Neuralink: মানুষের মাথায় কম্পিউটার চিপ বসানোর অনুমতি পেল না মাস্কের কোম্পানি

শীঘ্রই মানুষের মাথায় চিপ বসানোর কাজ শুরু হবে। ২০১৯ সাল থেকেই এমনটা বলে আসছেন বিশ্বের ধনীতম মানুষ ইলন মাস্ক। তাঁর সংস্থা নিউরালিঙ্কের উদ্দেশ্য হল, মানুষের মাথায় কয়েনের মতো ক্ষুদ্র একটি চিপ বসানো। সেই চিপ বা ক্ষুদ্র কম্পিউটিং ডিভাইস দিয়ে অনেক সমস্যার সুরাহা করা যাবে। পক্ষাঘাত এবং অন্ধত্বের মতো গুরুতর অবস্থাও সারিয়ে তোলা যাবে। অর্থাত্ কৃত্রিম সংযোগকারী হিসাবে কাজ করবে এই চিপ। মানুষের মাথায় নির্দিষ্ট স্থানে অপারেশন করাতে হবে।

তবে এই শেষ বাক্যটিতেই যত সমস্যা। কারণ ইতিমধ্যে বাঁদরের মাথায় নিউরালিঙ্কের চিপ বসিয়ে সাফল্য এসেছে। ইউটিউবে তার হাজারো ভিডিয়োও রয়েছে। কিন্তু এরপর তো মানুষের মাথায় বসাতে হবে। কিন্তু মস্তিষ্কে চিপ বসানোর জন্য তো জলজ্যান্ত কোনও মানুষকে স্বেচ্ছাসেবক হতে হবে! এত বড় ঝুঁকি কে নেবেন? আর বিশ্বাস বা টাকার লোভে সেই ঝুঁকি কেউ নিলেও, তা কি সরকারিভাবে ন্যায়সঙ্গত হবে?

২০১৬ সালে নিউরালিঙ্কের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ২০২২ সাল পর্যন্ত এই সংস্থার জন্য ইউএস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের(FDA) কাছে এই সংক্রান্ত কোনও আবেদনই করা হয়নি। এদিকে শেষ পর্যন্ত আবেদন করেও লাভ হল না। মানুষের মাথায় চিপ বসিয়ে ট্রায়াল করায় ‘না’ করে দিয়েছে মার্কিন মুলুক।

কিন্তু FDA কেন ভয় পাচ্ছে? আসলে তাদের চিন্তা, এই ডিভাইসে লিথিয়াম ব্যাটারি রয়েছে। তাছাড়া ইমপ্লান্টের ক্ষুদ্র তারগুলি একটু এদিক-ওদিক হলেই মস্তিষ্কের অন্যান্য প্রান্তে স্থানান্তরিত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কের টিস্যুর ক্ষতি না করে ডিভাইসটি কীভাবে বের করা যাবে, তাই নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ রয়েছে।

গত বছর ডিসেম্বরে মাস্ক জানান, মাত্র ৬ মাসের মধ্যে মানব মস্তিষ্কে কম্পিউটার ‘ইমপ্ল্যান্ট’ করার পরিকল্পনা তাঁর সংস্থার।

ফাইল ছবি: রয়টার্স

(REUTERS)

মানুষের মাথার খুলির একটি অংশ খোদাই করে এটি স্থাপন করা হবে এবং তার মাধ্যমে এটি মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। শুধু মস্তিষ্কই নয়। নিউরালিংক শরীরের অন্যান্য অংশেও ইমপ্লান্ট করার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে। ইভেন্ট চলাকালীন, ইলন মাস্ক নিজেই এই মস্তিষ্ক-কম্পিউটার ইন্টারফেস ছাড়াও দু’টি প্রোডাক্টের উপর কাজ হচ্ছে বলে জানান। বর্তমানে সংস্থা এমন একটি ইমপ্লান্ট তৈরি করছে, যা কিনা মেরুদন্ডে বসানো হতে পারে। এটি প্যারালাইসিসে ভুগছেন এমন ব্যক্তির স্নায়ু গতিবিধি পুনরুদ্ধার করতে পারবে বলে দাবি করেছেন ইলন মাস্ক। অন্যদিকে একটি অকুলার ইমপ্লান্টের বিষয়ে কাজ হচ্ছে বলে জানান তিনি। এর মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিশক্তি উন্নত বা পুনরুদ্ধার করা যাবে বলে দাবি ইলন মাস্কের।

ব্রেন-কম্পিউটার ইন্টারফেসকে সংক্ষেপে BCI বলা হচ্ছে। এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের শক্তি হারিয়েছেন এমন ব্যক্তিদের সুবিধা হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ অ্যামায়োট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস (ALS) বা স্ট্রোকের পরবর্তী প্রভাবে ভুগছেন, এমন ব্যক্তিদের চিন্তাভাবনাকে লেখা বা শব্দের মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য এই কম্পিউটার ব্যবহার করা হবে।

মানুষের উপর ট্রায়ালের আবেদনের ক্ষেত্রে কিন্তু নিউরালিঙ্ক-ই যে প্রথম, তা একেবারেই নয়। এর আগে Synchron Inc. নামের এক সংস্থা অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রোগীদের মস্তিষ্কে এমন ছোট স্টেন্ট-সদৃশ যন্ত্র ইমপ্লান্ট করেছে। এর মাধ্যমে রোগীরা কম্পিউটারের দ্বারা ভাবনা প্রকাশ করতে বা কথা বলতে সক্ষম হচ্ছেন। Onward Inc. নামের এক সংস্থা মেরুদণ্ডের আঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চলনক্ষমতা পুনরুদ্ধার করার বিষয়ে যুগান্তকারী কাজ করছে।

Neuralink-এর প্রস্তাবিত মস্তিষ্ক অস্ত্রোপচারের ধরন Synchron বা অন্যান্য প্রতিযোগীদের তুলনায় অনেকটাই বড়সড়। নিউরালিঙ্কের এই ডিভাইস বসাতে রোগীর মাথার খুলির একটি অংশ অপসারণ করতে হবে। এরপর এই ডিভাইসের তারগুলি মস্তিষ্কের টিস্যুতে সূক্ষভাবে বসাতে হবে। FDA-র নিউরালিঙ্কের প্রস্তাব বাতিল করার পিছনে এটিও একটি বড় কারণ হতে পারে। আরও পড়ুন: জোর ধাক্কা খেলেন ইলন মাস্ক, সময়ের ২ মিনিট আগে বাতিল স্পেস এক্স-এর ‘ক্রু ৬’ লঞ্চ

এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup