Raju Jha Murder: কেন শক্তিগড়কে অপারেশনের জন্য বেছে নেওয়া হয়?‌ লাগাতার রেইকির তথ্য পেল পুলিশ

রাজু ঝার খুনের প্ল্যান শেষ মুহূর্তে বদল করা হয়েছিল। প্রথমে ‘অপারেশন’ হওয়ার কথা ছিল খাস ইস্পাতনগরীর বুকে। তাই দুর্গাপুর সিটি সেন্টারের সামনে কয়লা ‘মাফিয়া’ রাজু ঝাকে ‘খতম’ করার টার্গেট নেয় শার্প শ্যুটাররা। কিন্তু এলাকায় তারা ‘রেইকি’ করে বোঝে এটা রাজুর খাসতালুক। শুক্রবার রাত থেকে এখানে ঘোরাফেরা করেছিল সুপারি কিলারদের ওই নীল রঙের বালেনো গাড়ি। এটা রাজুর খাসতালুক বুঝে তাঁর নিজস্ব নিরাপত্তা বলয় টপকে গুলি করার ঝুঁকি নেয়নি সুপারি কিলাররা। এরপর শনিবার দুপুরে খবর আসে, ‘রাজু ঝা’ কলকাতা যাবে। তখন দুর্গাপুর শহরের বাইরে অপেক্ষা করতে থাকে শার্প শ্যুটাররা বলে তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে।

পুলিশ ঠিক কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, রাজুকে খুনের পরিকল্পনা করা হয় একমাস আগে। ছ’মাস আগেও রাজুর অফিসে একবার হামলা চলে। সেটা একই গ্যাংয়ের কাজ কিনা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। ওই নীল গাড়ি চড়ে ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে এসেছিল শার্প শ্যুটাররা। তাই জেলা পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছেছে। বিহার জেলে বন্দি এক কুখ্যাত শার্প শ্যুটার গ্যাংয়ের দিকেও নজর রয়েছে পুলিশের। দুর্গাপুর, আসানসোল এবং কলকাতা লাগোয়া শহরতলিতে খুন, ছিনতাই এবং ডাকাতির ঘটনায় ওই দুষ্কৃতী দলের নাম জড়িয়েছে। মোটা টাকা সুপারি পেলে যে কোনও ধরনের ‘অপারেশন’ করে তারা। ওই দুষ্কৃতী জেলে বসেই সেই কাজের বরাত নিয়ে থাকে। রাজু ঝা খুনের ঘটনায় খুনিদের স্কেচ আঁকা হয়েছে। তারা জেলবন্দি ওই শার্প শ্যুটারের গ্যাংয়ের সদস্য কি না সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে ঝাড়খণ্ড, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি গ্যাংয়ের ব্যাপারেও। ইতিমধ্যেই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল শক্তিগড় থানায় এসে আবদুল লতিফ এবং আততায়ীদের গাড়ি পরীক্ষা করে। ঘটনাস্থলে গিয়েও বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ সূত্রের খবর, গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত আবদুল লতিফকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতেন রাজু ঝা। অপারেশনের দিন লতিফের বডিগার্ডরা পিছনে অন্য গাড়িতে আসছিল। তাই নিজের ‘বিশ্বস্ত’ নিরাপত্তারক্ষীকে ছাড়াই বেরিয়ে পড়েন রাজু ঝা। আর ঘটনার দিন দুপুরেই তিনি বিধাননগর থেকে সিটি সেন্টারের হোটেলে ফিরেছিলেন। নিজস্ব ‘বডিগার্ডরা’ তাঁকে নিরাপদে পৌঁছেও দেয়। কিন্তু রাজু বিকেলে হোটেল থেকে বেরনোর পর তারা চলে যায়। এই গোটা বিষয়টি সুপারি কিলাররা জানতে পারে। সেটা কে তাদের জানিয়েছিল খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।

খুনের নেপথ্যে কারণ কী?‌ কয়লা মাফিয়া খুনের বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিও। তারা তথ্য পেয়েছে, অনুপ মাঝি সিবিআই এবং ইডি মামলায় জড়িয়ে যাওয়ার পর অবৈধ কয়লা কারবারে অনেকটা দখল করেন রাজু ঝা। আবার গরু এবং কয়লা পাচারের মামলায় চলতি সপ্তাহে আবদুল লতিফকে দিল্লিতে ডেকে পাঠায় ইডি। কিন্তু তিনি সেটা শারীরিক অসুস্থতা বলে এড়িয়ে যায়। তবে লতিফ আবার পালিয়ে যাওয়ায় কপালে ভাঁজ পড়েছে সিবিআইয়ের। সমস্ত বিমানবন্দরে ‘লুক আউট’ অর্ডার পাঠানো হচ্ছে। ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন তদন্তকারীরা।