Maoist Leader Arrested: ঝাড়খণ্ডের মাওবাদী নেতা ‘ডাক্তার’ গ্রেফতার নদিয়ায়, মাথার দাম ছিল লক্ষ টাকা

ঝাড়খণ্ড পুলিশের খাতায় ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মাওবাদী নেতা তথা বাংলার বাসিন্দা ‘ডাক্তার’ ওরফে প্রদীপ মণ্ডলকে গ্রেফতার করল লালবাজার। মাঝরাতে লালবাজারের গুন্ডাদমন শাখার গোয়েন্দাদের একটি টিম নদিয়া জেলার বার্নিয়া গ্রাম থেকে এই মাওবাদী নেতাকে গ্রেফতার করে। ঝাড়খণ্ড পুলিশ এই মাওবাদী নেতার মাথার দাম ধার্য করেছিল এক লক্ষ টাকা। গত সাত মাস ধরেই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করছিল, মুর্শিদাবাদ লাগোয়া নদিয়া জেলার পলাশির বার্নিয়াতে ঘাঁটি গেড়েছে ১৫ থেকে ২০ জন শীর্ষস্তরের মাওবাদী নেতা। তাঁদের লক্ষ্য, বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন নদীয়া, মুর্শিদবাদ ও মালদা জেলা মিলিয়ে ‘মাও করিডর’ তৈরি করা। বার্নিয়া থেকে মাওবাদী নেতা ডাক্তারের গ্রেফতার গোয়েন্দাদের এই দাবিকে সিলমোহর দিল।

পুলিশ কী তথ্য পেয়েছে?‌ পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া মাওবাদী নেতার পৈতৃক বাড়ি ডায়মন্ড হারবারের বাহাদুরপুর গ্রামে। বিহার–ঝাড়খণ্ড মাওবাদী সামরিক কমিশনের সদস্য প্রদীপ মণ্ডলকে বহুদিন ধরেই খুঁজছিল ঝাড়খণ্ড পুলিশ। তাঁর মাথার দামও এক লক্ষ টাকা ঘোষণা করা হলেও খোঁজ মিলছিল না। ১২ বছরের বেশি সময় ধরে মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত প্রদীপ। মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের পাল্টা দাবি তুলেছে, প্রদীপ কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। তার এই গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি। ধৃতের কাছ থেকে সেভেন এম এম পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ, একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়েছে।

কেন গ্রেফতার করা হল?‌ চলতি বছরের ১১ মার্চ কলকাতার হেস্টিংস থানায় অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে মাওবাদী নেতাকে। এই মাওবাদী নেতার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন–সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রদীপকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। জেরায় মাওবাদী মডিউলের সাম্প্রতিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে প্রদীপের কাছ থেকে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার ঈশানি পাল বলেন, ‘স্পেশাল টাস্ক ফোর্স থেকে বিশেষ অভিযান চালানো হয়েছিল।’‌

কে এই ‘ডাক্তার’ ওরফে প্রদীপ মণ্ডল?‌ প্রদীপ মণ্ডলের বয়স ৪২। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার থানার বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা। দেশের অন্যতম নিষিদ্ধ সংগঠন সিপিআই (মাওবাদী) দলের স্কোয়াডে যোগ দেওয়ার পর থেকেই বাড়িছাড়া। পিতৃদত্ত নাম প্রদীপ মণ্ডল হলেও, সংগঠনে তিনি ‘ডাক্তার’ নামেই পরিচিত। সংগঠনে যোগ দেওয়ার পর প্রথম থেকেই তিনি ঝাড়খণ্ডের মাওবাদী স্কোয়াডের সদস্য। জঙ্গলমহলে লালগড় আন্দোলনের সময় সেখানে তাঁর যাতায়াত ছিল। সংগ্রামী কৃষক মঞ্চের নামে একটি ‘ছদ্ম’ সংগঠনের আড়ালে সংগঠন বিস্তারের কাজ শুরু করেছিলেন প্রদীপ। তাঁর অন্যতম সহায়ক ছিলেন জিসান নামে আর এক মাওবাদী নেতা। তাঁদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালিয়েই প্রদীপ–জিসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।