Ramadan Month Health Tips 2023: রমজান মাসে কীভাবে শরীর ভালো রাখবেন, রইল তথ্য

২৪ মার্চ অর্থাৎ শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে রোজার উপবাস। বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায় এক মাস নিয়মের সঙ্গে পালন করে থাকে। উপবাস শেষ হবে ঈদ-উল-ফিতরের মধ্য দিয়ে। এই উপবাস শরীরের ওপর নানা প্রভাব ফেলতে পারে। তাই মেনে চলতে হবে বেশ কিছু সতর্কতা।

কথায় আছে সাবধানের মার নেই। রমজান মাস শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলেই কঠোর নিয়মের সঙ্গে পালন করেন। শরীর নিয়ে চিন্তাও থাকে সকলের। একদিকে সঠিক পুষ্টির মাত্রা বজায় রাখা, সেই সঙ্গে কীভাবে শরীরের যত্ন নেওয়া যায় তা কিন্তু জানাও আবশ্যক। রোজার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়াম করতে চান তাহলে এই প্রতিবেদন আপনাকে অনেকটাই সাহায্য করবে।

কীভাবে রোজা রাখার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত শরীরচর্চা করাও যায় সেই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন শরিরচর্চা বিষয়ক প্রশিক্ষক বেলাল হাফিজ ও পুষ্টিবিদ নাজিমা কুরেশি। এই দম্পতি ব্রিটেনে ‘দ্য হেলদি মুসলিমস’ নামেও অধিক জনপ্রিয়। দম্পতি রোজার উপবাসের সময় কীভাবে শরীরে বাড়তি যত্ন নিতে হবে সেই বিষয়ে একটি বইও লিখেছেন। বইটির নাম ‘দ্য হেলদি রামাদন গাইড’।

রোজার সময় সঠিক খাবার গ্রহন করা গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গে দরকার শরীরকে ফিট রাখা। কারণ খাবার ও ব্যায়াম আমাদের শারীরিক ও মানসিক ভারসাম্যকে নিয়ন্ত্রণ করে।প্রশিক্ষক বেলাল হাফিজ বলেন, ‘রোজার উদ্দেশ্য হল আধ্যাত্মিক ও আত্মার উন্নতি সাধন, সেই সঙ্গে এই মাসের পবিত্রতাও বজায় রেখে চলা। আমরা যা খাই এবং যেভাবে ব্যায়াম করি তা এই উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বড় ভূমিকা রাখে’।

আপনিও যদি রোজা রাখার সঙ্গে শরীরের যত্ন নিতে চান তাহলে এই বিষয়গুলি অবশ্যই মাথায় রাখুন।

পর্যাপ্ত জল পান করুন

উপবাসের সময় নানা লক্ষণ দেখা যায়। যার মধ্যে মাথাব্যথা সাধারণ একটি লক্ষণ। এর একমাত্র কারণ হল ডি-হাইড্রেশন। যেহেতু সুর্যাস্তের পরই জল খেতে হয়, তাই এমন সমস্যা হয়েই থাকে। তবে এই ধারণা ভুল যে একেবারে সূর্যাস্তের পরই জল খেতে হবে। আসলে প্রতিদিন যে পরিমাণ জল পান করেন, রোজার সময় একই পরিমাণের জল ভোর থেকে অল্প অল্প পান করা যেতে পারে। তাই মাঝে মাঝে অল্প অল্প জল পান করুন।

দিনের প্রথম ভাগে পুষ্টিকর খাবার খান

ভোর রাতে সেহেরি খেয়েই শুরু হয় রোজার উপবাস। এই সময় দুইবেলা খাবার খেতে করতে হয়। সকালে একবার, একবার রাতে। তাই সকালের খাবারটি যেন পুষ্টিকর হয়। সকালের খাবারটি যদি হয় প্রোটিনযুক্ত, পাশাপাশি বি-কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটযুক্ত তাহলে সেটা হবে উপরি পাওনা।

পুষ্টিবিদ নাজিম কোরেশি অবশ্য বলেন, যাঁদের ভোর রাতে খাওয়ার অভ্যেস নেই বা যাঁরা প্রথম বার রোজা রাখছেন, তাঁদের জন্য এটি খুবই কষ্টকর হতে পারে। তবে ধীরে ধীরে অভ্যেস হয়ে যায়।

ইফতারে অতিরিক্ত না খাওয়া

অনেকের ধারণা একসঙ্গে বেশি পরিমাণে খেয়ে নিলে সারাদিন নিশ্চিন্তে থাকা যায়।শরীরে যে পুষ্টির ঘাটতি তা পুষিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু, এই ধারণা একদমই ভুল। অনেক সময় আবার পরিবারের সকলের সঙ্গে ইফতার করার খুশিতে  খেয়াল থাকে না কতটা খাচ্ছি। আবেগের বশে খেয়ে ফেলি অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাবার। ইফতারে আমরা বেশিরভাগ খাই সিঙ্গারা, নিমকির মতো নমকিন জাতীয় জিনিস। এসবে ক্যালরির মাত্রা থাকে ২০০-২৫০ গ্রাম। হিসেব করলে দেখা যাবে অন্য সময়ের তুলনায় অধিক ক্যালোরিযুক্ত খাবার আমরা ইফতারেই খেয়ে নিই। এই বিষয়ে অধিক সচেতন হতে হবে বলে মনে করেন হাফিজ।

ব্যায়ামের সময় নির্ধারণ করুন

রোজার মাসে একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন ব্যায়ামের জন্য। শরীরচর্চা প্রশিক্ষক হাফিজ বলেন, ‘অধিকাংশ মানুষ ইফতারের এক বা দু’ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। যাতে ব্যায়াম করার পরক্ষণেই তাঁরা খাবার খেতে পারেন। তবে কোনওটাই নির্দিষ্ট নিয়ম নয়, আপনি আপনার মতো করেই ব্যায়াম করতে পারেন।

নিজের শক্তি ও কাজের প্রতি মনোযোগ দিন

দিনের যে কোনও সময় আপনি ব্যায়াম করতে পারেন। তবে করতে হবে আপনার শরীরের ক্ষমতা অনুযায়ী। ফিটনেস বাড়ানোর জন্য যে ব্যায়ামগুলি দরকার শুধুমাত্র সেগুলিই নির্বাচন করুন। মনে রাখবেন, এই একমাস রুটিন পরিবর্তন হয়েছে। ভীষণ সাবধানতার সঙ্গে কাজ করুন।

রোজার নিয়ম মেনে চলুন

রোজার উপবাস আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে যুক্ত। এই সময় বাড়তি সাবধানতা মেনে চলা দরকার। হয়ত শরীর দুর্বল লাগতে পারে। তবে ৩০ দিনের এই উপবাস আপনার মধ্যে অজান্তেই বাড়িয়ে দেবে সহনশীলতা।