ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়া ২৫ মৌয়াল কারাগারে

মধু আহরণের পাশ নিয়ে সুন্দরবনে যাওয়ার পর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়া ২৫ মৌয়ালকে আটক করছে বন বিভাগ। পরে তাদের বিরুদ্ধে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকায় অবৈধভাবে প্রবেশের অভিযোগে মামলা দেওয়া হয়।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) বিকালে পশ্চিম সুন্দরবনের হলদেবুনিয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। 

বন বিভাগের দাবি, সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকা থেকে আটক এসব বনজীবীর সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি ছিল না। এ সময় তিনটি ডিঙি নৌকা উদ্ধারের দাবিও করেছেন বন কর্তারা। 

আটক ব্যক্তিরা হলেন- মো. আব্দুর রাজ্জাক, আফছার গাজী, শাহাদাৎ হোসেন, মো. হাকিম গাজী, সফিকুল ইসলাম, ইউনুস আলী সরদার, শহিদুল গাজী, কেরামত মিস্ত্রি, কামরুল ইসলাম, মো. ইদ্রীস আলী, মাকসুদুল আলম, মো. সাদ্দাম হোসেন, হযরত আলী শেখ, আবু হানিফা, হয়রত আলী, মো. আলাউদ্দীন মালী, কামরুল ইসলাম (২), আমজিয়াদ মালী, ইসমাইল হোসেন, মো. জুব্বার আলী, সামাদ আলী, সফেদ আলী গাজী, মনিরুল ইসলাম, শাহ আলম ও লিয়াকত হোসেন। এ সব জেলেরা সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার ৯ নম্বর সোরা, চাঁদনীমুখা, ডুমুরিয়া ও গাবুরা এলাকার বাসিন্দা।

জেলেরা জানান, গত ২ এপ্রিল বুড়িগোয়ালীনি স্টেশন থেকে মধু কাটার পাশ (অনুমতি) নিয়ে তারা সুন্দরবনে যান। সিগনাল চলার একপর্যায়ে ঝড়ের কবলে পড়ে ৬ এপ্রিল তারা পথ হারিয়ে ভারতীয় অংশে ঢুকে পড়েন। এ সময় ভারতীয় সুন্দরবনের বনপ্রহরীসহ বিএসএফ সদস্যা তাদের ধাওয়া করলে মধু সংগ্রহের সরঞ্জাম ফেলে জীবন নিয়ে তারা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ছোট বড় দুটি নদী সাঁতরে হলদেবুনিয়া অংশে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশের বনরক্ষীরা তাদের উদ্ধার করে বুড়িগোয়ালীনি স্টেশনে নেয় আটক দেখিয়েছেন।

জেলেদের দাবি, মহাজনের কাছ থেকে চড়াসুদে ঋণ নিয়ে মধু কাটতে সুন্দরবনে গিয়েছেন তারা। এখন সর্বস্ব হারিয়ে জেলের ঘানি টানার পর মহাজনের টাকা ফেরত দেয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। মৌসুমের শুরুতে এমন বিপদে পড়ার কারণে সারা বছর ধরে সাংসারিক ব্যয় নিয়েও তারা চিন্তায় রয়েছেন।

সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক ইকবাল হোসাইন চৌধুরী জানান, অভয়ারণ্য এলাকায় যেয়ে মাছ শিকারের সময় হলদেবুনিয়া স্টেশন ইনচার্জ মাহাবুবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৫ জনকে আটক করা হয়। অনুমতিপত্র না থাকার পরও তারা সুন্দরবনে প্রবেশ করার পাশাপাশি নিষিদ্ধ অভয়ারণ্যে যাওয়ার কারণে তাদের বন বিভাগের মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।