এসি ঘরে ছাগলের ব্যবসা, আড়ালে চলছে মাদকের কারবার, বিধাননগরে পর্দাফাঁস করল STF

আপাতভাবে বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই। আর পাঁচটা ফ্ল্যাটের মতোই সল্টলেক সংলগ্ন চিংড়িহাটার ওই ফ্ল্যাট। আর সেই ফ্ল্যাটের আবাসিক নাকি ছাগলের কারবার করতেন। এমনটাই জানতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কিন্তু এসটিএফের অভিযানে একেবারে পর্দাফাঁস হয়ে গেল অবৈধ কারবারের। এসটিএফ সূত্রে খবর, আসলে সামনে তারা ছাগল বেচাকেনার কারবার করতেন। কিন্তু সেই ছাগলের কারবারের আড়ালে চলত মাদকের চোরাকারবার। তাদের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে এসটিএফ প্রায় সাড়ে ৩ কেজি হেরোইন বাজেয়াপ্ত করেছে। ওই ফ্ল্যাট থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকাও বাজেয়াপ্তও হয়েছে বলে খবর। 

তবে ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এভাবে ছাগলের কারবারের আড়ালে মাদকের চোরাকারবার কার্যত নজিরবিহীন। পুলিশ ও স্থানীয়দের চোখে ধুলো দিতেই এই ধরনের আড়াল খোঁজা হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এদিকে এর আগে ফলের ঝুড়ি, জুতো, সুটকেশ, খেলনা সহ নানা সামগ্রীর আড়ালে বিমানবন্দর দিয়ে মাদক পাচারের নজির রয়েছে। কিন্তু ছাগলের কারবারের আড়ালে মাদক কারবারের নজির সেভাবে পাওয়া যায় না। 

এসটিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃতদের নাম মোমিন খান ও মেহতাব। তিনি মোমিনের স্ত্রী বলেই মনে করা হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবি, মোমিন ও মেহতাব এলাকার লোকজনের সঙ্গে সেভাবে কথাবার্তা বলতেন না। নিজেদের নিয়েই থাকতেন। তাদের ছাগলের ব্যাবসা রয়েছে বলেই জানতেন স্থানীয়রা। কিন্তু তাদের ফ্ল্যাটেই যে অবৈধ কারবার চলত একথা শুনে কার্যত আকাশ থেকে পড়ছেন স্থানীয়রা। 

সূত্রের খরব, এর আগে পার্ক সার্কাসের একটি মাদকচক্রের সন্ধান পেয়েছিল পুলিশ। এরপর বেনিয়াপুকুর থানার পুলিশ একজনকে আটক করে। পরে তার মাদক কারবারের সন্ধান পায় পুলিশ। এরপর বিধাননগর দক্ষিণ থানার অন্তর্গত একটি বাড়ি থেকে এই মাদকের কারবার চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ জানতে পারে। এরপর সল্টলেকের সেক্টর চার এর একটি বাড়ির উপর পুলিশ নজর রাখতে শুরু করে। গত ৭২ ঘণ্টা ধরে এসটিএফ ওই বাড়ির উপর নজর রাখতে শুরু করে। এরপরই এসটিএফের গোয়েন্দারা বুঝতে পারেন ওই ফ্ল্যাটে সন্দেহজনক লোকজন যাতায়াত করছে। এরপর অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত নেয় এসটিএফ। ১৪জনের টিম ফ্ল্যাট ঘিরে ফেলে। তারপরই ভয়াবহ মাদক কারবারের পর্দাফাঁস হয়। 

তদন্তে নেমে এসটিএফ দেখে একটি বন্ধ ফ্ল্যাটের ঘরে এসি চলছে। সেখানে ছাগলে ভর্তি। আর আলমারির দেওয়ালের পেছনে সেলোটেপ দিয়ে আটকানো রয়েছে মাদকের পাউচ। এরপর সেই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে এসটিএফ প্রায় কোটি টাকার হেরোইন জাতীয় মাদকের খোঁজ পায়।