সহকারী শিক্ষকদের মারধরে প্রধান শিক্ষক হাসপাতালে

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে সহকারী শিক্ষকদের মারধরে প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল (৫২) আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তার ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগম আহত হন। 

মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) দুপুরে উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের জুনদহ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নতুন চারতলা ভবন নির্মাণের জন্য গত বছরের নভেম্বরে স্কুলের পুরাতন টিনসেড ভবন ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু জমির সীমানা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হলে প্রতিবেশী জমির মালিকের অভিযোগে সেখানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন সম্ভব হয়নি। বর্তমানে টিনের ছাপড়া ঘর তৈরি করে রোদের মধ্যেই পাঠদান চলছে। সম্প্রতি পাশের জমি মালিকও স্কুলের টয়লেটে যাতায়াতের রাস্তাটি বাঁশের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। 

তারা আরও জানান, বিদ্যালয়ের এসব সমস্যা সমাধানে মঙ্গলবার সকালে সহকারী শিক্ষক মুক্তার, রিজেন, কাওছার মোখছার, নাঈমসহ অন্যান্যদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বাকবিতণ্ডা বাধে। এর এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক সোহেল ধাক্কা-মারধরের শিকার হন। খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে বাঁচাতে এলে ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়েরর স্ত্রী ফাতেমা আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

হাসপাতালে ভর্তি আহত প্রধান শিক্ষক সোহেল বলেন, ‘বিদ্যালয়ের নানা সমস্যার কথা সবার জানা। এসব নিয়ে ক্ষুব্ধ সহকারী শিক্ষকরা। বিদ্যালয় চলাকালে হঠাৎ করে সহকারী শিক্ষকরা একজোট হয়ে মারমুখী হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে তারা আমাকে মারধর করেন। ঘটনার সময় বাধা দিলে তারা ছেলেসহ ছোট ভাইয়ের স্ত্রীকে মারধর করেন।’

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষকরা। তাদের মধ্যে সহকারী শিক্ষক মুক্তার হোসেন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মতবিরোধ চলছিলে। এর জের ধরে প্রধান শিক্ষকের পরিবারের সদস্যরাই বিদ্যালয়ে এসে তাদের ওপর হামলা চালান। আর প্রধান শিক্ষক রেগে গিয়ে টেবিলে থাপড়ালে কাঁচ ভেঙে তার হাত কেটে যায়।’

পলাশবাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাতাব হোসেন জানান, খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করা হয়। এ সময় শিক্ষক ও স্থানীয়দের কাছে ঘটনার বিষয় জানা হয়। তবে শিক্ষকদের উভয়পক্ষ একে-অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’