২০১৪ প্রাথমিক টেটে সবাইকে দিতে হবে বাড়তি ৬ নম্বর, নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের

এ যেন মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা। এমনিতেই নিয়োগ দুর্নীতিতে জেরবার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে এবার ২০১৪ প্রাথমিক টেটে ভুল প্রশ্নের জন্য সমস্ত পরীক্ষার্থীকে বাড়তি ৬ নম্বর দিতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের এই নির্দেশের ফলে নতুন করে শুরু করতে হতে পারে গোটা নিয়োগপ্রক্রিয়া। বদলে যেতে পারে মেধাতালিকাও।

বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এক নির্দেশে জানিয়েছে, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের সমস্ত পরীক্ষার্থীকে বাড়তি ৬ নম্বর দিতে হবে। কী ভাবে নম্বর দেওয়া হবে তা ঠিক করবে পর্ষদ। আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, যারা ওই প্রশ্নগুলির উত্তর দেননি বা দেওয়ার চেষ্টা করেননি তারাও নম্বর পাওয়ার যোগ্য। আদালতের যুক্তি, এমনও হতে পারে উত্তরের সব কটি বিকল্পই ভুল হওয়ায় বিভ্রান্তিতে নম্বর কাটা যাওয়ার আশঙ্কায় তাঁরা প্রশ্নের উত্তর দেননি।

২০১৪ সালের টেটে ১১টি প্রশ্ন ভুল রয়েছে বলে মামলা হয়েছিল বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চে। সেই মামলায় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়। এর পর বিশ্বভারতী রিপোর্টে জানায়, ১১টির মধ্যে অন্তত ৬টি প্রশ্ন নিশ্চিতভাবে ভুল। এর পর আদালত নির্দেশ দেয়, মামলাকারীদের নম্বর বাড়িয়ে তারা যোগ্য বলে বিবেচিত হলে তাদের চাকরি দিতে হবে। সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে এর পর ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় পর্ষদ।

ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলাকালীনই বাড়তি নম্বর সবাইকে দিতে হবে এই দাবিতে আদালতে ফের মামলা দায়ের হয়। সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন। এর পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন আবেদনকারী। সুপ্রিম কোর্ট এই সংক্রান্ত সমস্ত মামলার একসঙ্গে শুনানি করার নির্দেশ দেয়। সেই মামলার রায়ে বৃহস্পতিবার ২০১৪ টেটের সমস্ত পরীক্ষার্থীকে বাড়তি নম্বর দিতে হবে বলে অভিযোগ ওঠে।

বলে রাখি, দুর্নীতি করে চাকরি পাওয়া একাধিক চাকরি চোর জানিয়েছেন, বাড়তি ৬ নম্বরের জন্য পর্ষদে আবেদন করতে বলা হয়েছিল তাদের। যারা আবেদন করেছিলেন শুধুমাত্র তাদেরই নম্বর বেড়েছে বলে আদালতে স্বীকার করে নিয়েছে পর্ষদ। ফলে ২০১৪ সালের টেটের ভুল প্রশ্ন পরিকল্পনামাফিক করা হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।