East-West Metro underwater tunnel: সত্যিই গঙ্গার তলা দিয়ে ছুটছে মেট্রো? ঘোরের মধ্যে ট্রায়াল রান, সাক্ষী HT বাংলা

‘গেট বন্ধ হবে মেট্রোর’ – ঠিক বেলা ১২ টা ৭ মিনিটে হাওড়া ময়দান স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা মেট্রোর অডিয়ো সিস্টেমে সেই ঘোষণার পর উন্মদনা, উত্তেজনাটা যেন আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেল। তারপর পাক্কা তিন মিনিট পরে সেই বহু প্রতীক্ষিত মুহূর্ত এল – হর্ন বাজিয়ে হাওড়া ময়দান স্টেশন থেকে গুটিগুটি পায়ে মেট্রো রওনা দিল। সত্যিই গুটিগুটি পায়ে, কারণ ‘টেস্ট রান’-এ গতিবেগ আপাতত ২০ কিলোমিটারের বেশি তোলা হচ্ছে না।

গতিবেগ কম হলেও অবশ্য উন্মাদনার এতটুকুও অভাব হল না। বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে হাওড়া ময়দান থেকে ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ধীরে-ধীরে বঙ্কিম সেতু, হাওড়া স্টেশন, পূর্ব রেলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের (ডিআরএম) কার্যালয় পেরিয়ে থমকে গেল মেট্রো। তারপর এল সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত। অডিয়ো সিস্টেমে একটা বার্তা ভেসে উঠল – ‘এবার আমরা হুগলি নদীর মধ্যে ঢুকব।’ তাতেই শরীরে অ্যাড্রিনালিন যেন আলোর গতিতে ছুটতে শুরু করল।

ঘড়ির কাঁটা যখন ঠিক বেলা ১২ টা ১৭ মিনিট ছুুঁয়েছে তখন ফের চলতে শুরু করল মেট্রো – মাথার উপর গঙ্গাকে রেখে। নদীস্তরের ১০০ ফুট নীচ দিয়ে যখন ঢিমেগতিতে মেট্রো এগিয়ে যাচ্ছিল, তখন নিজেকে চিমটি কেটে জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছা করছিল – সত্যিই এটা হচ্ছে? গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রো ছুটে যাচ্ছে? সেই ঘোরটা কাটে আশপাশের কয়েকজনের হাসিতে। একজন মশকরা করে ওঠেন, ‘গঙ্গাজল নেওয়া যাচ্ছে তো? বোতলটা বের কর তো।’ বাকিরা হো-হো করে হেসে ওঠেন।

এবার নদীর তলা দিয়ে ছুটবে মেট্রো, টানেলের দৃশ্য মোবাইলে বন্দী করে রাখার প্রস্তুতি।

নিখুঁত কমিক টাইমিংয়ের জন্য মনে-মনে ওই ব্যক্তির তারিফ করার মধ্যেই যেন সেই মশকরার রেশ গঙ্গার টানেলে মিশে গেল। বেলা ১২ টা ২০ মিনিট নাগাদ নদীর তলার টানেল থেকে বেরিয়ে গেল ‘রথ’। গঙ্গার তলায় ৫২০ মিটারের পথ অতিক্রম করতে মিনিট তিনেক মতো লাগল। মেট্রোর আধিকারিকরা জানিয়ে দিলেন, যত ‘টেস্ট রান’ এগিয়ে যাবে, ততই ওই সময় কমতে শুরু করবে। একবার যাত্রী পরিষেবা শুরু হলে গঙ্গার তলায় ৫২০ মিটার অতিক্রম করতে মেরেকেটে ৪৫ সেকেন্ড লাগবে।

সেই আশ্বাসবাণীর মধ্যেই ডানদিকে মহাকরণ স্টেশন চলে এল। পুরো স্টেশন প্রায় অন্ধকার হয়ে আছে। কিছু অংশে কয়েকজন কাজ করছেন। তাঁদের পেরিয়ে ফের সুড়ঙ্গে ঢুকে গেল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ‘এমআর ৬১২’ রেক। শেষপর্যন্ত বেলা ১২ টা ৩৬ মিনিটে এসপ্ল্যানেড পৌঁছে গেল। সেখানে ১৬ মিনিট মতো দাঁড়িয়ে ওই টানেল দিয়েই ফের পিছন দিকে চলতে শুরু করল মেট্রো।

আরও পড়ুন: East-Metro Metro Full service start date: বউবাজারে কাজ শেষ ডিসেম্বরে, কবে হাওড়া ময়দান থেকে সল্টলেক পর্যন্ত মেট্রো চলবে?

যে টানেল দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল, দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে সেই টানেলেই রেকটি পৌঁছে যায়। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘এমআর ৬১২’ রেকটি দিয়ে ‘টেস্ট রান’ চলছে। অপর যে রেকটি সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের ডিপো থেকে আনা হয়েছে, সেটিকে হাওড়া ময়দান স্টেশনের অপর দ্বিতীয় প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। যে রেকেরও শীঘ্রই ‘টেস্ট রান’ শুরু হবে বলে মেট্রো সূত্রের খবর।

সেই দুই রেককে প্ল্যাটফর্মে রেখে হাওড়া ময়দান স্টেশনের বাইরে বেরিয়ে আসার সময় আচমকা একটা কথা মনে পড়ে গেল। ফিরতি পথে যখন নদীর টানেলে ঢুকছিল মেট্রো, তখনও বেশ কয়েক মিনিট দাঁড়িয়েছিল। সাংবাদিকরা ছবি তুলতে থাকেন। তারইমধ্যে একটা জানালার কাছে কয়েক ফোঁটা জল পড়তে থাকে। তা দেখে মনে হচ্ছিল, সত্যিই যেন গঙ্গাজল পড়ছে।

(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)