Women’s Day 2023: ‘আমরাও পারি,’ প্রযুক্তির যুগে পুরুষদের সমান সুযোগ মহিলাদেরও

প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে পেশাদার ক্ষেত্রে ক্রমেই কমছে লিঙ্গ ব্যবধান। একসময়ে মহিলারা চাইলেও কোনও পছন্দের কাজ খুঁজে পেতেন না। তাছাড়া সন্তান, সংসারের দায়িত্ব সামলে মন মতো কাজ, সঠিক পারিশ্রমিক পাওয়াটাই স্বপ্নের ব্যাপার ছিল। কিন্তু প্রযুক্তির দৌলতে ছবিটা সামান্য হলেও বদলাচ্ছে। ডিজিটাল রূপান্তরের জোয়ারে সামিল হয়েছেন মহিলারা। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকেই। ফলে ডিজিটাল সুযোগকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে যাচ্ছেন বহু মহিলাই।

লিঙ্গ সমতা ও ডিজিটালাইজেশন

সমতার অর্থ কখনই এই নয় যে, নারীরা পুরুষের থেকেও এগিয়ে থাকবেন। এর অর্থ একটাই। একজন পুরুষ যেমন কাজের সুযোগ পান, একজন মহিলাও যেন তার নাগালে থাকেন। তবে আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে নানা কারণে মহিলাদের পক্ষে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করাটাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সেই সুযোগ ও মহিলাদের মধ্যেই সেতুর কাজ করছে ইন্টারনেটভিত্তিক নব্যযুগের সংস্থাগুলি। আরও পড়ুন: নারী দিবসে টুইট মুখ্যমন্ত্রী–রাষ্ট্রপতির, মোদীকে কতটা পিছনে ফেললেন মমতা?

মহিলারাও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেদের সঠিক প্রশিক্ষণের গুরুত্ব বুঝতে শুরু করেছেন। ফলে এখন একজন মফস্বলের, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলাও নতুন করে কিছু করার চেষ্টা করছেন। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জ্ঞান সংগ্রহও সময়ের সঙ্গে অনেকটাই সহজ হয়ে গিয়েছে।

উদাহরণস্বরূপ, আরবান কোম্পানির মতো সংস্থায় স্বল্প প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে অনেক মহিলা স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন। সংস্থার এমনই এক সেলুন পেশাদার প্রতিমা। এক সময়ে বিউটি পার্লারের কর্মী হিসেবে স্বল্প বেতনে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু লাভের গুড় পার্লার সংস্থার পকেটেই যেত। ২০ বছর ধরে পরিশ্রমের পরেও তাঁর বেতন ছিল যথেষ্ট কম।

একে মূল্যবৃদ্ধির বাজার। তার উপর ঋণের বোঝা, দুই সন্তান, সংসার খরচ। এমন সময়েই আরবান কোম্পানিতে যোগ দেন তিনি। বর্তমানে আগের তুলনায় অনেকটাই বেশি আয় করছেন। সন্তানের পড়াশোনা, সংসার খরচ সবদিক সামলে নতুন করে ভাবছেন তিনি।

প্রতিমা না হয় প্রশিক্ষিত, অভিজ্ঞ কর্মী। কিন্তু এমনও অনেকে আছেন, যাঁরা বর্তমানে পড়ুয়া। কলেজে পড়াশোনা করছেন। বাড়িতে স্কুটার আছে। সেটি কাজে লাগিয়েই ডেলিভারির ‘গিগ’ কাজে নামছেন তাঁরা। কলকাতা শহরের বুকেই এখন অনেক মহিলা জোমাটো, সুইগির মতো ফুড অ্যাগ্রিগেটর সংস্থায় কাজ করছেন। অনলাইনে যাঁরা নিয়মিত খাবার অর্ডার করেন, তাঁদের প্রত্যেকেই কখনও না কখনও মহিলা ডেলিভারি পার্সনের সঙ্গে সাক্ষাত্ হয়েছে। প্রথম প্রথম এই ধরনের মহিলা ডেলিভারি পার্সনদের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরালও হত। অনেকেই রাপিডোর মতো বাইক ট্যাক্সিতে মহিলা চালক দেখে অবাক হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তা শেয়ার করেছেন। কিন্তু ধীরে ধীরে সেটাই যেন স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। মহিলাদের পক্ষেও যে এই কাজগুলি সম্মানের সঙ্গে করা সম্ভব, সেটা বুঝতে শিখেছেন সকলে। তাছাড়া যুগের সঙ্গে সকলের মানসিকতাও বদলেছে। কোনও কাজই যে ছোট নয়, তা বুঝতে শিখেছেন অনেকে। এই ইতিবাচক মানসিকতাই টেক প্ল্যাটফর্মগুলিতে প্রবেশ করায় অনুঘটকের কাজ করছে।

প্রশিক্ষিতদেরও সুযোগ বাড়ছে

রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রের দুঁদে আধিকারিক। এটুকু ভাবলেই কোনও পুরুষের ছবিই মনে ভেসে ওঠে। তবে আধুনিক কর্মসংস্কৃতির যুগে সেই প্রচলিত ধ্যান-ধারণাই ভেঙে দিচ্ছেন মহিলারা। উদাহরণস্বরূপ, আমাজন ইন্ডিয়ার রিয়েল এস্টেট প্রোজেক্টস ও অপস ইঞ্জিনিয়ারিং টিমে দাপিয়ে কাজ করছেন সিনিয়র ম্যানেজার শতরূপা কিশোর। কনস্ট্রাকশন, হার্ডকোর ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজের ক্ষেত্রেও যে মহিলারা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারেন, সেই প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমাজনে কাজ করতে গিয়েই আমি বুঝেছি যে, ভালবাসা, মনযোগ ও সঠিক মানসিকতা থাকলে কোনও বাধাই অতিক্রম করা অসম্ভব নয়। এখানে অনেক ধরনের টিমের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাই। তাঁদের সঙ্গে জ্ঞানের আদানপ্রদান হয়।’ শতরূপার মতো মহিলারাই হয়তো আগামী প্রজন্মের মহিলাদের নতুন করে ভাবতে অনুপ্রাণিত করবে।

আরও পড়ুন: আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস, প্রিয় মানুষটিকে পাঠিয়ে দিন আজকের শুভেচ্ছাবার্তা

এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup