প্রয়াত বাবাকেও যদি চোর, ডাকাত, লম্পট বলতে হয়…কমলপুত্র উদয়নকে বিঁধলেন শুভেন্দু

তৃণমূল আমলের দুর্নীতি নিয়ে গোটা বাংলা তোলপাড়। তখনই বাম আমলের দুর্নীতি নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু করেছেন তাবড় তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে সেই প্রসঙ্গে প্রাক্তন বাম নেতা তথা বর্তমানের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ একেবারে বিস্ফোরক প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন। তিনি নিজের বাবা কমল গুহের কথা উল্লেখ করেছেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর সাফ কথা, আমি আবারও বলছি বাম আমলে কোটা সিস্টেম ছিল। সেই সিস্টেমে বাম আমলে চাকরি হয়েছে। ফরোয়ার্ড ব্লক তার ভাগ পেয়েছে। কোচবিহারের জেলা সম্পাদক হিসাবে বাবাকেও সেই লিস্ট এনডোর্স করতে হয়েছে। এরপর আমি যখন জেলা সম্পাদক ছিলাম তখন আমাকেও এনডোর্স করতে হয়েছে। জেনেবুঝে করেছি। ভালো প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও দলের স্বার্থে এটা করতে হয়েছে। তাদের চাকরি দিতে হয়েছে। আবারও বলছি সুযোগ পেলে দলের ছেলেদের চাকরি এখনও আমরা দিই। আমি মন্ত্রী হিসাবে দলের তিনজনকে অ্য়াটেনডেন্ট হিসাবে নিয়োগ করেছি। তবে তার সঙ্গেই তিনি বলেছেন কোনও আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন না। 

তবে এবার উদয়ন গুহের এই মন্তব্যকে ঘিরে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, রাজনীতি অনেক পরের বিষয়। এই পৃথিবীর আলো যিনি দেখিয়েছেন তাদের সম্পর্কে এভাবে বলা যায় না। তিনি স্বর্গত। তিনি এর সাফাই দিতে পারবেন না। তিনি স্বর্গত। তিনি এর কাউন্টার করতে পারবেন না। অতএব রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার জন্য, মন্ত্রীত্ব বাঁচানোর জন্য, তার অপকর্মের ছাড়পত্র নেওয়া, তার দাদাগিরি করার জন্য,কোম্পানির মালিক ও ম্যানেজিং ডাইরেক্টরকে তুষ্ট করার জন্য বাবাকেও যদি চোর, ডাকাত, লম্পট বলতে হয়, তাতেও (তার) আপত্তি নেই।

বাম আমলে উত্তরবঙ্গের জননেতা হিসাবে পরিচিত ছিলেন কমল গুহ। ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রবাদপ্রতীম নেতা। এখনও দিনহাটায় কমল গুহের নাম শুনলে মানুষ কপালে দুহাত ঠেকান। এতটাই প্রণম্য ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, বাম শরিক হয়েও কোচবিহারে কার্যত ফরওয়ার্ড ব্লক বিগতদিনে সিপিএমের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা বলত। কমল গুহের দাপটে কার্যত গুটিয়ে থাকত সিপিএম। দিনহাটা তথা উত্তরবঙ্গের রূপকার হিসাবে উল্লেখ করা হত কমল গুহকে। আর সেই কমল গুহের পুত্র হলেন উদয়ন গুহ। তবে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি যেভাবে নিজের বাবার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন তা তাৎপর্যপূর্ণ।

এদিকে বাম জমানায় একের পর এক চাকরিতে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে ধরেছেন তিনি। নাটাবাড়ির প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক তমসের আলির আত্মীয়র চাকরি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন উদয়ন।