর এবার নিজেই সরকারি হাসপাতালে সাংবাদিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর যুক্তি, সাংবাদিকদের মাধ্যমে হাসপাতালে ভাইরাস ঢুকে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে পাশে বসিয়ে মমতা বলেন, ‘হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে যাওয়াটা ঠিক নয়। আপনারা যারা সংবাদমাধ্যমে কাজ করেন, এমনকী আমি গতকাল একটা স্কুলে গিয়েছিলাম। আমি নিজে থেকে ভিতরে ঢুকিনি। টিচারদের থেকে অনুমতি নিলাম, আমি কি একটু ভিতরে যেতে পারি? তবে কিন্তু গেলাম। অনুমতি ছাড়া আমি কিন্তু কোনও হাসপাতালে যাই না’।

মমতার অভিযোগ, ‘আপনারা মাইক নিয়ে চলে যাচ্ছেন, এতেও তো ভাইরাস ঢুকছে। আমি বলে দিয়েছি, হাসপাতালের যে কোনও একটা জায়গায় প্ল্যাটফর্ম করে দেওয়া হবে। নিউজ জানার আপনার অধিকার আছে। কিন্তু দয়া করে ভিতরে ঢুকবেন না। এতে অনেক ভাইরাস ঢুকে যায়’।

বলে রাখি, মুখ্যমন্ত্রী হয়েই নবান্নে সাংবাদিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার মাসখানেকের মধ্যে একদিন নবান্ন যাওয়ার পথে গাড়ি ঘুরিয়ে বাঙুর ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেসে চলে গিয়েছিলেন মমতা। সদলবদলে হাসপাতালে ঢুকে পড়েন তিনি। তখন হাসপাতালের অধিকর্তা তথা কলকাতার অন্যতম বরিষ্ঠ নিউরোসার্জেন শ্যামাপদ গড়াই মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন, এভাবে দলবল নিয়ে হাসপাতালে ঢুকবেন না। যার পর শ্যামাপদ বাবুর বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। প্রশ্ন উঠছে, শুধু সাংবাদিকরা হাসপাতালে ঢুকলেই কি সংক্রমণ ছড়ায়? মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা হাসপাতালে ঢুকলে ভাইরাস ছড়ায় না? না কি নিজের অপদার্থতা ঢাকতে সাংবাদিকদের ঘাড়ে ভাইরাস ছড়ানোর দায় চাপাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী?