শুধু TMC-র ছেলে মেয়েদের চাকরি হবে একথা বলেছিলাম, স্বীকার করেও আজব যুক্তি ব্রাত্যর

শুধু তৃণমূলের ছেলে-মেয়েদেরই চাকরি হবে, দমদমে এক কর্মিসভায় একথা বলেছিলেন তিনি। প্রায় দেড় বছর পর ভাইরাল ভিডিয়োর সত্যতা স্বীকার করে বললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বুধবার এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষামন্ত্রীর আজব যুক্তি, ‘তাহলে দলীয় সভায় কি বলব, সিপিএমের ছেলের চাকরি হবে, বিজেপির ছেলের চাকরি হবে’?

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর দমদমে তৃণমূলের এক সভায় ব্রাত্য বসুর বক্তব্য ভাইরাল হয়। সেখানে মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘চাকরিটা তৃণমূলের ছেলে মেয়েরাই পাবে। একটা, সিম্পল, আর কিছু নয়, কী ভাবে পাবে, কেন পাবে, কোথায় পাবে, সেসব আমি বলব না। কিন্তু এটা হবে। এটা হয়েছে, এবং আগামী দিনেও হবে।’

এই নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে ব্রাত্য বসু বলেন, ‘২০২১ সালের পুজোর আগে পৌরসভা নির্বাচন করানোর পরিকল্পনা করছিল দল। তখন আমাকে এলাকায় সভা করার কথা বলা হয়েছিল। আমি দমদমে একটি কর্মিসভা করছিলাম। সেই কর্মিসভা ভাইরাল হল। কিন্তু আমি কি কোনও দফতরের কথা বলেছিলাম মন্ত্রী হিসাবে? আমি বলেছিলাম তৃণমূলের চাকরি হবে। কর্মিসভায় আমার ছেলে মেয়েদের তাহলে আমি কী বলব? আমি বলব, সিপিএম – বিজেপির ছেলে মেয়েদের চাকরি হবে?

তাঁর যুক্তি, জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমি চাকরির সুপারিশ করতেই পারি। সব চাকরি মেধার ভিত্তিতে হয় না কি? আমি তো চাকরি দিয়েছি, ভবিষ্যতেও দেব। কোন চাকরি? আমার কোটার যে চাকরি’।

ব্রাত্য বসুর চ্যালেঞ্জ, ‘আমার এলাকায় যারা আমার জন্য কাজ করেন তারা অনেকে সত্যিই চাকরির দিকে তাকিয়ে থাকে। আমি আমার চাকরি তৃণমূলের ছেলে মেয়েদেরই দিয়েছি। আর আমার কোটার ন্যায্য চাকরি তৃণমূলের ছেলে মেয়েদেরই দেব। আমি ১১ সাল থেকে ৬০ – ৭০ জনকে চাকরি দিয়েছি। তাদের তালিকা আমি আপনাদের দিয়ে দিচ্ছি। যদি কারও কাছ থেকে একটা সন্দেশ খেয়েছি দেখাতে পারেন রাজনীতি ছেড়ে দেব’।

ব্রাত্য বসুর মন্তব্যকে কটাক্ষ করে বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ বলেন, ‘ব্রাত্যবাবু রাজ্যের লোককে বোকা ভাবেন না কি? উনি এক দিকে স্বীকার করছেন, উনি ওই কথা বলেছেন। তার পর বলছেন, কোটার চাকরি দিয়েছি। কোটার চাকরি দিয়েছেন এটা বলার কী আছে? সেটা তো যুগ যুগান্তর ধরে চলে আসছে। মানুষ জানে আপনি সেকথা বলেননি। আর কোটার চাকরি দলীয় কর্মীদের মধ্যে ভাগ বাঁটোয়ারা করাই বা কোথাকার নৈতিকতা? আপনি তো ওখানকার সমস্ত মানুষের বিধায়ক। যদি কোনও সিপিএম বা বিজেপি সমর্থকের পরিবার অনাহারে থাকে আপনি তাকে চাকরি দেবেন না? তাহলে বিধায়ক হওয়ার যোগ্যতা আপনার নেই।’