নিয়োগ দুর্নীতির প্রতিবাদে আগেই সরব হয়েছিল নাগরিক কমিটি, পদক্ষেপ করেনি সরকার

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার অয়ন শীলের দফতরে তল্লাশি চালিয়ে রাজ্যের প্রায় ৬০টি পুরসভায় নিয়োগে বেনিয়মের খোঁজ পেয়েছেন ইডির গোয়েন্দারা। সেই তালিকায় রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার পুরসভাও। স্থানীয় নাগরিক মঞ্চের দাবি, নিয়োগে যে দুর্নীতি হয়েছে তা ৫ বছর আগেই জেনেছিলেন তাঁরা। প্রতিকার চেয়ে পদক্ষেপও করেছিলেন। কিন্তু সরকারের তরফে সাড়া পাওয়া যায়নি।

২০১৬ সালে ডায়মন্ত হারবার পুরসভায় ২২টি পদে স্থায়ী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। সেই বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে ২০১৭ সালে সেখানে ১৭ জন স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়। স্থানীয় নাগরিক কমিটির দাবি, গোটা নিয়োগটাই হয়েছিল বেনিয়ম করে। সেকথা জানিয়ে লিফলেট ছাপায় নাগরিক কমিটি। দুর্নীতির তদন্ত চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও পুরপ্রধানকে চিঠি দেন তাঁরা।

নাগরিক কমিটির সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘১৭ জনের নিয়োগ ১০০ ভাগ বেআইনি। সাদা ওএমআর জমা দিয়েছেন তেমন লোকও চাকরি করছেন। ভালো করে লিখতে পারেন না। তেমন লোকও চাকরি করছেন। সেই সময় ক্যাজুয়াল কর্মী ছিলেন বাসুদেব হালদার, হরিণডাঙায় বাড়ি। তিনিও একজন প্রার্থী নিয়োগপ্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনিই পরিচালনা করেন। তিনি চাকরিও পান। আমরা জানতে পেরেছি, কোটি কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে’। তিনি বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক নথি চেয়ে পুরসভায় RTI করেছিলাম। তার কোনও নথি প্রকাশ করা হয়নি।

অভিযুক্ত কর্মী বাসুদেব হালদার বলেন, ‘আমি তো একটা ক্যাজুয়াল কর্মী ছিলাম। আমার সঙ্গে কী করে আধিকারিকদের যোগাযোগ হতে পারে? অনেকে পোস্টার দিয়েছে, মামলা করেছে। কিন্তু প্রমাণ করতে পারেনি। নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ, আমরা কোনও টাকা পয়সাও দিইনি’।

প্রাক্তন পুরপ্রধান মীরা হালদার বলেন, ‘দুর্নীতির মাধ্যমে ডায়মন্ড হারবার পুরসভায় কোনও নিয়োগ হয়নি। সেটা আমি জোর গলায় বলতে পারি। কেউ কোনও দিন চাপও সৃষ্টি করেনি’।

ডায়মন্ড হারবারের পুরপ্রধান প্রণব দাস বলেন, ‘আমার সময় নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি। তদন্তে হলে সরকারের নির্দেশ মেনে সমস্ত তথ্য জানাব।’