TMC MLA JIban Krishna Saa Arrested: পার্থ-মানিকের পর জীবনকৃষ্ণ, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গ্রেফতার আরও এক তৃণমূল বিধায়ক

সম্পত্তির নিরিখে প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়কেও পিছনে ফেলে দিতে পারেন বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। এহেন তৃণমূল বিধায়ককে অবশেষে গ্রেফতার করা হল নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে। বড়ঞার বিধায়কের বাড়িতে টানা ৬৫ ঘণ্টা তল্লাশি চালান সিবিআই আধিকারিকরা। এরপরই জীবনকৃষ্ণকে আজ ভোর সোয়া ৫টা নাগাদ আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রেফতার করা হল। তদন্তে অসহযোগিতা এবং প্রমাণ লোপাটের অভিযোগেই মূলত তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ধৃত জীবনকৃষ্ণকে আজ প্রথমে নিয়ে যাওয়া হবে দূর্গাপুরের সিবিআই ক্যাম্পে। সেখানে স্বাস্থ্যপরীক্ষার পরই তাঁকে নিয়ে কলকাতার নিজাম প্যালেসের উদ্দেশে রওনা দেবেন সিবিআই কর্তারা। (আরও পড়ুন: মনে হচ্ছে যেন ৫৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস! এই সপ্তাহে বৃষ্টি হবে কলকাতায়?)

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ জীবনকৃষ্ণের বড়ঞার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জেরা শুরু করেছিলেন সিবিআই-এর তদন্তকারীরা। শুরু হয় তল্লাশিও। এরই মাঝে বিকেল নাগাদ বিধায়ককে পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। যদিও বাড়ির বাইরে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তাঁকে ধরে ফেলেন। তবে বাড়ির পাশের পুকুরে জীবনকৃষ্ণ ছুঁড়ে ফেলেছিলেন নিজের দু’টি ফোন। পরবর্তীতে জেসিবি আনিয়ে এবং লোক নামিয়ে একটি ফোন উদ্ধার করে সিহিআই। তবে অপর ফোনটি পাওয় যায়নি বলে জানা গিয়েছে। তাছাড়াও বিধায়কের বাড়ি থেকে একাধিক কম্পিউটার, বেশ কয়েকটি ল্যাপটপ, তিনটি নোটপ্যাড বাজেয়াপ্ত করেছেন তদন্তকারীরা।

আরও পড়ুন: ‘ডিএ ইস্যুতে হাই কোর্টের কথা শুনছে না সরকার’, বিস্ফোরক দাবি আন্দোলনকারীদের

এদিকে জানা গিয়েছে, বাড়ির পাশের ঝোপঝাড় ঘেঁটে ৫টি ব্যাগ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেখান থেকে দু’টি পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই পেনড্রাইভে রয়েছে বহু নিয়োগ প্রার্থীর তথ্য। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, অন্তত পক্ষে ৩ হাজার চাকরি প্রার্থী থেকে টাকা নিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। এই প্রার্থীদের থেকে ৬ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা নিয়েছিলেন তিনি। বিধায়ক একাই ৩০০ কোটি টাকার ওপরের দুর্নীতি করে থাকতে পারেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। 

এদিকে জীবনকৃষ্ণের ওপর কোনও ‘মাথা’ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে তাঁকে আরও জেরা করা হবে। জীবনকৃষ্ণ পুকুরে নিজের ফোন ছুঁড়ে ফেলায় সেই ধারণা আরও বদ্ধমূল হয়েছে তদন্তকারীদের। তাঁরা মনে করছেন, ফোনের রেকর্ডে থাকা কোনও রাঘব বোয়ালকে বাঁচাতেই ফোন পুকুরে ফেলে থাকতে পারেন জীবনকৃষ্ণ। এই আবহে জীবনকৃষ্ণের আত্মীয়র বাড়িতেও সিবিআই তল্লাশি চালায়। আর আজ অবশেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে গ্রেফতার করা হল তাঁকে। উল্লেখ্য, এই নিয়ে শাসকদলের তৃতীয় বিধায়ক হাজতে গেলেন নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে। এর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এবার তাঁদের সঙ্গে নাম জুড়ল জীবনকৃষ্ণর।