Viswa Bharati: রাষ্ট্রপতি সফরের প্রাক্কালে বিপাকে বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতনে কি অশান্তি?

আগামী ২৮ মার্চ শান্তিনিকেতনে আসছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে তাঁর কলাভবন, রবীন্দ্রভবন পরিদর্শন করার কথা। কিন্তু রাষ্ট্রপতি সফরের আগে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) এবং কলাভবনের টানাপোড়েনে থমকে গিয়েছে ঐতিহ্যবাহী কালোবাড়ি সংস্কারের কাজ। ভগ্ন অবস্থায় পড়ে রামকিঙ্কর বেইজ নির্মিত গান্ধী মূর্তিও। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে বিশ্বভারতীতে। শান্তিনিকেতন প্রাঙ্গণে যেন অশান্তির বাতাবরণ।

বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে?‌ হাতে সময় বলতে মাত্র তিনদিন। সেখানে কলাভবন প্রাঙ্গণে আচার্য নন্দলাল বসু এবং রামকিঙ্কর বেইজের মূল্যবান ভাস্কর্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। এই দুই প্রাণপুরুষের যৌথ উদ্যোগে ১৯৩৪ সালে মাটি, আলকাতরা–সহ অন্যান্য মৌলিক উপাদান দিয়ে তৈরি হয় ঐতিহ্যবাহী কালোবাড়ি। যা রক্ষণাবেক্ষণ করত কলাভবন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কয়েক মাস আগে ঝড়ে গাছ পড়ে যায়, কালোবাড়ির অ্যাসবেসটসের ছাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এতদিন পেরিয়ে গেলেও তা সংস্কার করেনি বিশ্বভারতী। শুধুমাত্র ত্রিপল ঢেকে দায় সারা হয়েছে। তারপরও বৃষ্টির জল ঢুকে ক্ষতি হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি। একসময় কালোবাড়িকে অন্যান্য হস্টেলের মতোই ব্যবহার করতেন ছাত্ররা। স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়ারা কালোবাড়িতে থাকার সুযোগ পেতেন। কিন্তু এখন তা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। এখন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংসের দিকে এগচ্ছে ভবনটি।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ বিশ্বভারতীর এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য এবং ভবনগুলি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ করে এএসআই। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে সেই তালিকায় কালোবাড়ি অন্তর্ভুক্ত নেই বলে বিশ্বভারতী সূত্রে খবর। গোটা বাড়িটি মাটির তৈরি বলে কয়েক বছর আগে পর্যন্ত কলাভবনের দক্ষ অধ্যাপকরা কালোবাড়ির বিভিন্ন মূর্তি সংস্কারের কাজ নিজের হাতেই করতেন। তবে রাষ্ট্রপতির আসার আগে তা এএসআইকে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভাবা হয়। একই অবস্থা গান্ধী মূর্তিরও। আগে রাষ্ট্রপতি হিসেবে রামনাথ কোবিন্দ কলাভবনে এসে গান্ধীমূর্তির ভগ্নদশা দেখে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তিনি কর্তৃপক্ষকে সংস্কার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ‌সেই নির্দেশও কার্যকর করা হয়নি বলে কলাভবনের অন্দরের খবর।

তাহলে এবার কী হবে?‌ রাষ্ট্রপতি কলাভবন ঘুরে দেখবেন কথাটি জানাজানি হতেই রাতের ঘুম উড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মৌখিক নির্দেশে ভগ্নবাড়িটির সংস্কারের কাজ শুরু করেছিল কলাভবন কর্তৃপক্ষ। সূত্রের খবর, মাঝপথে ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব এএসআইকে মেইল করে সংস্কারের কাজ শুরু করতে বলেন। এই অবস্থায় কাজ বন্ধ করে দেয় কলাভবন। সুতরাং এই অল্প সময়ের মধ্যে সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ হবে কি না সেটা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ভগ্নপ্রায় বাড়িটি রাষ্ট্রপতির নজরে পড়লে কর্তৃপক্ষের মুখ পুড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়,রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পরিদর্শনের আগে কর্তৃপক্ষ সংস্কার করতে পারে কি না।