Justice Ganguly: ‘চোর’ কুন্তলের অভিযোগ, অভিষেকের সওয়াল- কোন পথে বিচারপতি গাঙ্গুলিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে সরানো হল? – Kuntal Ghosh to Abhishek Banerjee

কুন্তল ঘোষের চিঠি, কলকাতা হাইকোর্টের পরামর্শ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সওয়াল – সেই পথে এগিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সরানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে নির্দেশে অবশ্য বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। তবে কোন পথে সেই নির্দেশ দেওয়া হল, তা দেখে নিন –

ং১) নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআইও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করেছে, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল দাবি করেছিলেন যে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে ১৯.৪ কোটি টাকা তুলেছিলেন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা।

২) তাপস আবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বরখাস্ত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ বিএড কলেজ সংগঠনের সভাপতি ছিলেন (মানিকও এখন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি আছেন)। গত বছরের ১১ অক্টোবর তৃণমূল বিধায়ক মানিককে গ্রেফতার করেছে ইডি। তারপরই তাপসের নাম উঠে এসেছিল। যেখান থেকে তদন্তের জাল কুন্তলের কাছে পৌঁছে যায়।

৩) ১৪ মার্চ কুন্তলকে বহিষ্কার করে দেয় রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সেইসময় তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছিল, ‘তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির মতো নয়। যেখানে প্রয়োজন হয়, সেখানে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

৪) তারইমধ্যে ২৯ মার্চ শহিদ মিনারে যুব তৃণমূলের সভামঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা যুব তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, যে তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার করেছে সিবিআই এবং ইডি, তাঁদের উপর চাপ তৈরি করছে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা, যাতে তাঁরা অভিষেকের নাম করেন।

৫) অভিষেকের সেই মন্তব্যের পরই ৬ এপ্রিল হেস্টিংস থানায় অভিযোগ দায়ের করেন কুন্তল। সেইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টেও সেই অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি দাবি করেন, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেকের নাম করার জন্য তাঁকে চাপ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা।

৬) সেই সংক্রান্ত মামলার ১৩ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত ইডি এবং সিবিআইয়ের। সেইসঙ্গে বিচারপতি জানান যে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় পশ্চিমবঙ্গের কোনও থানায় ইডি এবং সিবিআই আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ বা এফআইআর দায়ের করা যাবে না।

৭) তারইমধ্যে সিবিআই এবং ইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের যে পরামর্শ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান অভিষেক। সেই মামলায় অভিষেকের আইনজীবীরা দাবি করেন, গত বছর সেপ্টেম্বর একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমে যে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, সেখানে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি তৃণমূল সাংসদকে অপছন্দ করেন।

৮) সেই মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেওয়ার পাশাপাশই বিচারপতির গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার নিয়ে হাইকোর্টের হলফনামা তলব করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপর আজ সেই মামলা থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।

(এই খবরটি আপনি পড়তে পারেন HT App থেকেও। এবার HT App বাংলায়। HT App ডাউনলোড করার লিঙ্ক https://htipad.onelink.me/277p/p7me4aup)