Bidyut Chakraborty: বিশ্বভারতীতে প্রথমবার ইদের প্রার্থনা, ঘটনা নিয়ে কেমন প্রতিক্রিয়া উপাচার্যের?‌

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন উৎসবে সম্প্রীতির বাতাবরণ তৈরি করতে বলে থাকেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। এবার এমনই সম্প্রীতির ছবি ফুটে উঠল কবিগুরুর বিশ্বভারতীতে। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রথমবার পালিত হল ইদ। শতাব্দী প্রাচীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হল সম্প্রীতির আবহ। এমনকী ইদের দিনে অনুষ্ঠিত হল বিশেষ প্রার্থনাও। তবে এই বিশেষ অনুষ্ঠানেও উপাসনা মন্দিরে বসে ‘কুকথা’ বলার অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্য়ুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। যা নিয়ে আজ, রবিবারও চলছে চর্চা।

ঠিক কী বলেছেন উপাচার্য?‌ এই ইদের বিশেষ প্রার্থনা ঠিক মতো তিনি মেনে নিতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এদিন উপাসনা গৃহে বসেই উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, ‘‌বিশ্বভারতীতে যা কিছু সমস্যা হচ্ছে সবকিছুতেই সম্প্রীতির অভাব রয়েছে। আমি বললেই ভুল। আর বিখ্যাত পরিবারের কোনও সদস্য যদি ভুল বলেন বা ভুল করেন তাহলে সেটিকে সবাই ঠিক বলে। বিশ্বভারতীর ইতিহাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে। এখানে খ্রিস্ট ধর্মের উৎসবে বিশেষ মন্দির হতো। এবার থেকে ইদেও হবে।’‌ তবে তিনি এমন মন্তব্য কাকে উদ্দেশ্য করে করলেন সেটা অবশ্য তিনি খোলসা করেননি।

আর কী জানা যাচ্ছে?‌ শনিবার ইদের সন্ধ্যায় শান্তিনিকেতনে পালিত হয় বিশেষ ‘মন্দির’। সেখানেই উপাসনার পর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন,‘‌বিশ্বভারতীতে খ্রিস্ট উৎসবে মন্দির হয়। ইদ নিয়ে কোনওদিনই বিশ্বভারতীতে মন্দির হতো না। গতবছর আমরা আলোকসজ্জা করেছিলাম। আর এই বছর বিশেষ প্রার্থনা করলাম। বিশ্বভারতী ইতিহাসে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটছে। এই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ইদ পালন করা হচ্ছে বিশ্বভারতীতে। বিশ্বভারতীতে যা কিছু সমস্যা হচ্ছে সবকিছুতেই সম্প্রীতির অভাব রয়েছে। আমি বললেই ভুল আর বিখ্যাত পরিবারের কোনও সদস্য যদি ভুল বলেন বা ভুল করেন সেটিকে সবাই ঠিক বলে। যে সম্প্রীতির কথা বলেছেন গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই সম্প্রীতি আজ কোথায়? আগামী প্রজন্মকে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভাবতে হবে। কোনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।’‌

কেন এমন মন্তব্য করলেন উপাচার্য?‌ সম্প্রতি জমি নিয়ে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের জমি নিয়ে তীব্র বিবাদ চলছে। তা নিয়ে চিঠি দিয়ে হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে অমর্ত্য সেনকে। এই উপাসনা মন্দিরে প্রত্যেক বুধবার বিশেষ প্রার্থনা করার ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে বসে উপাসনা ছাড়াও আশ্রমিক এবং প্রাক্তনীদের সঙ্গে উপাচার্যে মত বিনিময় হয়। কিন্তু ইদানিং সেখানে বসে রাজনৈতিক কথা বলেছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। আর তা নিয়ে জোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি উপাচার্যের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পিএমও রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল। এবার অমর্ত্য সেনকে বার্তা দিতেই এমন মন্তব্য করলেন তিনি।