স্টার্লিংয়ের হাফ সেঞ্চুরিতে চাপে বাংলাদেশ

সংক্ষিপ্ত স্কোর: আয়ারল্যান্ড ১০ ওভারে ৭৭/২ (স্টার্লিং ৫০*, টেক্টর ১১*, টাকার ৪, র. অ্যাডায়ার ৭) 

বাংলাদেশ ১৯.২ ওভারে ১২৪/১০ (শামীম ৫১*, হাসান ২*, শরিফুল ৫, নাসুম ১৩, তাসকিন ০, রিশাদ ৮, হৃদয় ১২, সাকিব ৬, শান্ত ৪, রনি ১৪, লিটন ৫; মা. অ্যাডায়ার ২৫/৩, হামফ্রেস ১০/২)

পাওয়ার প্লের মধ্যে দুই ব্যাটারকে বাংলাদেশ ফেরালেও চাপে নেই আয়ারল্যান্ড। ১২৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তাদের অধিনায়ক পল স্টার্লিং করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। ৩১ বলে ৭ চার ও ২ ছয়ে ক্যারিয়ারের ২২তম ফিফটি করেন এই ওপেনার।

প্রথম বলেই উইকেট পেলেন শরিফুল

ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে নেন শরিফুল ইসলাম। মোস্তাফিজুর রহমানের বদলে একাদশে জায়গা পেয়ে এই পেসার তার প্রথম বলেই পেলেন উইকেট। লরকান টাকারকে ৪ রানে লিটন দাসের ক্যাচ বানান তিনি।

তাসকিনের ইয়র্কারে বোল্ড আইরিশ ওপেনার

প্রথম ২ ওভারে ১৫ রান তুলে ভালো শুরু করেন পল স্টার্লিং ও রস অ্যাডায়ার। এই জুটি আর দুটি রান যোগ করতে পেরেছে। তাসকিন আহমেদ দুর্দান্ত অ্যাডায়ারকে (৭) বোল্ড করেছেন। 

শামীমের প্রথম হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের ১২৪

১৯তম ওভারের চতুর্থ বলে লম্বা ছক্কা। পরের বলে চার, আগেই ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলা শামীম হোসেন পেয়ে গেলেন প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ৪০ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ফিফটির দেখা পান তিনি। তার ব্যাটে চড়ে বাংলাদেশ করেছে ১২৪ রান। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ফিওন হ্যান্ডের শিকার হন শামীম। ৪২ বলে ৫১ রানে থামেন তিনি জর্জ ডকরেলের ক্যাচ হয়ে। 

৬১ রানে ৭ উইকেট পড়ার পর বাংলাদেশের হাল ধরেন নাসুম আহমেদ ও শামীম। দুজনের জুটিতে একশর পথে ছুটছিল স্বাগতিকরা। কিন্তু দলীয় ৯৪ রানে ভেঙে যায় তাদের জুটি। গ্যারেথ ডিলানি বল হাতে নিয়ে নাসুমকে ১৩ রানে পল স্টার্লিংয়ের ক্যাচ বানান। শামীমের সঙ্গে ৩৪ বলে ৩৩ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে থামেন বাংলাদেশি ব্যাটার। পরের ওভারে মার্ক অ্যাডায়ার তার তৃতীয় উইকেট তুলে নেন। শরিফুল ইসলাম মাত্র ৫ রান করে লরকান টাকারকে ক্যাচ দেন। ১০৪ রানে ৯ ব্যাটার ফেরার পর হাসান মাহমুদের সঙ্গে ২০ রানের জুটি গড়ে মাঠ ছাড়েন শামীম। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে তিনি একপ্রান্ত আগলে রেখে হাফ সেঞ্চুরিতে স্বাগতিকদের মান বাঁচান। 

অভিষেকে প্রথম বলেই উইকেট আইরিশ বোলারের

অভিষেকে ব্যাট হাতে রিশাদ হোসেন রানের খাতা খোলেন ছয় মেরে। তাকে বিদায় নিতে হলো আরেক অভিষিক্ত বোলারের হাতে। ম্যাট হামফ্রেস দশম ওভারে বল হাতে নিয়েই পেলেন উইকেট। রিশাদকে বোল্ড করেন তিনি। ৭ বলে ৮ রান করেন তিনি। ৪১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর রিশাদ ও শামীম হোসেনের ২০ রানের জুটিই ছিল সেরা। তারপর দুই বল খেলে রানের খাতা না খুলে তাসকিন আহমেদ হামফ্রেসের দ্বিতীয় শিকার হন। স্লগ সুইপ করে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাম্ফারকে ক্যাচ দেন তিনি। ৬১ রানে সাত উইকেট হারালো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের পঞ্চাশও হয়নি, নেই ৫ উইকেট

প্রথম ওভারে ৯ রান তোলার পর বাংলাদেশ পরের ছয় ওভারে ৫ ব্যাটারকে হারালো। পঞ্চাশ না হতেই নেই দলের অর্ধেক ব্যাটার। প্রথমে লিটন দাস, পরে নাজমুল হোসেন শান্ত ও রনি তালুকদার প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেন। তিনজনই বড় শট খেলতে গিয়ে আইরিশ ফিল্ডারদের সহজ ক্যাচ হয়েছেন। লিটনকে (৫) জর্জ ডকরেলের ক্যাচ বানান মার্ক অ্যাডায়ার। তৃতীয় ওভারে ডিপ মিডউইকেটে কার্টিস ক্যাম্ফারের ক্যাচ হন শান্ত (৪)। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সেরা খেলোয়াড় এবার ব্যর্থ, আগের দুই ম্যাচে করেন ১৪ ও অপরাজিত ২ রান।

প্রথম ওভারে বল হাতে নিয়ে ক্যাম্ফার ফেরান দারুণ ফর্মে থাকা রনি তালুকদারকে। ১৪ রান করেন বাংলাদেশি ওপেনার। ২৪ রানে ৩ উইকেট হারায় স্বাগিতকরা। এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে সাকিব আল হাসান প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু পাওয়ার প্লের আগে ভেঙে যায় এই জুটি। ষষ্ঠ ওভারের পঞ্চম বলে ছয় মারতে গিয়ে মিডউইকেট বাউন্ডারিতে বেন হোয়াইটের ক্যাচ হন সাকিব। ৬ বলে ৬ রানে তিনি অ্যাডায়ারের শিকার। ৪১ রানে চার উইকেট নেই বাংলাদেশের। আর কোনও রান যোগ না হতেই সপ্তম ওভারে হৃদয় জোরালো শট খেলতে গিয়ে ১২ রানে মিডউইকেটে টেক্টরের সহজ ক্যাচ হন, বেন হোয়াইটের শিকার তিনি।

স্টার্লিংয়ের হাফ সেঞ্চুরিতে চাপে বাংলাদেশ

লিটন খেললেন মাত্র ৪ বল

এবার ব্যর্থ হলেন লিটন দাস। মাত্র ৪ বল খেলে ৫ রানে আউট তিনি। চার মেরে ইনিংস শুরু করেছিলেন। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দেন জর্জ ডকরেলকে। আগের ম্যাচে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি করা ব্যাটারকে ফিরিয়ে ব্রেকথ্রু আনেন মার্ক অ্যাডায়ার।

বাংলাদেশের একাদশে দুটি পরিবর্তন

দ্বিতীয় ম্যাচের দল থেকে বাদ পড়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। রিশাদের সঙ্গে দলে ঢুকেছেন শরিফুল ইসলাম। আয়ারল্যান্ড দলে একটি পরিবর্তন, গ্রাহাম হিউমের বদলে দলে ম্যাট হামফ্রেস।

বাংলাদেশ: লিটন দাস (উইকেটকিপার), রনি তালুকদার, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তাওহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম।

আয়ারল্যান্ড: পল স্টার্লিং (অধিনায়ক), রস অ্যাডায়ার, লরকান টাকার (উইকেটকিপার), হ্যারি টেক্টর, কার্টিস ক্যাম্ফার, জর্জ ডকরেল, গ্যারেথ ডিলানি, মার্ক অ্যাডায়ার, ফিওন হ্যান্ড, ম্যাথু হামফ্রেস, বেন হোয়াইট।

টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছে বাংলাদেশ, রিশাদের অভিষেক

আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার সুযোগ বাংলাদেশের সামনে। শুক্রবার এই লক্ষ্যে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছে স্বাগতিকরা। 

টসের আগে টি-টোয়েন্টি ক্যাচ তুলে দেওয়া হয়েছে রিশাদ হোসেনের মাথায়। জুবায়ের হোসেন ও আমিনুল ইসলাম বিপ্লবের পর টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় বাংলাদেশি লেগস্পিনার হিসেবে অভিষিক্ত হলেন তিনি।

রিশাদের অভিষেক হলো শুক্রবার

আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি

শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়ে এই ফরম্যাটে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল বাংলাদেশ দল। ইংল্যান্ড সিরিজে করা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স আয়ারল্যান্ড সিরিজেও অব্যাহত রেখেছে সাকিব আল হাসানরা। শুক্রবার ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে সফরকারী আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার হাতছানি বাংলাদেশের সামনে। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে লাল-সবুজ জার্সীধারীরা। 

বেলা ২টায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মাঠে নামবে সাকিবরা। খেলাটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টেলিভিশন ও টি স্পোর্টস।