Babul Supriyo on Atiq Murder: ‘নরেন্দ্র মোদী যেন…’, আতিক হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিস্ফোরক তৃণমূলের বাবুল সুপ্রিয়

গতকাল রাত ১০টা নাগাদ প্রয়াগরাজের এক হাসপাতালের সামনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত হন মাফিয়া থেকে রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা আতিক আহমেদ। আর এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বাবুল সুপ্রিয়। বাংলার মন্ত্রীর অভিযোগ, পুলিশ দুষ্কৃতীদের সুযোগ করে দিয়েছিল আতিককে মারার জন্য। উল্লেখ্য, গতরাতে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য আতিককে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। সেখানে পুলিশ তাঁকে এবং তাঁর ভাই আশরাফকে ঘিরে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল। সামনে সাংবাদিকরা বুম হাতে প্রশ্ন করছিলেন আতিককে। সেই সময় আচমকাই পিছনের বাঁদিক থেকে একজন বন্দুক উঁচিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে আতিক ও আশরাফকে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজন গ্রেফতার হয়েছে।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ অভিযোগ করেন, এই পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করার জন্য পুলিশ দুষ্কৃতীদের সুযোগ করে দিয়েছে। এক টুইট বার্তায় বাবুল লেখেন, ‘ঘটনার ভিডিয়ো থেকে এটা স্পষ্ট যে ইউপি পুলিশ ৩ জন আততায়ীকে তাদের পূর্বপরিকল্পিত হত্যা সম্পন্ন করার জন্য সুযোগ করে দিয়েছে – ‘অভিযুক্ত’ (আতিক ও আশরাফ) পুলিশ হেফাজতে থাকা সত্ত্বেও তাদের বাঁচাতে পুলিশকর্মীদের কেউই হামলাকারীদের ওপর গুলি চালাননি।’ বাবুল সুপ্রিয় অপর এক টুইটে লেখেন, ‘কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না, তা সে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হোক কি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। যদি মাফিয়াদের বিরুদ্ধেও হয়, আইন আইনের পথে চলা উচিত। তবে তালিবানি রাজ চলছে। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে এই আইএস কায়দায় হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত ছিল। এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রী মোদীর।’ এদিকে অন্যান্য বিরোধী নেতারাও আতিকের এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরব হয়েছেন। যোগী প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, অখিলেশ যাদব, জয়ন্ত চৌধুরীদের মতো নেতারা।

প্রসঙ্গত, গতরাতে আতিক আহমেদকে মাথায় গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সামনে থাকলেও কিছুই করতে পারল না। আতিককে মারার পরই তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভাই আশরাফকেও গুলি করে মারে দুষ্কৃতীরা। রিপোর্ট অনুযায়ী, আতিককে গুলি করে খুন করার ঘটনায় অভিযুক্তদের নাম হল সানি, লাভলেশ এবং অরুণ। প্রতক্ষদর্শীদের দাবি, আতিক ও আশরাফকে গুলি করার পর সানি, লাভলেশরা ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান তুলেছিল। এদিকে আতিক ও আশরাফকে খুনের পরই সানি, অরুণ এবং লাভলেশকে ধরে ফেলে পুলিশ। জানা গিয়েছে, গুলি চালনার ঘটনায় এক সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। এদিকে পুলিশ এখনও এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে কোনও বিবৃতি পেশ করেনি। পুলিশের তরফে শুধুমাত্র এটুকুই জানানো হয়েছে, এখনও অভিযুক্তদের জেরা করা হয়নি। জেরা করা হলে বিবৃতি জারি করে ঘটনা সম্পর্কে বিশদে জানাবে পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সানি, লাভলেশ এবং অরুণ সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিল।

উল্লেখ্য, একদিন আগেই আতিকের ছেলে আসাদ আহমেদের মৃত্যু হয়েছিল এক এনকাউন্টারে। আতিকের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা আছে। সাম্প্রতিককালে তাঁর নাম জড়িয়েছিল আইনজীবী উমেশ পাল হত্যাকাণ্ডে। ২০০৫ সালে বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল হত্যাকাণ্ডে অন্যতম মূল সাক্ষী ছিলেন উমেশ পাল। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সেই উমেশ পাল এবং দুই পুলিশকর্মীকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৬ জনের মৃত্যু হয়েছ গত ৫০ দিনে। বাকিদের মৃত্যু পুলিশি এনকাউন্টারে হয়েছে। আর গতকাল আতিক ও আশরাফের খুন হল দুষ্কৃতীদের গুলিতে।