Mamata Banerjee: ‘‌কেন্দ্রকে বোঝাতে হবে রাজ্যের বুদ্ধি আছে’‌, সিঙ্গুর থেকে তোপ দাগলেন মমতা

আজ, মঙ্গলবার রাস্তাশ্রী প্রকল্পের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রকল্পের সূচনা করতে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী আবার কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হন। মঞ্চ থেকেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় তুলোধনা করেন তিনি। আজ সিঙ্গুরে পথশ্রী–রাস্তাশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। কেন্দ্রীয় সরকার প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার টাকা বকেয়া রাখায় নিজেদের বুদ্ধিতে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই এই পদক্ষেপ বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ এদিন সিঙ্গুরে দেখা যায়, মুখ্যমন্ত্রী কর্নিক হাতে ইটের উপর বালি–সিমেন্ট মাখিয়ে রাস্তার কাজের সূচনা করছেন। আর রতনপুর মাঠের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‌কেন্দ্র এক টাকাও দিচ্ছে না। রাজ্যের ২২ জেলায় ৩০ হাজার গ্রামে রাস্তা তৈরি হবে। আর রাজ্যের টাকাতেই গ্রামীণ রাস্তার কাজ শুরু হবে। রাজ্য সরকারের টাকায় ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির কাজ হচ্ছে। রাস্তা তৈরির কাজ দেওয়া হবে জব কার্ড হোল্ডারদের। কেন্দ্রকে বোঝাতে হবে রাজ্যের বুদ্ধি আছে। কারণ জব কার্ড, ১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র। রাস্তা তৈরি করতে পৌনে চার হাজার কোটি টাকা খরচ হবে।’‌

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ বামফ্রন্টের জমানায় সিঙ্গুর আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বিরোধিতার ঝাঁঝ বাড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর জমি আন্দোলন গোটা দেশকে আন্দোলিত করেছিল। এখন নানান অভিযোগে রাজ্য সরকার কিছুটা কোণঠাসা তখন সিঙ্গুর থেকেই রাস্তাশ্রীর সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এই রাস্তা দিয়েই জবাব দিতে চাইছেন বিরোধীদের বলে মনে করা হচ্ছে। এদিন সিঙ্গুর থেকে তাই মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গেল, ‘‌আজকে বাংলায় ১২ হাজার কিলোমিটারের বেশি রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা হবে। রাজ্যের সব কটা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ হবে। সিঙ্গুর থেকে এটা শুরু করলাম। অন্যান্য জায়গাতেও কাজ শুরু করে দিন। এই রাস্তা তৈরি করতে পৌনে চার হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। সেই টাকার এক পয়সাও দিল্লির টাকা নয়। রাজ্যের টাকা। জিএসটি করার পর দিল্লি সব টাকা তুলে নিয়ে যায়। আমাদের সব থেকে বড় ভুল হয়েছিল সমর্থন করা। আমরা ভেবেছিলাম, এতে রাজ্যের লাভ হবে। এখন দেখছি, একশো দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। জব কার্ড হোল্ডারদের কাজ দিচ্ছে না। গ্রামীণ আবাস যোজনা, ছাত্রছাত্রীদের স্কলারশিপের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে।’‌

আর কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?‌ সিঙ্গুর নিয়েও নিজের অবস্তান স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‌বারবার ফিরে আসি সিঙ্গুরে। সিঙ্গুরে আমরা কথা রেখেছি। সিঙ্গুর পাঠ্যবইয়ে স্থান পেয়েছে। সিঙ্গুরের ৮ একর জমিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হবে। কেন্দ্র আগের বছর একশো দিনের সাত হাজার কোটি টাকা শোধ করেনি। এই বছর একশো দিনের কাজের একটা কাজও বাংলাকে দেয়নি। আমরা পরপর তিন চারবার প্রথম হয়েছিলাম। আমরা কাজে দেখিয়ে দিয়েছি। তাই হিংসা, রাজনীতি হতে পারে, কাজের বেলায় অশ্বডিম্ব।’‌